গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ময়নুল হকের কমিশন বাণিজ্য


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গণপূর্ত অধিদপ্তরে দুর্নীতি, টেন্ডার বাণিজ্য কমানোর জন্য ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। এই রদবদলের জোয়ারেই প্রকৌশলী এস. এম ময়নুল হককে চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-১ থেকে ঢাকা গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-৩ এ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়। গত বছরের অক্টোবর মাসের ০২ তারিখে তাকে ঢাকায় বদলি করার আদেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, ময়নুল ঢাকায় বদলি হয়ে এসেই টেন্ডার বাণিজ্যে জড়িয়ে পরেছেন। তিনি প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের নির্দেশনা অমান্য করে নিজের মতো করে টেন্ডার আহবান করে পছন্দের ঠিকাদারকে কমিশনের বিনিময়ে কাজ দিচ্ছেন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের এনুয়্যাল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান বা এপিপি-এর বরাদ্দের কাজ লিমিটেড টেন্ডার মেথড বা এলটিএম পদ্ধতিতে আহবান করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনা গণপূর্ত অধিদপ্তরের সকল বিভাগের জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু এই নির্দেশনা অমান্য করে ময়নুল হক এলটিএম পদ্ধতির বদলে শতভাগ ওটিএম পদ্ধতি দরপত্র আহবান করেছেন। সূত্র জানায়, এলটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করলে সেই কাজ লটারির মাধ্যমে পেতে হয়। কিন্তু ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করলে সেই কাজ ময়নুল তার পছন্দমতো ঠিকাদারকে কমিশনের বিনিময়ে দিতে পারেন। কমিশন ঠিক হলে ওটিএম পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতা করার জন্য রেট-কোটেশনও ঠিকাদারকে দিয়ে দেন। এতে ১০ শতাংশ কম দরে ঠিকাদার কাজটি পেয়ে যান।
ময়নুল কমিশন বাণিজ্য করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার জন্য ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করেছেন এরকম ৩০ (ত্রিশটি) দরপত্রের আইডি নম্বর দৈনিক আজকের সংবাদের হাতে এসেছে। এইসকল দরপত্রে বঞ্চিত একাধিক ঠিকাদার দৈনিক আজকের সংবাদকে জানায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গণপূর্ত অধিদপ্তরে রদবদলে আমরা বঞ্চিত ঠিকাদারেরা কিছু কাজ পাওয়ার আশা করেছিলাম। কিন্তু ময়নুল ই/এম বিভাগ-৩ এ এসেই যেভাবে কমিশনের বিনিময়ে কাজ দেওয়া শুরু করেছে এতে আমরা বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছি। আমাদের এতো কমিশন দিয়ে কাজ নেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাই কাজও পাচ্ছি না।
এপিপি বরাদ্দের কাজ এলটিএম পদ্ধতির বদলে ওটিএম পদ্ধতিতে আহবান করা ৩০টি দরপত্রের আইডি নম্বরগুলো হলো ১১১৫৩৪৮, ১১১৩৬২৭, ১১১৩৬৮১, ১১১৩৬৮৪, ১১১৩৬৮৩, ১১১৩২১৬, ১১১৩২২৬, ১১১৩২৫৩, ১১১৩২৮১, ১১১৩৪৭৮, ১১১৩২৮১, ১১১৩৮৩৭, ১১১২১৫১, ১১০৫৭৪০, ১১০২৩৯৩, ১১০২৪৩৯, ১১০৩৩৪৯, ১১০২৩৫৮, ১১০২৩৫১, ১০৯৭৩৮৭, ১০৯৫২০১, ১০৯৪৭৫৭, ১০৯৪৭২৪, ১০৯৩৯৬৩, ১০৮২২৮৩, ১০৮৬৭৯৫, ১০৮৬৯২৯, ১০৮১০৪৭, ১০৮০৬৬৩, ১০৭৫৭৯০।
ঢাকা ই/এম বিভাগ-৩ সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, এই ত্রিশটি টেন্ডার থেকে ময়নুল হক কোটি টাকার উপরে কমিশন বাণিজ্য করেছেন। যে হারে তিনি কমিশন বাণিজ্য করছেন তাতে আগামী বাজেটে এপিপি-এর আরো বরাদ্দ যখন আসবে তখন ময়নুলের কমিশন বাণিজ্য আরো বেশি হবে।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য এস. এম ময়নুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার সাথে দেখা করে কথা বলার জন্য তার দপ্তরে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।