কোরবানির মৌসুমকে কেন্দ্র করে কামারদের ব্যস্ততা


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : তিনদিন পর পালিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। এ উৎসবকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোহার ও নবাবগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারের কামার শিল্পীরা। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ কাজের চাপ বেড়েছে তাদের। দিন যতই যাচ্ছে, ততই বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা।
কুরবানি ঈদে মহান আল্লাহকে খুশি করতে বিভিন্ন গবাদি পশু জবাই করা হয়। এসব পশুর গোশত কাটতে দা, ছুরি, বটি, ধামা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার অপরিহার্য। তাই তো কামাররা এখন এসব তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
দোহার উপজেলার জয়পাড়া ও মেঘুলা হাট বাজারের কামারেরা দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে কামারের দোকান। দম ফেলারও যেন সময় নেই তাদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন শিল্পীরা। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলে তাদের। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির মৌসুমে ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের।
অপরদিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর, বাগমারা, গালিমপুর, কোমরগঞ্জ, আগলা, টিকরপুর, মাঝিরকান্দা, বান্দুরা, শিকারীপাড়াসহ প্রায় শতাধিক দোকানে বানানো হচ্ছে দা, বটি, ছুরি, চাপাটিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র।
কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, দা ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বটি ৩০০ থেকে ৫৫০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা, চাপাতি ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজি উপরের নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়।
পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভিড় করছেন কামারদের দোকানে। আগে যেসব দোকানে দুই একজন করে শ্রমিক কাজ করতেন, এখন সেসব দোকানে তিন থেকে পাঁচজন কাজ করছেন।
কামার দোকানদারদের অভিযোগ, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লার দাম ও লোহার দাম বেড়ে গেছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদ উপলক্ষে দা, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।
জয়পাড়াহাট বাজারের বিমোল বলেন, সারা বছর তেমন কাজ থাকে না। কুরবানি ঈদের সময় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। ঈদ চলে গেলে আমাদের বসে থাকতে হয়, কাজ থাকে না।
মেঘুলা গবিন্দ সরকার নামে এক কর্মকার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কাজের চাপ বেশি। কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে আমাদের বিক্রি তত বাড়ছে।
কামারের দোকানে চাপাতি বানাতে আসা রমজান বলেন, ‘আগে যে চাপাতি কিনতাম ৪১০ থেকে ৫৪০ টাকা। সেই চাপাতি এখন নিজে লোহা দিয়ে বানিয়ে নিলাম এক হাজার টাকা করে।’ বটি বানাতে আসা গৃহবধূ হামিদা আক্তার বলেন, ‘আগের চেয়ে দাম অনেক বেশি। আগে যে বটি বানাতাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়, সে বটি এখন বানাতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা দিয়ে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।