মুজিববর্ষ: বিসিবির ১৯ কোটি টাকার অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) মুজিববর্ষে বিভিন্ন ক্রিকেট লীগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, টিকেট বিক্রয়, অবৈধ অর্থ অর্জনসহ প্রায় ১৯ কোটি টাকার অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুদক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে ৩টি অভিযোগের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানে টিম জানতে পারে সদ্যসমাপ্ত ১১তম বিপিএলে টিকেট বিক্রয়ের মাধ্যমে আয় ১৩ কোটি টাকা দেখানো হলেও ৩য় থেকে ১০ম বিপিএল, তথা ৮ বছরে বিসিবির আয় দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি টাকা, যা গত বিপিএলগুলোতে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের ইঙ্গিত বহন করে। ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব ১০০ বাস্তবায়নে ২৫ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে মাত্র ৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছিলো এমন তথ্য পায় দুদক টিম। অর্থাৎ এক্ষেত্রে প্রায় ১৯ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের তথ্য প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে।
এতে বলা হয়, ঢাকা তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগের বাছাই পর্বে গত বছরগুলোতে ৩/৪টি ক্লাব হতে নামসর্বস্ব আবেদন দেখিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম করা হয়েছে এরূপ প্রাথমিক প্রমাণ পায় দুদক টিম। অপরদিকে, বিপিএল এর টিকেট বিক্রি নিয়ে আর্থিক অনিয়মেরও প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়ভ।অভিযানকালে অভিযোগগুলোর প্রাথমিক সত্যতার প্রেক্ষিতে অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রেকর্ডপত্র যাচাই বাছাই করে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ হাজির হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি তদন্ত দল। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অবস্থিত বিসিবি কার্যালয়ে এই আকস্মিক আগমন বিস্মিত হন বোর্ড কর্মকর্তারা।
দুদক জানিয়েছে, তিনটি নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বিসিবির কাছে তথ্য জানতে গেছে। তদন্তের বিষয়গুলো হলো-মুজিব শতবর্ষ উদযাপনের ব্যয়ের হিসাব, বিপিএলের তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত টিকিট বিক্রির আয়, এবং তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটে এন্ট্রি ফির অনিয়ম।
দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বিসিবির আয়োজনে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানানো হলেও মাত্র ৭ কোটি টাকার ব্যয়ের সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া গেছে। বাকি ১৮ কোটির বেশি খরচের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত নথিপত্র ফাইন্যান্স বিভাগের কাছে চাওয়া হয়েছে। বিপিএল টিকিট বিক্রির আয়ে অনিয়মের অভিযোগও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
আল আমিন বলেন, বিপিএলের ১১তম আসরে টিকিট বিক্রি হয়েছে ১৩ কোটি টাকার, অথচ তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত পুরো আটটি মৌসুমে আয় দেখানো হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি টাকা। বিসিবি বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দিত এবং সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় হিসেবে নিত। তবে এই পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটে এন্ট্রি ফির বিষয়েও তদন্ত চলছে। দুদকের তথ্যমতে, বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসানের সময় ৫০ হাজার টাকা এন্ট্রি ফি একলাফে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়। এতে অধিকাংশ দলই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র ২-৩টি দল অংশ নেয়। চলতি বছর ফি কমিয়ে ১ লাখ টাকা করায় ৬০টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।
দুদকের মতে, আগে অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিযোগিতাকে সীমিত করা হয়েছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দুদক কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন তারা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে। ম্যানেজমেন্ট টিম হিসেবে আমরা পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি এবং সেই অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।