মামুনুর রশীদ নোমানী,রাজাপুর থেকে ফিরে : রাজাপুর থানা নিয়ে অনেক প্রবাদ রয়েছে। উল্লেখযোগ্য প্রবাদের মধ্যে একটি হলো "দেখতে ভালো কুড়াঁকুড় ,থানার মধ্যে রাজাপুর" ।যেখানে জন্মছেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক । যেই রাজাপুরে স্বাধীনতা যুদ্ধে নবম সেক্টরের অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম ব্যরিষ্টার এম শাজাহান ওমর এমপি। যুদ্ধ জয়েও রাজাপুর এগিয়ে ছিল। সেই রাজাপুর এখন প্রশাসনিক দ্বন্ধ আর ভাগ-বাটোয়ারার কারনে থমকে আছে উন্নয়ন। বিগত দিনে ক্ষমতাশীন দলের দুই ধারার কারনে ফায়দা হাসিল করেছে সমানে সমান। সকল ধারাকে সামাল দিতে হচ্ছে স্থানীয় সংসদ সদস্যের।তার পরেও প্রকাশ্যে চলে এসেছে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা ইয়াসমিন ও এলজিইডির উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ মজুমদারের প্রকাশ্য দ্বন্ধ।এমনকি দেখা স্বাক্ষাৎ হলেও হয়না কথা বার্তা।দ্বন্ধের বিষয়টি জেলা গড়িয়ে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত পৌছেছে।
দ্বন্ধ কে দ্বন্ধ না বলে মনমালিণ্য বললেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান। তবে দ্বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেছেন আমি স্বচ্ছতায় বিশ্বাষী ।এই স্বচ্ছতার কারনেই দ্বন্ধ শুরু।
যেভাবে দ্বন্ধ শুরু :
রাজাপুর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মিনি পার্ক স্থানান্তর,ঈদগাহ ময়দান নির্মান,উপজেলা পরিষদ অভ্যান্তরের পুকুর ঘাটলা মেরামতসহ বেশ কয়েকটি কাজ উপজেলা নির্বাহী অফিসার চেয়েছিলেন আর এফ কিউ পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে। এ বিষয়ে রেজুলেশন করে পাঠানো হয় উপজেলা এলজিইডি অফিসে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন উপজেলা প্রকৌশলী। তিনি জানিয়ে দেন উম্মুক্ত টেন্ডারে স্বচ্ছতা থাকে। থাকে প্রতিযোগীতা।লুটপাট হয়না।আমি ঐ ভাবে কাজের স্টিমেট দিতে পারিনা। কারন এ প্রক্রিয়াটি অস্বচ্ছ।অডিট আপত্তি হলে সমস্যা হবে। আর এফ কিউ পদ্ধতির প্রস্তাব উপজেলা প্রকৌশলী ফিরিয়ে দেয়ার পরেই শুরু হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বনাম উপজেলা প্রকৌশলীর দ্বন্ধ। এর পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে শুক্তাগড় ইউনিয়নের সাংগর কেন্দ্রে দ্বায়িত্ব প্রদান করেন সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার।এতে তিনি আরো ক্ষুব্ধ হন। এর পর থেকে শুরু হয় প্রকাশ্য দ্বন্ধ। এই দ্বন্ধের কারনে উন্নয়নের ফাইল আটকে যায়। থেমে যায় রাজাপুরের উন্নয়ন।
রাজাপুর উপজেলা পরিষদের একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানায়,জনপ্রতিনিরা এখন অনেকটাই অসহায় অবস্থায়।ইউএনওর কাছে গেলে পাঠিয়ে দেন এলজিইডি অফিসে। আর এলজিইডি অফিসে গেলে পাঠিয়ে দেয়া হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার'র অফিসে। সম্প্রতি বরিশালের বিভাগীয় কমিশনারের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরা হলে তিনি বলেছেন সকল কাজ হবে ওটিএম পদ্ধতিতে।
রাজাপুর উপজেলা পরিষদের একটি সুত্র জানায়,আর এফ কিউ পদ্ধতিতে কাজ হলে কে কত পার্সেন্টেজ পাবে বিষয়টি পরিস্কার না হওয়ায় বিষয়টি ঝুলে যায়।ইউএনও অফিস এলজিইডি অফিসকে কোন পার্সেন্টেজ দিবেনা এমন খবরে উঠে আসে স্বচ্ছতা-অস্বচ্ছতার বিষয়টি।
উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ মাহমুদ বলেন,সকল টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। টেন্ডার প্রক্রিয়া আমাদের দেশের দুর্নীতির আরেকটি উৎস। প্রতিটি টেন্ডার হওয়া উচিৎ উম্মুক্ত ও ইলেক্ট্রনিক টেন্ডারিং (ই-টেন্ডারিং) প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা । তাহলে সরকারি টাকার অপচয় রোধ করা সম্ভব।এ দু পদ্ধতিতে টেন্ডার হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান বলেন,ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলীর মধ্যে মনমালিণ্য চলছে। তিনি দ্বন্ধ না বলে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, বিষয়টি সমাধান যোগ্য।
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন,আমি সব সময়ই স্বচ্ছতায় বিশ্বাষ করি। আর এফ কিউ পদ্ধতির চেয়ে ওটিএম পদ্ধতি ভালো এবং সুন্দর। কারন ওটিএম পদ্ধতিতে কাজ হলে কাজে স্বচ্ছতা এবং জাবাবদিহিতা থাকে।দুর্নীতি ও লুটপাট হওয়ার ভয় থাকেনা।তিনি দ্বন্ধের কথা স্বীকার করে বলেন,বিগত দিনের প্রথা ডাক্তার এবং উপজেলা প্রকৌশলীদের নির্বাচনে কোন দ্বায়িত্ব দেয়া হয়না।আমাকে প্রথা ভেঙ্গে দ্বায়িত্ব দেয়া হয় ক্ষোভ থেকে।
এ ব্যাপারে রাজাপুরের ইউএনও ফারহানা ইয়াসমিনকে কল করা হলে নাজির পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি ব্যাংকে আছি। স্যার অফিসে। মোবাইল ফোন নাজিরের কাছে থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত