প্রতিবন্ধী সোহাগ’র সংসার চলে রিকশা চালিয়ে


মিলন কান্তি দাস, নলছিটি,ঝালকাঠি
নলছিটি পৌরসভার শীতলপাড়া এলাকার প্রতিবন্ধী সোহাগ হাওলাদার’র (৩৫) সংসার চলে রিক্সা চালিয়ে।
জানা গেছে জন্মের পর তিনি টাইফয়েডে আক্রান্ত হন। অর্থের অভাবে করাতে পারেনি উপযুক্ত চিকিৎসার। ফলে তার পা দুটোই অস্যর হয়ে যায়। তার পর থেকেই
প্রতিবন্ধী হিসেবে ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করে বেড়ে ওঠে সোহাগ। বর্তমানে ঢাকায় রিক্সা চালিয়ে কোনমতে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে নিয়ে চার জনের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। পরিবারের ভরণ পোষণ যোগাতে করতে হচ্ছে অক্লান্ত পরিশ্রম। দুই হাতে ভর করে চলা সোহাগ হাওলাদার রিক্সা চালিয়ে যা উপার্জন করে তা দিয়ে বাসা ভাড়া ও সংসার জোড়াতালি দিয়ে চলছে। ইতিপূর্বে নলছিটি পৌরসভা থেকে ভাতা পেলেও বহু বছর ধরেও ভাতাটি বন্ধ রয়েছে।
প্রতিবন্ধী সোহাগ হাওলাদার ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শীতলপাড়া এলাকার মৃত গনি হাওলাদারের ছেলে। হতদরিদ্র সোহাগের বাড়িতে মাথা গোঁজার মতো একটি ঘর না থাকায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
প্রতবন্ধী সোহাগের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছোটবেলায় টাইফয়েড হয়েছিল এরপর থেকে এরকম হয়ে গেছি। বর্তমানে আমার দুটি সন্তান এবং স্ত্রী রয়েছে। আমার বাড়িঘর কিছুই নাই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় রিক্সা চালিয়ে কোন রকম বেঁচে আছি। যেদিন রিক্সা চালাতে পারি না সেদিন সংসার চলে না। আমি এর আগে সরকারি সহয়তা পেতাম কিন্তু সেটিও অনেকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে আমার সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
সোহাগের মামা ইউসুফ আলী হাওলাদার জানান,সোহাগ তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকা রিক্সা চালিয়ে কোন রকম সংসার চালান। আমাদেরও আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না যে তাদের সাহায্য করবো। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে সোহাগের খুবই উপকার হতো।
১, ২,৩, নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর খাদিজা পারভীন বলেন, সোহাগ হাওলাদার খুবই অসহায় । ওনি এর আগে ঢাকায় থাকতো বর্তমানে বাড়িতে এসেছে। তার থাকার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এর আগে তিনি সরকারি ভাতা পেতো কি কারণে সেটি বন্ধ আছে তা আমার জানা নেই। তাই উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কাছে নিয়ে এসেছি ভাতাটা চালু করার জন্য।
নলছিটি উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, সোহাগ হাওলাদার এর আগে ভাতার আওতায় ছিলেন। ২০০১ সালে যখন এনআইসি করা হয় তখন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। এখন আবার তার ভাতা চালু করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় যদি আনা যায় তাহলে কোন একটা উপকরণ দিয়ে তাকে স্বাবলম্বী করা যাবে।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, সোহাগ হাওলাদারকে একটি আবেদন দিতে বলছি। তাকে সরকারি ভাবে সহয়তা করা হবে।