বাংলাদেশ ঢাকা সংবাদ

আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ ও পরবর্তী সময়ে সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এনসিটিবিকে কর্তৃত্ববাদের দোসরমুক্ত করতে হবে: টিআইবি

TIB 678a942d7dbae
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ ও পরবর্তী সময়ে সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে নিজেকে পতিত কর্তৃত্ববাদের দোসর ও পুনর্বাসনকেন্দ্র হিসাবে পরিচয় দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিসহ কর্তৃত্ববাদের দোসরমুক্ত করে ঢেলে সাজাতে হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে বাংলাদেশে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আদিবাসী হিসাবে আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতিসহ সমঅধিকারভিত্তিক মর্যাদার প্রশ্নে সরকারের অবস্থান সুস্পষ্ট করারও আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে থাকা আদিবাসীসহ সব বৈচিত্র্যের মানুষের সমঅধিকারের প্রতিফলনমূলক গ্রাফিতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরিয়ে দিয়েছে এনসিটিবি।

এনসিটিবির এ পদক্ষেপকে কর্তৃত্ববাদের এজেন্ডা বহাল রাখার ঘৃণ্য প্রয়াস উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এনসিটিবি প্রমাণ করতে চেয়েছে, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদের পতন হলেও এই সংস্থায় কর্তৃত্ববাদের চর্চার পরিবর্তন হয়নি। বরং যৌক্তিক প্রশ্ন উঠেছে এনসিটিবি কি বাস্তবে পতিত কর্তৃত্ববাদের এজেন্ডা বহাল রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে?

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সরকারের অজানা থাকার কথা নয়, বাংলাদেশে ‘আদিবাসী’ পরিচয় ব্যবহার করা যাবে না এমন উদ্ভট তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিল কর্তৃত্ববাদী সরকার। আর তার পেছনে ইন্ধন ছিল এমন স্বার্থান্বেষী মহলের যারা আদিবাসী অধিকার হরণের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীকে বলতে চেয়েছিল ‘বাংলাদেশে আদিবাসী নেই।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অবস্থান স্পষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে যে বাংলাদেশে সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই। যারা ঐক্য, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার বিনষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এ বার্তাকে সময়োপযোগী হিসাবে স্বাগত জানাই।

তবে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে এতে দৃশ্যত সচেতনভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পরিচয় হিসাবে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি, যা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধান উপদেষ্টার ২৫ আগস্টের ভাষণে আদিবাসী পরিচয় বিষয়ক শব্দচয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

যদি এটি সচেতনভাবেই ঘটে থাকে, তাহলে কি এর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী এজেন্ডা ও বয়ানের প্রতিফলন ঘটেছে বলে ধরে নিতে হবে না? ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের বস্তুনিষ্ঠ ব্যাখ্যা ও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চর্চার অনুসরণে অবস্থান নির্ধারণের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আদিবাসী পরিচয় ব্যবহারের বিরোধী অন্য সব অংশীজনের প্রতিও আমাদের একই আহ্বান।

* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
Emon Khan

Emon Khan

About Author