মধ্যপ্রাচ্য সংবাদ

উত্তেজনা কমাচ্ছে ইরান-ইসরায়েল

053818 bangladesh pratidin air
print news

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্কইরানের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ ইস্পাহানের রাজধানী শহর ইস্পাহানে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করে দেশটির সামরিক বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইরানের এ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ ঘটনা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ইরান হয়তো ইসরায়েলের জন্য উল্লেখযোগ্য কিন্তু সীমিত হামলার বিষয়টির গুরুত্ব কমিয়ে দিচ্ছে। ইসরায়েলে গত সপ্তাহে তাদের বড় হামলার কাছে একে গৌণ মনে করছে। এ থেকে সরল চোখে যা দেখা যাচ্ছে, তা হলো—দুই আঞ্চলিক শক্তিধর ইরান এবং ইসরায়েল উভয়ই তাদের মধ্যেকার সবচেয়ে বিপজ্জনক উত্তেজনা গুটিয়ে নিতে আগ্রহী।
এ মাসে সিরিয়ার দামেস্কে ইরান দূতাবাসে হামলার মাধ্যমে উত্তেজনার সূচনা করে ইসরায়েল। জবাবে ইরান ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেয় । কিন্তু তাদের অধিকাংশ ড্রোন ইসরায়েলের সীমানা অতিক্রম করার আগেই ধ্বংস হয়। গত শুক্রবার ইরানে হামলার পর আঞ্চলিক গোয়ন্দাসূত্র সিএনএনকে জানায়, ইরানের পক্ষ থেকে এ হামলার জবাব দেওয়া হবে না। এতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি হামলার পরিস্থিতি আপাতত স্থগিত হয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যা ঘটেছে তা শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলটি গভীরভাবে জড়িয়ে গেছে। সেখানে আঞ্চলিক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সম্ভাব্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করার সুযোগও তৈরি হয়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরানে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামলা করা হলে তাতে অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ থেকেই সম্ভাব্য উত্তেজনা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে যায়। এর আগে ইসরায়েলের দিকে ধেয়ে আসা ৭০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আক্রমণে অংশ না নিলেও ইসরায়েলকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের হামলায় অংশ নিলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ হতো। এ অঞ্চলে তাদের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কে নববড়ে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল।

তেহরান সংযম দেখানোর ক্ষেত্রে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার দিকটিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পররাষ্ট্রনীতির মূলে রয়েছে। গত বছর চীনের মধ্যস্থতায় তেহরান ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন পর সম্পর্কের শীতল বরফ গলতে শুরু করে। আঞ্চলিক অশান্তি তৈরি হলে এই সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়ার ঝুঁকি তৈরি হতো।

তবে এসব বিপদ ইরান ও ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থীদের চাপে হারিয়ে যেতে পারে। তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত হামলার বিষয়ে বেশি উৎসাহী। ইসরায়েলের ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির গত শুক্রবারের হামলাকে দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন। গত সপ্তাহে তিনি ইসরায়েলে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় ইরানের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলার আহ্বান জানান।

ইরানের বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েল তাদের আকাশসীমা ও তার আশপাশে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন মিত্রদের সাহায্যে ধ্বংস করায় তাদের ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা দেখিয়েছে। এতে তেহরানের কট্টরপন্থীরাও আরও উৎসাহী হবে।

এ মাসে ইরান ও ইসরায়েলের পারস্পরিক হামলার বিষয়টি তাদের দীর্ঘদিনের ছায়াযুদ্ধ থেকে বের করে এনেছে ও অভ্যন্তরীণ উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের মিত্ররা বলছে, গাজায় যতদিন ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করবে, ততদিন তারা পিছু হটবে না। ইরাক, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনে এ লড়াই দীর্ঘতর হবে।

ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এ হামলার অনেকগুলো দিক আছে। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে আঞ্চলিক এ লড়াইয়ে পূর্ণ শক্তি দিয়ে দুই পক্ষই পরস্পরকে আঘাত শুরু করলে তারা অনেক কিছুই হারাবে। সূত্র : বিবিসি

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *