মোহাম্মদ আলী নামে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট প্রদান করা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রতকে


অনলাইন ডেস্ক : শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের অপরাধ ও ভারতের চক্রান্ত নিয়ে সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের শুক্রবার রাতে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। তাতে তিনি লিখেছেন- সংযুক্ত ছবিগুলো শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের বিশেষ পাসপোর্টের যা কেবল বাংলাদেশ ও ভারতে যাতায়াতের জন্যে ইস্যু করা হয় ২০০১ সালের ০২ আগষ্ট, যখন দেশে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করছিলো তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া এই সম্পূর্ণ পাসপোর্টটি যাচাই করে দেখা যায়, মোহাম্মদ আলী, ছদ্ম নামে নেয়া এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে সুব্রত বাইন ওরফে মোহাম্মদ আলী ২০০১ সালের ৮ অক্টোবর সর্বপ্রথম বাংলা বান্ধা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে (ভিসা প্রদান করা হয় ৭ অক্টোবর ২০০১)। এর প্রায় তিন মাস পর (ভারতে অবস্থানের সময় বৃদ্ধি করে) ৭ জানুয়ারি ২০০২ আবার বাংলাদেশে ফেরত আসে।
এভাবে তার ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত চলতেই থাকে, পাসপোর্টের সকল ইমিগ্রেশন সীল ও ভিসা যাচাই করে পাওয়া গেছে ১৩ জুন ২০০৪ পর্যন্ত সর্বমোট ৯ বার মোহাম্মদ আলী নামের বিশেষ পাসর্পোটটি ব্যবহার করে ভারতীয় ভিসা গ্রহণ করে সুব্রত বাইন, এক্সিট-এন্ট্রি করেন ৩২ বার।
সূত্রটি জানিয়েছে এ সময়ের ভেতর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি টার্গেটেড কিলিং সংঘটিত করে সুব্রত। প্রতিবার একেকটি হত্যা করেই ভারতে পাড়ি জমাতো এই খুনি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র এবং দেশটির সেনা গোয়েন্দা এম আই (Military Intelligence) এর সাথে সম্পর্কিত সুব্রত বাইনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থান করা ভারতের প্রতি হুমকি এমন সব ব্যক্তিদের হত্যার মিশন দেয়া হয়েছিলো। উলফা, ইউনাইটেড লিবারেশন অফ নাগাল্যান্ড, পাকিস্তান ভিত্তিক মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) এর বাংলাদেশ শাখা সহ সহ আরো কয়েকটি সংগঠনের (যা ভারতে নিষিদ্ধ) নেতাদের ছবি ও ঠিকানা দিয়ে; অস্ত্র-অর্থ সহ মিশন কার্যকরী করতে যা যা প্রয়োজন সেসবের ব্যবস্থা করে বারবারই বাংলাদেশে প্রবেশ করতো সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদ।
২০০৩ সালে এভাবেই একবার প্রস্তুতি নিয়ে সুব্রত ঢাকায় আসে এবং মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাড়ীতে হামলা করে নাগাল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব দাবী করা বম সম্প্রদায়ের এক নেতার স্ত্রী ও তার ৭ বছরের সন্তানকে হত্যা করে। এই ঘটনার কিছুদিন পর, পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্পের মোস্তাকিম কাবাবের মালিক মোস্তাকিমকে গুলি করে হত্যা করে। মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) নামের পাকিস্তান ভিত্তিক একটি সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মোস্তাকিম। এছাড়াও বহুবার উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়াকে হত্যার চেষ্টা করে সুব্রত বাইন, কিন্তু ব্যর্থ হয় প্রতিবার।
এই পাসপোর্টে সর্বশেষ ১৩ই জুন ২০০৪ একটি সিংগেল এন্ট্রি ভারতীয় ভিসা ইস্যু করা হয়, যার মেয়াদ ১২ জুলাই ২০০৪ পর্যন্ত। কিন্তু ভিসার মেয়ার পার হয়ে গেলেও ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৪ পর্যন্ত ভারতে অবস্থান করতে তাকে সম্ভবত তেমন কোন সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি। সর্বশেষ পাসপোর্টটি ব্যবহার করে সুব্রত বাইন বাংলাদেশ প্রবেশ করে ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৪, পরবর্তীতে এই পাসপোর্টে আর কোন ভিসা কিংবা বহির্গমন সীল লক্ষ্য করা যায়নি।
ইন্টারেস্টিং হলো এর প্রায় তিন বছর পর, ১৪ মে, ২০০৭ মোহাম্মদ আলী নামে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট প্রদান করা হয় সুব্রতকে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।