মেঘনার চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও পরিচালক তানভির আহমেদ মোস্তফার বিরুদ্ধে আইসিটিতে অভিযোগ


অনলাইন ডেস্ক :মেঘনা গ্রুপ ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তর টেলিভিশনের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও পরিচালক তানভির আহমেদ মোস্তফার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-আইসিটিতে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্তের আবেদন করা হয়েছে। প্রায় এক যুগ আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে তাঁদের প্ররোচনা, উসকানি, পরিকল্পনা ও অর্থায়নে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে।
হেফাজতে ইসলামের নেতা জুনায়েদ আল হাবিবের পক্ষে গত ১১ এপ্রিল তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কের কাছে এই অভিযোগ দেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মুশফিকুর রহমান। অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করে আইসিটি আইন, ১৯৭৩ এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, শাহবাগের আন্দোলনের বিপরীতে ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশ ডাকে হেফাজতে ইসলাম। সেই সমাবেশ ঘিরে পুরো মতিঝিল এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ও তাণ্ডব চলে। পরে সেই রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে সমাবেশকারীদের মতিঝিল থেকে সরানো হয়। শাপলা চত্বরের সেই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে সে সময় এক প্রতিবেদনে দাবি করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’।
যদিও পুলিশ দাবি করে রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। আর দিনভর সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ১১ জন। অধিকারের প্রতিবেদনে প্রকাশিত সংখ্যাটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলে ওই বছরের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জিডিটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
একাত্তর টেলিভিশনকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, একাত্তর টেলিভিশনও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিতা এবং সমর্থন করে এই হত্যাকাণ্ডের পক্ষে প্রচারণা চালায়। এসংক্রান্ত ঘটনায় গত বছরের ২৬ নভেম্বর আইসিটির চিফ প্রসিকিউটর বরাবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, তারিক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন জুনায়েদ আল হাবিব।
ওই অভিযোগটি দায়ের করলেও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অর্থদাতা, সুবিধাভোগী এবং গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত মেঘনা গ্রুপ ও একাত্তর টেলিভিশনের চেয়ারম্যান-পরিচালক মোস্তফা কামাল এবং অন্যতম পরিচালক তানভির মোস্তফাকে বিবাদী করা হয়নি।
হেফাজতের সমাবেশে অভিযানের নামে গণহত্যা চালানো হয়েছিল উল্লেখ করে আবেদনে আরো বলা হয়েছে, আন্দোলনরত তৌহিদি জনতাকে নির্মূল করতে র্যাব-পুলিশ সদস্যরা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করে গণহত্যা চালায়। আসামিরা (মোস্তফা কামাল ও তানভির আহমেদ মোস্তফা) সরকারের স্বার্থে একাত্তর টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ রাখেন।
যাতে হত্যার সঠিক চিত্র প্রকাশ না পায়, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য গোপন রাখা যায় এবং গুজব ছড়ানো যায়।
তাঁদের আর্থিক সহযোগিতা ও পরিকল্পনায় সেই সময় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার সারা দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে চার লাখ আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে আসামি করে। এর মধ্যে ১২ হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আসামিরা আইসিটি আইন ১৯৭৩ এর ৩(২), ৪(১)/৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন, যা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। অতএব এই অভিযোগ কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করার পাশাপাশি তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবেদনে উল্লেখ করা ফোন নাম্বারে কল করলে আবেদনকারী মুশফিকুর রহমানের ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।