বরিশাল অফিস : ফ্যাসিস্ট পতিত আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বেশী সুবিধাভোগী,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনকারী, বহুল বিতর্কিত, প্রহসন ও কারচুপির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের ভোটের সহযোগী ও বিতর্কিত নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি,ঘুষ বানিজ্য,অর্থ আত্মসাৎ,বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করে সরকারি টাকা উত্তোলন করে ভাগাভাগি,বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকা বিতরন না করে আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
২৪ এপ্রিল'২৫ তারিখ অভিযোগকারী ১ম পক্ষের ৭ জনের মধ্যে মনির ও দ্বিতীয় পক্ষে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। ১ম পক্ষের মনির ছাড়াও আরো ৪জনকে নোটিশ দেয়া হলেও নিরাপত্তাজনিত কারনে তারা উপস্থিত ও যথা সময়ে নোটিশ না পাওয়ার কারনে তদন্তের শুনানীতে অংশ গ্রহন করতে পারেন নি বলে জানা গেছে।
২০২৪ সালের ২৮ আগষ্ট নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিজন কৃষ্ণ খরাতীরবিরুদ্ধে দুর্নীতি,ঘুষ বানিজ্য,অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে লিখিত আবেদন করেন ভুক্তভুগী সাতজন।আবেদনটি জেলা প্রশাসক আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামকে।তিনি ১৪ এপ্রিল '২৫ তারিখ ৩৩৭ নং স্মারকে ১ম পক্ষের ৫ জনকে ও দ্বিতীয় পক্ষকে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য ২৪ এপ্রিল'২৫ তারিখ তদন্তকারীর অফিস কক্ষে হাজির হওয়ার অনুরোধ করেন।
১ম পক্ষ থেকে টিআরএর চাল ক্রেতা -বিক্রেতা মোঃ মনির উপস্থিত হন।সুত্র জানায়,অন্যান্য অভিযোগকারীদেরকে ইউএনও কর্তৃক হুমকির কারনে নিরাপত্তা জনিত কারন ও যথা সময়ে নোটিশ না পাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে হাজির হতে পারেন নি বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)বিজন কৃষ্ণ খরাতী যোগসাজসে কিছু অসাধু ব্যক্তিদের নিয়ে দুর্নীতি,ঘুষ বানিজ্য,সরকারি অর্থ আত্মসাৎ,উপজেলা উন্নয়ন সহায়তা বরাদ্দ,এডিপি,রাজস্ব,টিআর,কাবিটা,কাবিখা,৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসুচী,ত্রানের ব্রীজ,এইচবিবি, আবাসনের ঘর, বীরনিবাস,বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ,শীতবস্ত্র ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাৎ,সরকারি টিন বিতরনের সাথে নগদ অর্থ বরাদ্দ তিন হাজার টাকা দেয়ার নামে আত্মসাৎ,পিআইওর আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করে সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎসহ অসংখ্য অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে ইওএনও, পিআইও ও অফিস সহকারি মশিউর এই জন মিলে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের ২য়,৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ের বিভিন্ন বরাদ্দের কাবিখা, টিআর, কাবিটা প্রকল্পের সিপিসিদের ভয় ভীতি দেখিয়ে এবং বরাদ্দ ফেরৎ গেছে বলে এসব প্রকল্প থেকে ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন এ তিনজন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে ইওএনও ক্ষমতার দাপট দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,ইওএনও নজরুল ইসলামের পিতা একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার পিতা সোহরাফ এর বয়স ছিল মাত্র নয় বছর।এছাড়া নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কথিত আবেদ আলী বিসিএস ক্যাডার এবং তার চাকুরী মুক্তিযোদ্ধা কোটায়।যা তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম পিআইও অফিসের অফিস সহকারি মশিউরের মাধ্যমে বরিশালে পিআইও বিজনের বাস ভবনে ব্লাঙ্ক সরকারি চেক পাঠিয়ে পিছনের তারিখে স্বাক্ষর নিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের কথা উল্লেখ করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পরই নিজের আখের গোছাতে ও পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আওয়ামীলীগের পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের কাজ ছাত্রদলের এক নেতার মাধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে দেন।
ইওএনও নজরুল ইসলাম একই সাথে তিনটি গুরুত্বপুর্ন দায়িত্ব থাকায় তিনি হয়ে যান বেপরোয়া।ইওএনও,উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার প্রশাসক পদ পেয়ে দু হাতে কামাই করেন। আওয়ামীলীগের পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের কাজ পুনঃরায় টেন্ডার না করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য সাবেক মেয়র ওয়াহেদ কবির খানের বাড়ির সামনে কোভিড-১৯ প্রকল্পের ঠিকাদার শাওনের নলছিটি পৌরসভার ১৪ লাখ টাকার কাজ, কোভিড-১৯ প্রকল্পের মালিপুর আরসিসি সড়কের ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার কাজ একজন ছাত্রদল নেতাকে সমাপ্ত করার আদেশ প্রদান করেন। এছাড়া একই ব্যক্তিকে কুলকাঠিতে গার্ডার ব্রীজ ও মোল্লারহাট ইউনিয়নে পিচঢালাই রাস্তা ও ৫টি কালভার্টের ১৩ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করার আদেশ প্রদান করেন। ইওএনও নজরুল ইসলাম সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর কম্পিউটার অপারেটর শাওনের অসমাপ্ত কাজ করিয়ে নিচ্ছেন এক ছাত্রদল নেতার মাধ্যমে।এভাবেই আওয়ামীলীগকে তিনি পুনর্বাসন করছেন নলছিটিতে। ইওএনও নজরুল ইসলামের পিতা সোহরাফ পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি।নজরুল ইসলামও ছিলেন ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি দম্ভোক্তি করে বলেন,আমি সব ম্যানেজ করেছি। আমি জানি কিভাবে কাকে কি দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়।তিনি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব দম্ভোক্তি করেনও বলে জানা গেছে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত