দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক গণপূর্তের প্রকৌশলী বাশার : সম্পদে ছাড়িয়ে গেছে মতিউরকেও


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল :
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মী শেখ হাসিনার বাসস্থান (সুধাসদন) ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল জাদুঘরের বৈদ্যুতিক দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকা উপার্জন করেছেন সেগুন বাগিচা গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবুল বাশার।
গত কয়েক বছর ধরে গণপূর্তে গড়ে ওঠা লুটপাট সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা উপসহকারী প্রকৌশলী মো: আবুল বাশার ঢাকার সেগুন বাগিচা গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থান (সুধাসদন) ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল জাদুঘরের ইলেকট্রিক্যাল দায়িত্বে ছিলেন।
যেখানে মধু আছে সেখানেই ছুটছেন এই প্রকৌশলী।গণপূর্তে হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ করেছেন উপসহকারী প্রকৌশলী মো: আবুল বাশার।তিনি ছিলেন জিকে শামিমের বিশ্বস্ত লোক ও সেই সিন্ডিকেডের একজন প্রভাবশালী সদস্য।
গণপুর্তে রয়েছে তার নিজস্ব বলয় । তিনি মুকুটবিহীন সম্রাট যা চাইতেন তাই তিনি করতেন এছাড়াও তিনি পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতেন। কিন্তু টাকা ছাড়া কোন কাগজে সই করতেন না এই উপসহকারী প্রকৌশলী । ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার কথা বলে অগ্রিম কমিশনের টাকা নিতেন তিনি। এমন কি কাজ না করেই ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।প্রকৌশলী মো. আবুল বাশার হলেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মো.আলী হোসেন হাওলাদারের ছেলে।
২০১৫ সাল থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির বৈদ্যুতিক দায়িত্বে ছিলে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবু বাশার। আ.লীগের ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে এই আবুল বাশার গ্রামের বাড়িতে অন্যের জমি দখলসহ অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ করেছেন। যে ঘটনায় কবাই ইউনিয়নের (কুদ্দুস মিয়া) বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ বরিশাল স্পেশাল জজ আদালতে আবুল বাশারসহ ৪ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়া আবুল বাশারের বিরুদ্ধে জি.আর ২৯৬/২৪ (বাকেরগঞ্জ), মামলার ৩ নম্বর আসামি ও জি.আর ২৬/২৩ (বাকেরগঞ্জ), মামলার ২ নম্বর আসামি। অবৈধভাবে আবুল বাশার তার বাবার নামে বাকেরগঞ্জের হালুয়া গ্রামে সূর্য ইটভাটা চালু করেন। যেটি বর্তমানে এ. এইচ ব্রিকস নামে পরিচিত। গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। ঢাকায় ৫ তলা ভবন, নামে বেনামে রয়েছে প্লট, নিউ মার্কেটে সোনার দোকান সহ নানা ব্যবসার সাথে জড়িত। আবুল বাশার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ শাসনামলে ৭নং কবাই ইউনিয়ন আ.লীগের রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিং এবং জনসভায় অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছিলেন। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এলাকায় এসে আ.লীগের সংসদ সদস্য নৌকা মার্কার প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক এর পক্ষে প্রভাব খাটিয়ে ভোট কারচুপিতে সহায়তা করেছিলেন। ৫ আগস্টের পর কিছুদিন আত্মগোপনে থেকে বর্তমানে বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে উপস্থিত হয়ে টাকার বিনিময়ে কিছু বিএনপি নেতাদের সাথে সেলফি তুলে নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে জাহির করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ষড়যন্ত্রমূলক এ সব চলছে। চাকুরি জীবনে যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন সেই সরকারের নির্দেশনা মেনে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।