স্ত্রীকে সুপারভাইজার বানিয়ে শুমারির টাকা আত্মসাৎ করলেন কুমার দত্ত


অনলাইন ডেস্ক : অর্থনৈতিক শুমারির কাজে ‘সুপারভাইজার’- পদে নিজ স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত তার স্ত্রী বনি দত্তকে কাগজে-কলমে নিয়োগ দেখিয়ে ‘সুপারভাইজার’ পদের সকল সুবিধা ভোগ ও পারিশ্রমিক আত্মসাৎ করেছেন। স্ত্রী বনি দত্ত কালীগঞ্জ উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা না হলেও অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ এর মূল শুমারি কার্যক্রমে সরকারি শর্ত ভেঙে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ কমিটি ‘সুপারভাইজার’ পদে তাকে নিয়োগ দেন। তাকে উপজেলার ৭নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের একজন সুপারভাইজার হিসেবে দেখানো হয়।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, রায়গ্রাম ইউনিয়নে অর্থনৈতিক শুমারি কার্যক্রমে ১২ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ২ জন সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। স্বশরীরে মাঠ পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত ১৩ জন কাজ করলেও তারা কখনো বনি দত্তকে কাজ করতে দেখেননি। ইউনিয়নটিতে তথ্য সংগ্রহকারীরা এবং বাকি একজন সুপারভাইজার পরিসংখ্যান অফিসের সহায়তায় বানি দত্তের কাজ সম্পন্ন করে দিতেন। এমনকি কাজ শুরুর পূর্বের ট্রেনিং চলাকালীন সময়ও বনি দত্তকে দেখা যায়নি। অসৎ ও দুর্নীতিপরায়ণ স্বামী এবং অস্বচ্ছ নিয়োগ কমিটির কারণে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত অর্থনৈতিক মূল শুমারি কার্যক্রমে কাগুজে কলমে নিয়োগ পেয়ে সরকারি অর্থ লোপাট করেন বনি দত্ত। রায়গ্রাম ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহকারী মিতু দাস, আখি দাস ও জয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনি দত্ত নামে একজন সুপারভাইজার পদে নিয়োগ দেওয়া হলেও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে তাকে কখনো দেখিনি। তবে কাগজে তার গ্রাম উল্লেখ ছিল রায়গ্রাম। কিন্তু এ নামে রায়গ্রামে কেউ আছে কিনা আমার জানা নেই।
উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক শুমারিটি শুরু হয় ১০ ডিসেম্বর ২০২৪। যা চলে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত মোট ১৫ দিনব্যাপী। সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী এ শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করেন। দুর্নীতিবাজ স্বামীর সহায়তায় ভুল ঠিকানা উল্লেখ করে কাজ না করে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে নিয়োগ পেয়ে অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে কথা বলতে বনি দত্তের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বনি দত্তের স্বামী পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত অনৈতিক উপায়ে স্ত্রীর নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে বলেন, তার নাম ব্যবহার হলেও কাজগুলো তো আমি করে দিয়েছি। এখানে সমস্যা কোথায়? স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও অসত্য তথ্য দিয়ে বনি দত্ত কিভাবে নিয়োগ পেলেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
ঝিনাইদহ জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আলিম বলেন, ওই ইউনিয়নে একজন সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল যিনি কাজ করেননি। তার পরিবর্তে বনি দত্তকে দেয়া হয়। স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়া এবং কাজ না করে সরকারি অর্থ পাওয়ার ঘটনাটি অফিসিয়ালি অনিয়ম করা হয়েছে বলেও তিনি যোগ করেন।
অর্থনৈতিক শুমারির নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতির ব্যাপারটি আমার জানা ছিল না। আমি খতিয়ে দেখছি।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।