চার হাজার কোটি টাকা অপচয়ে ‘মুজিববর্ষ’:হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : ৪ হাজার কোটি টাকা অপচর করা হয় শুধু ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণে। সারাদেশে ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল এবং মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে। এ তথ্য জানানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে।
দুদক সূত্র জানায়, প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয় মুজিব জন্মশত বার্ষিকীতে ম্যুরাল ও মূর্তি নির্মাণে। রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এতে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ অন্যান্যরা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। অভিযোগ অনুসন্ধানে সাত সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন উপ-পরিচালক মো: মনিরুল ইসলাম। অন্য সদস্যরা হলেন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস. এম. রাশেদুল হাসান, এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও উপ-সহকারী পরিচালক মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন। সূত্র জানায়, মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে সারা দেশে ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও মূর্তি নির্মাণ করেছিল ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা। এতে খরচ হয় অন্তত: ৪ হাজার কোটি টাকা। বিপুল এই ব্যয় এখন অপ্রয়োজনীয় ও অপচয় হিসেবেই মূল্যায়িত হচ্ছে। গণমানুষের কোনো কাজেই লাগছেনা। মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০-২০২১ সালকে (১৭ই মার্চ ২০২০ থেকে ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত) দুই বছর নানা কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে কর্মসূচিগুলো নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে করতে না পারায় কর্মসূচির মেয়াদ ৯ মাস বাড়িয়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে আগে থেকেই হাসিনা পরিবার সারা দেশে ম্যুরাল ও মুজিব মূর্তি নির্মাণ করে।
এর মধ্যে শুধু ম্যুরাল নির্মাণ করা হয় ১ হাজার ২২০টি। তবে সরকারি সাতশ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ মিলিয়ে ম্যুরাল ও মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে ১০ হাজার। সব জেলা পরিষদে ম্যুরাল নির্মাণে খরচ হয় ৮ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত। সড়কের শুরুতে, শেষে, চৌরাস্তায়, নদীর তীরে, পুকুরপাড়ে, প্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় এমন কোনো স্থান নেই যেখানে মুর্যাল কিংবা মুজিব-মূর্তি স্থাপন করা হয় নি।
জানাগেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যুরালের নকশা ও ডিজাইন তৈরিতেই খরচ হয় ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া স্থাপনা এবং অন্যান্য বিষয় মিলিয়ে এর ব্যয় হয় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা। রাজধানীতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) অর্থায়নে তৈরি করা ম্যুরালটির উচ্চতা ১০ ফুট। প্রস্থে ৮ ফুট। নির্মাণে সময় লাগে তিন মাস। ব্যয় হয় অন্তত: ২০ লাখ টাকা। এ ছাড়া, বাংলাদেশ বেতার পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকায় মুর্যাল নির্মাণ করে। এই মূর্তি ও ম্যুরাল বা প্রতিকৃতি নির্মাণে পৃথক কোনো প্রকল্প হাতে নেয়া হয়নি। সরকারি অর্থে স্থানীয় প্রশাসন হাসিনা পরিবারকে তুষ্ট করতে ‘মুজিব বন্দনা’য় এসব মূর্তি ও ম্যুরাল নির্মাণ করে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।