ইত্তেহাদ নিউজ, ঝালকাঠি :
ঝালকাঠির রাজাপুর সরকারি কলেজে চলছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ ফান্ড থেকে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে নিয়মকানুন মানা হচ্ছে না। বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অযৌক্তিক ফি নেওয়া এবং জবাবদিহিতার অভাব শিক্ষার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে পরপর দুই অর্থ বছরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া পাঁচ লক্ষ টাকা উত্তোলন হলেও এর সঠিক ব্যবহার হয়নি বলে জানা গেছে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। বর্তমান অধ্যক্ষ হুমায়ুন আহমেদ এবং সাবেক অধ্যক্ষ বাবুল গাজী মাউশি থেকে আড়াই লাখ করে মোট পাঁচ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। সুবিধার বিনিময়ে তারা ক্রয় কমিটির কাছ থেকে নেয়া মনগড়া ভাউচার পাশ করেছেন। কিন্তু সরজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভাউচারে উল্লেখিত মালামাল ও বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে অমিল রয়েছে।
সাবেক অধ্যক্ষ বাবুল গাজী অবসরে যাওয়ার পর উত্তোলিত আড়াই লাখ টাকার মধ্যে এক লক্ষ টাকা কলেজের এক শিক্ষকের কাছে ফেরত দিয়েছিলেন। তবে ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে যায়। এ বিষয়ে তিনি জানান, “আমি কেবল ক্রয় কমিটির দেওয়া ভাউচারে স্বাক্ষর করেছি। সব মালামাল ক্রয় না হলে তার দায় ক্রয় কমিটিকেই নিতে হবে।”
অন্যদিকে, বর্তমান অধ্যক্ষ হুমায়ুন আহমেদ ভাউচার ও মালামাল দেখাতে ব্যর্থ হন। বরং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান এবং ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি। অভিযোগ রয়েছে, তিনিও আড়াই লাখ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ভুয়া ভাউচারে স্বাক্ষর করেছেন, যা অডিট হলে প্রমাণিত হবে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, কলেজ লাইব্রেরির বই ক্রয়, সায়েন্স ল্যাবের মালামাল এবং স্টেশনারি খাতে কেনাকাটার ক্ষেত্রে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। লাইব্রেরিয়ান সালাউদ্দিনের নামে ২৭ হাজার টাকার বই কেনার চেক পাশ করা হলেও তার মধ্য থেকে ১০ হাজার টাকা কেটে নেয়া হয়। বাধ্য হয়ে লাইব্রেরিয়ান নিজ তহবিল থেকে সেই টাকা বইয়ের দোকানে পরিশোধ করেন। পরে কলেজে অনুসন্ধান চালানোর পর অধ্যক্ষ হুমায়ুন আহমেদ ওই ১০ হাজার টাকা ফেরত দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, কলেজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে দুর্নীতি দিন দিন বাড়ছে। অথচ বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
মাউশি থেকে বরাদ্দ পাওয়া অর্থের আত্মসাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজাপুরের সাধারণ মানুষ। সচেতন মহলের দাবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। তাই অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ, সুষ্ঠু তদন্ত এবং অডিটের মাধ্যমে সত্য উদঘাটনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত