ইত্তেহাদ নিউজ,চট্টগ্রাম : এইচএসসি পরীক্ষায় নিজের ছেলের ফলাফল নিয়ে জালিয়াতির মামলায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম মিজানুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন।
নারায়ণ চন্দ্র নাথ হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষে মঙ্গলবার তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম সামছু উদ্দিন আজাদ নগরীর পাঁচলাইশ থানায় নারায়ণ চন্দ্র নাথসহ চারজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- অধ্যাপক নারায়ণের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ, শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান এবং সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার।
২০২২ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। সেই ফলাফল প্রকাশ হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর। দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারা এবং পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ এর ৫, ৬, ১২ ও ১৩ ধারায় করা ওই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ফলাফল প্রকাশের আগে যেকোনো সময় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি করে নক্ষত্র দেবনাথের ফলাফল পরিবর্তন করেন। নক্ষত্র ছাড়া বাকি তিনজন জালিয়াতি সংঘটনের সময় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে স্ব স্ব পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
এর আগে, চলতি বছরের ১৫ মার্চ একই মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
নারায়ণ চন্দ্র নাথ ২০১৯ সাল থেকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালে তার ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তখন নারায়ণ সচিবের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ফলাফল ঘোষণার পর অভিযোগ ওঠে নারায়ণ চন্দ্র নাথ তার ছেলেকে জালিয়াতির মাধ্যমে জিপিএ-ফাইভ পাইয়ে দিয়েছেন। কে বা কারা নক্ষত্রের ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করলে তার মা বনশ্রী দেবনাথ নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর ফলে বিতর্ক আরও জোরালো হয়।
এ অবস্থায় ২০২৪ সালের জুন মাসে জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরের ৯ জুলাই নারায়ণকে শিক্ষাবোর্ড থেকে সরিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের চট্টগ্রামের পরিচালক পদে বসানো হয়।
এরপর গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের শৃঙ্খলা অণুবিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদারের স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, তদন্তে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য নারায়ণের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া ও নক্ষত্রের ফলাফল বাতিলের নির্দেশনা দেয়া হয়।
এর ভিত্তিতে জালিয়াতির দায়ে ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মাউশি’র চট্টগ্রামের পরিচালক পদ থেকে নারায়ণকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। তার ছেলের ফলাফল বাতিল করা হয়। এরপর নারায়ণসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত