বরিশাল বাংলাদেশ শিক্ষা

বাকেরগঞ্জের বাদলপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতিকে বোর্ডের নোটিশ

IMG 20230811 WA0003
print news

ইত্তেহাদ রিপোর্ট : বাকেরগঞ্জের বাদলপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানকে আর্থিক কেলেংকারী ও স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয় প্রায় তিন বছর আগে। এরপরে বরিশাল শিক্ষাবোর্ড অধিকতর তদন্তের জন্য বাকেরগঞ্জ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করেন। সেই তদন্ত প্রতিবেদনেও অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের বিরূদ্ধে আনিত অভিযোগ সমূহ প্রমাণিত হয়। পরবর্তিতে শিক্ষা বোর্ডের আরবিট্রেশন সভায় অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে চুড়ান্ত বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয় । কিন্তু অধ্যক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে আদালতে মামলা করায় তা আর নিষ্পত্তি হয়নি। ইতঃমধ্যে ঐ গভর্নিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নতুন কমিটি হয়। তারা বহিস্কৃত অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পূণঃবহালের উদ্যোগ নেয়। সেই মোতাবেক গত ২৬ জুন কলেজে অধ্যক্ষ পদে আবার যোগদান করেন বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান। কোন প্রকার নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে, আদালতের আদেশ না পেয়ে এবং শিক্ষা বোর্ডের অজ্ঞাতসারে এই যোগদান সম্পন্ন হয়। যদিও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেছেন, গভর্নিং কমিটির সভাপতি আঃ রব মোল্লা, বিদ্যোৎসাহী সদস্য মাহবুব হোসেন (রাজা মেম্বার),  মনোয়ার হোসেন মল্লিক ও জাকির হোসেন হাওলাদার যোগদান প্রক্রিয়ায় জড়িত হন অতি উৎসাহী হয়ে। ১৮ লক্ষ টাকার একটি গোপন চুক্তি হয় বহিস্কৃত অধ্যক্ষের সাথে একটি চক্রের। তিন বছরের সকল বকেয়া বেতন তুলে তা পুরোটা নিয়ে নিবেন যোগদানে সহায়তাকারীগন ।

 

raja
সম্প্রতি বহিস্কৃত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানকে আরেকটি জালিয়াতি মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় গ্রেফতার করে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে শোন এ্যারেস্ট করা হয় তার প্রথম স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় । দুই সপ্তাহ জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আবারো কলেজে যোগদান করে। দেশের কোন আইন কানুনই যেন তার জন্য নয়। অবশেষে নড়েচড়ে বসে বরিশাল শিক্ষাবোর্ড। কমিটির সভাপতি আঃ রব মোল্লা এবং বহিস্কৃত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। যার স্মারক নং ২০২৩/২৬১০ এবং ২৬১১। এতো অনিয়ম-দুর্নীতির পরেও অধ্যক্ষ ও সভাপতিকে কেন বহিস্কার করা হবেনা তার কারন স্ব-শরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা করতে সাত দিন সময় বেধে দেওয়া হয়।
এদিকে এসব অনিয়ম ঢাকতে এবং ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে এবার তারা ধর্না দিচ্ছেন একজন সংসদ সদস্যর কাছে। ঢাকায় ঐ এমপির বাসায় দলবল নিয়ে তদবিরে গেছেন বলে এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ এতে চরম ক্ষুব্ধ হয়। তারা বলেন, আমরা আশা করি দুর্নীতির এই বরপূত্রদের এমপি মহোদয় প্রশ্রয় দিবেন না। আর যদি তিনি এসব দুর্নীতিবাজদের কোন সহায়তা করেন তাহলে আমরা বুঝবো এসব অপকর্মে তারও সমর্থন রয়েছে।
এ বিষয়ে গভর্নিং কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য মাহবুব সিকদার (রাজা মেম্বার) বলেন,
বরিশাল শিক্ষা বোর্ড কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এটা সত্য তবে ২২ লাখ টাকা নেয়াতো দুরের কথা ২২ পয়সাও নেয়নি। অধ্যক্ষ প্রথম স্ত্রীর মামলায় শোন এ্যারেস্ট হিসেবেও কারাগারে কারাবাস করেছে। কারাগারে গেলে সাসপেন্ড থাকবে এছাড়া সেতো আজিবনের জন্য বহিস্কৃত তা কিভাবে যোগদান করালেন এ প্রশ্নের কোন উত্তর প্রদান করেন নি তিনি।

 

pr

এ ব্যাপারে গভর্নিং কমিটির সভাপতি আঃ রব মোল্লা বলেন, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সেখানে জবাব দিবো।

এ ব্যাপারে গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য হেমায়েত উদ্দিন হাওলাদার বলেন , অধ্যক্ষ বহিস্কৃত তাকে যোগদান করানোর রেজ্যুউলেশন সম্পুর্ন অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভুত। দুর্নীতি ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা আদালতে চলমান। এছাড়া মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। কতিপয় সদস্য অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে যোগদান করানোর চেষ্টা করতেছে যা আদালত অবমাননার শামিল। বেতন স্থগিত রয়েছে বহিস্কৃত অধ্যক্ষের।তিনি বলেন যোগদান করানোটার প্রক্রিয়াটা সম্পুর্ন বেআইনি ও অবৈধ।তিনি বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কলেজের দাতা সদস্য ও তৎকালীন বিদ্যোৎসাহী সদস্য আমিনুল মোহাইমেন চুন্নু বলেন,ইতিমধ্য শিক্ষা বোর্ড কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সভাপতি ও অধ্যক্ষকে। অধ্যক্ষ নিজেই স্বিকারোক্তি প্রদান করেছে স্বাক্ষর জালিয়াতির যা প্রমানিত। তিনি বলেন, বোর্ড এ ব্যাপারে সবকিছুই অবহিত তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

বহিস্কৃত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান (রাজা)কে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *