সেনা সদস্য অপহরণ: বরিশালে বিএনপির ১১ নেতার সদস্যপদ স্থগিত


বরিশাল অফিস : বরিশালে সেনা সদস্যকে অপহরণ, মারধর ও মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১১ নেতার প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যাদের পদ স্থগিত করা হয়েছে, তারা হলেন- হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেন, বরিশাল মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রাঢ়ী, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব কামরুল আহসান, বরিশাল মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদা বেগম, যুবদল নেতা নুর হোসেন সুজন, ইমরান খন্দকার, জাহিদ, বেলায়েত ও রুবেল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বালুমহালের দরপত্র নিয়ে এক সেনা সদস্যকে অপহরণ করে মারধর ও মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হল।
অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘটনাটি তদন্তে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহসম্পাদক গোলাম মুহাম্মদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ছুটিতে বাড়িতে এসে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এক সেনা সদস্য তার চাচার সঙ্গে বরিশাল সদরে বালু মহালর দরপত্র জমা দিতে গিয়ে অপহরণ ও মারধরের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় বিএনপির তিন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার ওই সেনা সদস্যের চাচা মামলা করেছেন বলে জানান বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় ওসি মো. মিজানুর রহমান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- বরিশালের হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেন (৪২), বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও যুবদল কর্মী নুর হোসেন সুজন (৩৫) এবং হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. ইমরান খন্দকার (৩৫)।
সেনা সদস্য মো. জাফর মতলব উত্তর উপজেলার মহনপুর গ্রামের মো. শওকতের ছেলে। তিনি রাজশাহী সেনানিবাসে ল্যান্স করপোরাল পদে কর্মরত।
বাদী আব্দুল মতিন কাজী একই গ্রামের কাজী আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি জাফরের চাচা।মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু (৩৬), বরিশাল মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রাঢ়ী (৫২), রুবেল (৫১), বেলায়েত (৩২), মো. জাহিদ (৪৫), মহানগর মহিলা দলের নেত্রী ফরিদা বেগম (৪৫), জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব কামরুল ইসলাম (৫০), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু (৪৮) এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. নিজাম।
মামলার বরাতে ওসি মিজানুর বলেন, সোমবার দুপুর ১টার দিকে মতিন কাজী ও জাফরসহ তিনজন বালু মহালের ইজারা নেওয়ার জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান। তারা দরপত্র জমা দিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গেলে কয়েকজন তাদের ঘিরে ধরেন।
“এ সময় তাদের কাছে টেন্ডার জমা দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের মারধর করা হয়। দুইজন পালিয়ে গেলেও সেনা সদস্য জাফরকে তুলে নিয়ে যান আসামিরা। তাৎক্ষণিক বিষয়টি বরিশাল সেনা ক্যাম্পে জানানো হয়।
“জাফর নিজেকে ল্যান্স করপোরাল পরিচয় দিলেও আসামিরাও নিজেদেরকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তাকে মারধর করেন। এ ছাড়া তার সঙ্গে থাকা সেনা পরিচয়পত্র ভেঙে ফেলা হয়। পরে তার কাছ থেকে এক ভরি ওজনের সোনার চেইন, একটি আইফোন, ১৫ হাজার টাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইন্সেস ছিনিয়ে নেয়।
পরে রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নগরের লঞ্চঘাট এলাকার আবাসিক হোটেল রিচমার্টের ৩১০ নম্বর কক্ষ থেকে জাফরকে উদ্ধার ও তিনজনকে আটক করা হয় বলে জানান ওসি মিজানুর।
বিকালে ওই তিনজনকে বরিশাল জ্যেষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক নুরুল আমিন তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান আদালতের জিআরও এনামুল হক।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।