রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গ্রেপ্তারের সময় ছুরিকাঘাতের শিকার, তারপরও ‘চাঁদাবাজ’কে ছাড়লেন না পুলিশ কর্মকর্তা


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : চাঁদাবাজি চলছে—এমন খবরে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ছুটে যায় পুলিশের একটি দল। ওই দলে ছিলেন ভাটারা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএএসআই) মেসবাহ উদ্দিন। ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ‘চাঁদাবাজ’কে গ্রেপ্তার করতে গেলে ছুরিকাঘাতের শিকার হন তিনি। তবে রক্তাক্ত হওয়ার পরও হাল ছাড়েননি মেসবাহ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রেপ্তার করেন তাঁকে।
ভাটারা থানার জে-ব্লক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম মো. মোবারক হোসেন ওরফে নাফিজ। পুলিশের তালিকায় তিনি চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী হিসেবে চিহ্নিত। তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।
ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল সন্ধ্যায় ভাটারা থানা এলাকায় চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে বিশেষ অভিযান চলছিল। তখন থানার টহল দল জানতে পারে, মোবারক হোসেন তাঁর কয়েকজন সহযোগী নিয়ে চাঁদা আদায় করছেন। খবর পেয়ে এএসআই মেসবাহ উদ্দিনসহ টহল দল সেখানে যায়। পরে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের চেষ্টার সময় মোবারক হোসেন এএসআই মেসবাহকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে তাঁর বাঁ চোখে গুরুতর আঘাত লাগে। এর পরেও তিনি মোবারককে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় মোবারকের সহযোগীরা পালিয়ে যান।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আহত এএসআই মেসবাহ উদ্দিনকে প্রথমে বারিধারার স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মেসবাহর সাহসিকতার জন্য তাঁকে বিপিএম (সাহসিকতা) পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। আর ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী তাঁর প্রশংসা করে পুরস্কার হিসেবে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
পুলিশের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মোবারক হোসেন ভাটারা থানার একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। ভাটারা থানা সূত্রে জানা যায়, মোবারক ভাটারা এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী। গতকালের ঘটনার পর তাঁর ও তাঁর পলাতক সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন এএসআই মেসবাহ। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে এএসআই মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষায় সব সময় আমি আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। ভবিষ্যতেও যেকোনো পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনে তৎপর থাকব।’
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়