বরিশাল বাংলাদেশ

বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারীর সুদ ব্যবসা জমজমাট

inbound4748277679967528263 600x337 1
print news

সরকারি চাকরি বিধি লংঘন করে দীর্ঘ বছর যাবৎ নানা রকমের অনৈতিক কর্মকান্ড, চড়া সুদে টাকা ধার, চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাৎ, জমি দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ নানা অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী রিপনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবরে। তারপরও মিলছে না সুরাহা।
সোমবার সকালে রুইয়ার পোল এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী বরিশাল নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ডের রুইয়ার পোল এলাকার বাসিন্দা মোঃ নূর মোহাম্মদ হাওলাদারের ছেলে মোঃ রুহুল আমিন রিপন এর বিরুদ্ধে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও সুরাহা পাননি তারা। রিপনের অত্যাচারের মাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। এলাকাবাসীর দেয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১০/১২ বছর পূর্বে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে যোগদান করে রিপন। আর চাকরি পাওয়ার পর থেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তিনি।

সরকারি চাকরির নিয়মানুযায়ী অন্য কোন অর্থনৈতিক বিষয়, ব্যবসা কিংবা চাকরি না করার বিধান থাকলেও তিনি একাধিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। ডিসি অফিসের পিয়ন হিসেবে কাগজ কলমে তার নাম থাকলেও সরকারি অফিস সময়ে তাকে নিজ কর্মস্থলের চেয়ে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বারান্দায় বেশি দেখা যায়। কোটি কোটি টাকার জমি যৌথভাবে বায়না চুক্তি করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তা প্লট আকারে বিক্রি করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। রুইয়ার পোল এলাকায় তিনটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে তার একটিতে নিজে বসেন। অসহায় ব্যক্তিদের টার্গেট করে চড়া সুদের বিনিময়ে টাকা ধার দেন তিনি। আর সেই অর্থ ফেরত দিতে কেউ ব্যর্থ হলে তার ওপর চলে নির্মম অত্যাচার। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে সহায় সম্পদ হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, নির্ধারিত অফিস সময়ে তাকে কখনোই অফিসে পাওয়া যায় না। রিপন তখন ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন জনকে চাকরি বা সুদে টাকা দেয়া ও জমি-জমা ক্রয় বিক্রয় নিয়ে। এছাড়াও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকরি দেবার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। নিজের প্রবাসী চাচার স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করা ও তার সব টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে রিপনের বিরুদ্ধে। স্থানীয় নূরজাহান, শাওন, হাবিবুর রহমান, জাকির হোসেন সহ ১৬ জনের স্বাক্ষরিত অভিযোগ পেয়েও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান অভিযোগকারীরা।

সোহাগ সিকদার নামে একজন বলেন, রিপন তার বিরুদ্ধে আনীত লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষরকারীদের নামের তালিকা ধরে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে এখন। এ বিষয়ে অভিযোগকারী ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ চৌধুরী বলেন, মোঃ রুহুল আমিন রিপন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার পরও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। যার কারনে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকারি খাল দখল থেকে শুরু করে গরীব অসহায় মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে টাকা ধার দিয়ে পরে চড়া সুদ আদায় করছে। সুদের টাকা দিতে বিলম্ব হলে সুদে আসলে মিলিয়ে বড় অংকের টাকা দাবী করে তাদের ভিটা বাড়ি কৌশলে দখল করছেন। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবী করে অভিযুক্ত রুহুল আমিন রিপন বলেন, গত জুনে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বে স্থানীয় একটি মহল আমাকে ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আমার নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আর আমিও আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগের বিষয়ে উচ্চতর তদন্তের জন্য আবেদন করেছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *