রাতের ভোটের সহযোগী নলছিটির ইউএনও নজরুল’র বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়


বরিশাল অফিস : ফ্যাসিস্ট পতিত আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বেশী সুবিধাভোগী,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনকারী, বহুল বিতর্কিত, প্রহসন ও কারচুপির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের ভোটের সহযোগী ও বিতর্কিত ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগ। অদৃশ্য ইশারায় এখনো বহাল তবিয়তে। তার অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে করেছিলেন ডিম খিচুড়ির আয়োজন। ইউএনও নজরুল ইসলামের বিতর্কিত কর্মকান্ডে নলছিটির সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অতিষ্ঠ।তবে এসব অভিযোগ অস্বিকার করেছেন ইউএনও নজরুল ইসলাম। নলছিটি উপজেলায় যোগ দেয়ার পর থেকেই একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন।
নলছিটিতে যোগদানের প্রথম দিকে চাহিদা সীমিত থাকলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই অবৈধ অর্থের লোভে দু’হাতে ঘুষ বানিজ্যে মেতে উঠেন।ইউএনও বিরুদ্ধে উন্নয়নকাজে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, বৈষম্য ও অর্থ আত্মসাৎ করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে,নলছিটি উপজেলার টিআর কাবিখার প্রকল্প যথা সময়ে ছাড় না করা।উপজেলা পরিষদের আয় ও ব্যয়ের হিসেবে যথাযথভাবে করেন না।
হয় না, মাসিক সভায় ইউএনও ইচ্ছে মতো রেজ্যুলেশন করেন।
এছাড়া ইউএনও নজরুল ইসলাম বিজয় দিবস,স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের চাঁদা আদায় করে আত্মসাৎ, টিআর কাবিখার নীতিমালা অনুসরণ না করা,সাধারন মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, সরকারি ঘর বরাদ্দের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, উপজেলা পরিষদের নারিকেল ও মাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ এবং শুকনা খাবার ও কম্বল বিতরণেরও অনিয়ম করেছেন ইউএনও নজরুল ইসলাম।এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে এক সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পের কাজ অন্য সরকারি দপ্তরের কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী বিতর্কিত ও প্রহসনের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির সহযোগী এই ইওএনও এখনও বহাল তবিয়তে থাকায় সকল মহলে প্রশ্ন উঠেছে।২৪ সালের ৫ আগষ্টের পরে বরিশাল বিভাগে ইওএনওদের বদলী করা হলেও নলছিটির ইওএনও নজরুল ইসলামের বদলী না হওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে নলছিটিতে।
তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা কামিয়ে নিয়েছেন। অনুসন্ধানে ইউএনওর ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন সরকারি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তারা মেতে উঠেছিলেন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে। গড়ে তুলেছিলেন একচ্ছত্র আধিপত্য ও স্বেচ্ছাচারিতা।তাদের মতোই ক্ষমতার অপব্যবহার করে গেল দুই বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন উপজেলা প্রশাসনের এই গুণধর শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা হওয়ায় অনেকে ভয়ে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও দুর্নীতিতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার কারণে।
৩৫ তম বিসিএসে উর্ত্তীণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরিতে যোগদান করেন নজরুল ইসলাম।২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামীলীগ নেতা ও ঝালকাঠি ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর বিশেষ সুপারিশে ইউএনও হিসেবে নজরুল ইসলাম নলছিটি উপজেলায় যোগদান করেন। আর সে সময় আমির হোসেন আমুর আস্থাভাজন হওয়ায় হয়ে ওঠেন বেপরোয়া।এছাড়া তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় সত অনিয়ম ও দুর্নীতি করেও পার পেয়ে গেছেন।
সম্প্রতি নলছিটি উপজেলা পরিষদের পুরাতন অডিটরিয়াম টি কোন টেন্ডার ছাড়াই তার স্ত্রীর ইচ্ছায় মালামাল বিক্রি করে দিয়েছেন।উপজেলার প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দের বিপরীতে কমিশন বা ঘুষ না দেয়া হলে তিনি কোনো ফাইলই স্বাক্ষর করেন না। আগে কমিশনের টাকা বুঝে নিয়ে তারপরে ফাইলে স্বাক্ষর করেন তিনি।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
উল্লেখ্য,সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের সাথেও রয়েছে ইউএনওর আর্থিক লেনদেন। বালু তোলার কারণে নদী রক্ষা বাঁধ ও নদী তীরবর্তী এলাকা হুমকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি ইউএনও কে জানানো হলে তিনি অভিযান চালাতে অনীহা প্রকাশ করেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।