বরিশাল কর বিভাগের কম্পিউটার অপারেটরের সম্পদের পাহাড়

মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল : মিজ সানজিদা শারমিন।ডাক নাম লাভলী।তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী।কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করেন বরিশাল কর অঞ্চলের কর কমিশনারের কার্যালয়ে।যে বেতন পান, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলার কথা।কিন্তু হয়েছে উল্টো।নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে অফিসে যান।লেটেস্ট মডেলের প্রিমিও গাড়ি।বেতনের অর্ধেক টাকা দেন ব্যক্তিগত গাড়ির চালককে।স্বর্ন কেনা তার সখ।পার্লারে খরচ করেন দু হাতে।তার পরেও এই চাকরি করেই গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।গাড়ি-বাড়ি,জমি-জমা,ফ্ল্যাটসহ রয়েছে অনেক সম্পদ। অনুসন্ধানে জানা গেছে,অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট নিয়েছেন অক্সফোর্ড মিশন রোডে।
২০ বছরের চাকরিজীবনে তার রয়েছে জমি,ফ্ল্যাট,স্বর্নালংকার,গাড়ি, জমিসহ নামে বেনামে প্রচুর সম্পদ।চড়েন প্রায় অর্ধকোটি টাকার দামের প্রিমিও গাড়িতে। দু’হাতে কামাই করছেন।জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদে ছুয়েঁছেন পাহাড়।ঘুস ,দুর্নীতি-অনিয়ম,অনৈতিক ও ফাইল ঢিল করার মাধ্যমে এসব অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে সুত্র জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে সানজিদা শারমিন বলেন,আমি গাড়ি ক্রয় করেছি এটা সত্য।আমার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে এটাও সত্য।তবে সম্পদের পাহাড় গড়ার কথা অস্বিকার করেন।
অপর একটি সুত্র জানিয়েছে,ঘুসের বিনিময়ে কর ফাকিঁ দেয়া ব্যবসায়ী,ডাক্তারসহ বিভিন্ন লোকের ফাইল ঢিল করতো সানজিদা শারমিন। কর অঞ্চল অফিসে ঘুসের রানী হিসেবেও তিনি এক পরিচিত নাম।
কর অফিসের নাম প্রকাশে এক কর্মকর্তা জানান,সানজিদা শারমিন দুর্নীতিবাজ একজন তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী।এছাড়া কর অফিসের গোপন নথি ফাসঁ করার অভিযোগ রেয়েছে তার বিরুদ্ধে।এত ছোট চাকরি করে এত বিশাল পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর বিভাগের ভাবমূ্র্তি নষ্ট করায় তার বিরুদ্ধে কর বিভাগ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(ঘ) অনুযায়ী দুর্নীতি পরায়নতার অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ।ব্যবস্থা না নেয়া হলে সুনাম ক্ষুন্ন হবে কর বিভাগের।
৪০ হাজার টাকা বেতনের সরকারি কর্মচারীর বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন রোডে অর্ধ কোটি কোটি টাকার ফ্ল্যাট ও প্রিমিও গাড়ি কেনা,নামে বেনামে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ,এফডিআর,সঞ্চয় পত্র ,স্বর্নালংকার এবং অনেক জমি জমার খবর নিয়ে বরিশাল কর বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যেও চলছে নানা আলোচনা।
এসব বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একজন সরকারি চাকরিজীবী অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে থাকলে তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি দুর্নীতি দমন আইনে বিচার করতে হবে। যদি বিচার না করা যায়, তাহলে সমাজে এ ধরনের অপরাধীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।


