ইমদাদুল হক, পাইকগাছা, খুলনা :
বীরঙ্গনা গুরুদাসীর স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বিপুল আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত
আমাদের স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের
দুঃশাসন থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে স্বসস্ত্র সংগ্রামের আহবান করে। এ
আহবানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এ দেশের কৃষক, শ্রমিক
সহ সর্বস্তরের মানুষ। ৯ মাসের স্বসস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন
হলেও যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে মহান স্বাধীনতা জাতি তাদের কখনো ভুলবে
না। সচিব তপন কান্তি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের সেনা ও দোষরা এদেশের
নিরিহ নারীদের ওপর যে অমানসিক নির্যাতন করেছে তা পৃথিবীর সকল
অমানবিকতাকে হারমানিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরঙ্গনাদের
আত্মত্যাগ অনেকটাই অবহেলিত ও উপেক্ষিত ছিল। বর্তমান সরকার দেশের সকল
বীরঙ্গনাদের যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে। গুরুদাসী তাদের মধ্যে একজন
ছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ সময় গুরুদাসীর আত্মত্যাগ উপেক্ষা করা হয়েছে।
২০২০ সালে তাকে বীরঙ্গনার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। গুরুদাসী সহ সকল
বীরঙ্গনাদের আত্মত্যাগ মহান স্বাধীনতার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
গুরুদাসীর স্মৃতি বিজড়িত স্থান সংরক্ষণ করে তার আত্মত্যাগের যথাযথ সম্মান
প্রদর্শন করা হবে। শুক্রবার বিকালে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের
ফুলবাড়ী গ্রামে গুরুদাসীর স্মৃতি বিজড়িত জন্মস্থান পরিদর্শনকালে এসব কথা
বলেন সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় তিনি গুরুদাসীর
প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান এবং গুরুদাসীর বোনের দুই
ছেলে সত্যেন সরদার ও মিলন সরদার সহ তাদের পরিবার পরিজনের সাথে দেখা করে তাদের
সার্বিক খোঁজ খবর নেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত
জেলা প্রশাসক সার্বিক পুলক কুমার মন্ডল, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল
মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন, ওসি ওবাইদুর রহমান,
ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম
কুমার দাস, সহকারী অধ্যাপক ময়নুল ইসলাম, প্রভাষক স্বপন ঘোষ, প্রেসক্লাবের
সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ, সাংবাদিক ¯েœহেন্দু বিকাশ, বি সরকার,
সত্যেন সরদার, মিলন সরদার, পুষ্পেন্দু সরদার ও ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গুরুদাসীর জন্মস্থান পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী
গ্রামে। পাশের কালিনগর গ্রামে গুরুপদ মন্ডলের সাথে গুরুদাসীর বিয়ে হয়। স্বামী
গুরুপদ মন্ডল পেশায় দর্জি ছিলেন। দাম্পত্ত জীবনে গুরুদাসী দম্পত্তির দুই ছেলে ও দুই
মেয়ে ছিল। কালিনগর বিয়ে হলেও গুরুদাসী স্বামী সন্তান নিয়ে ফুলবাড়ী
পিতৃলয়ে থাকতো। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনারা গুরুদাসীর
বাড়ীতে হামলা চালায়। পরিবারের সদস্যদের বাড়ির উঠনে জড়ো করে গুরুদাসীর উপর
লোলুপ দৃষ্টি দেয় পাক সেনারা। স্ত্রীর সম্ভ্রম রক্ষা করার চেষ্টা করলে গুরুদাসীর সামনেই
স্বামী গুরুপদ মন্ডল, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে হত্যা করা হয়। বেয়নেট দিয়ে
খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাদের মৃতদেহ বীভৎস করে দেওয়া হয়। এরপর গুরুদাসীর কোলে
থাকা দুধের শিশুকে মাতৃক্রোড় থেকে কেড়ে দিয়ে হত্যা করা হয়। মায়ের সামনেই
তাকে পুতে ফেলা হয় বাড়ীর পাশের কাদা পানির ভিতরে। তারপর গুরুদাসীর উপর
পাকসেনারা পাশবিক নির্যাতন করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গুরুদাসী
মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে গুরুদাসী মাসি
হিসেবে। হাতে একটি লাঠি নিয়ে পাগলীর বেশে ঘুরে বেড়াতো বিভিন্ন
প্রান্তে। মৃত্যুর আগে কপিলমুনি বাজার সংলগ্ন এলাকায় বাসকরতো গুরুদাসী।
তার বসতবাড়ী সহ জন্মস্থানের স্মৃতি এখনো অরক্ষিত রয়েছে। সিনিয়র সচিব
তপন কান্তি ঘোষ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকাকালীন সময়ে ২০২০
সালের ১৪ ডিসেম্বর গুরুদাসীকে বীরঙ্গনার স্বীকৃতি প্রদান করে গেজেট
প্রকাশ করা হয়।
পাইকগাছায় পাখি শিকার রোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতারণ করা
হয়েছে।পরিবেশবাদী সংগঠন বনবিবি’র উদ্যোগে ৩ ফেব্রæয়ারি শনিবার ১টায়
উপজেলার নতুন বাজার ও বোয়ালিয়া মোড়ে লিফলেট বিতারণ করা হয়। এ সময়
উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশবাদী সংগঠন বনবিবি’র সভাপতি সাংবাদিক প্রকাশ
ঘোষ বিধান, রোজী সিদ্দিকী, রাবেয়া অক্তার মলি,অর্থি সরকার, মনিরা আহমেদ,
লাবিবা আক্তার, লিনজা আক্তার মিথিলা, তৃষা বিশ্বস, মিতু সেন, পরিবেশ কর্মী
গৌতম ভদ্র, কওসার আলী, দিবাশীস সাধু, শাহিনুর রহমান প্রমুখ।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। ফসল ক্ষেতের পোকামাকড় খেয়ে
পাখি কৃষকের উপকার করে। তাই পাখিকে কৃষকের বন্ধু বলা হয়।পাখি শিকার
দন্ডনীয় অপরাধ। ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও
নিরাপত্তা আইনে দন্ডের বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ
শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা দন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত। একই অপরাধ ফের করলে
শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধানও রয়েছে। তাই পাখি শিকার রোধে পরিবেশ
কর্মীরা সকলকে সচেতন হওয়ার জন্য আহবান জানান।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত