বিশেষ সংবাদ

কোটা আন্দোলনের ঘটনা প্রবাহ

আন্দোলনের ঘটনা প্রবাহ
print news

বিবিসি বাংলা: দেশ জুড়ে সহিংসতায় একশোরও বেশি মানুষের মৃত্যু, আরও বহু মানুষের আহত হওয়া, গাড়ি-ভবনে অগ্নিসংযোগ, জেল ভেঙ্গে কয়েদি পালানো, রোববার সুপ্রিম কোর্টে কোটা বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত রদ – সব মিলিয়ে গত দেড় মাস ধরে যা ঘটেছে, তারই একটা খতিয়ান রইল  পাঠকদের সামনে :

কোটা আন্দোলন ঘিরে এ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে:

কোটা আন্দোলন ঘিরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শুক্রবার মধ্যরাতে বাংলাদেশে যে কারফিউ জারি করা হয়েছে, তা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে দুপুর ১০টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত শিথিল থাকবে। এই সময়ে সেনা মোতায়েন থাকবে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকল অফিস, আদালত, ব্যাংক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম খোলা থাকবে। তবে কারফিউর কারণে নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে রোববার আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছে, তার আলোকে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশের সরকার।
প্রজ্ঞাপনকে চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে না মেনে সারা দেশে কারফিউ প্রত্যাহার, ইন্টারনেট সংযোগ চালু, বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও সারা দেশের সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্তত দেড়শ মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
টানা পাঁচদিন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার রাতে আবার সীমিত আকারে চালু হয়েছে।
সংঘাত ও সহিংসতার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত দুইদিনের অভিযানে সহস্রাধিক মানুষ গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে, যাদের মধ্যে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী রয়েছে।

সোমবার ঢাকার নাখালপাড়া থেকে মহাখালির দিকে রেললাইনের ওপর জড়ো হয়েছে একদল মানুষ। অন্যদিকে অবস্থান নিয়ে রয়েছে সেনা ও পুলিশের সদস্যরা
ছবির ক্যাপশান, সোমবার ঢাকার নাখালপাড়া থেকে মহাখালির দিকে রেললাইনের ওপর জড়ো হয়েছে একদল মানুষ। অন্যদিকে অবস্থান নিয়ে রয়েছে সেনা ও পুলিশের সদস্যরা

কোটা সংস্কারের দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে সংঘাতে রূপ নেয়। গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আগুন দেয়া হয়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ অনেক এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। নরসিংদী কারাগারে হামলা চালিয়ে আটশো বেশি বন্দী পালিয়ে যায়।
সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ও সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ হয়ে যায়। সব ধরনের যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হলে শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
কারফিউর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে সরকার জনগণকে চরম বিপদ ও দুর্ভোগের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে সেখানকার একটি আদালত। বাংলাদেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে।

২৩ জুলাই ২০২৪আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মামলায় ঢাকায় দুই দিনে আটক ১,১১৭ জন

কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও সহিংতার ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

দুই দিনে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকা থেকেই ১,১১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বা ডিএমপি।

ডিএমপি’র মিডিয়া শাখার ডিসি গোলাম ফারুক বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬০১ জনকে, বাকীদের গ্রেপ্তার রোববার”।

গ্রেপ্তারকৃতদের রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়।

বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা আকবর হোসেন ঢাকার সিএমএম আদালতে গিয়ে দেখতে পান, ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে আনা হচ্ছে।

তাদের অনেককে রিমান্ড না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। আবার গ্রেপ্তারকৃত কোন কোন ব্যক্তিকে রিমান্ডে নিচ্ছে পুলিশ।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় নানা অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে রোববার পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২৩ জুলাই ২০২৪ঢাকার কোন কোন এলাকায় ইন্টারনেট ফিরতে শুরু করেছে

ঢাকার কোন কোন এলাকায় ইন্টারনেট ফিরতে শুরু করেছে, তবে ইন্টারনেটের গতি অনেক ধীর।

মঙ্গলবার রাত ৮টার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ব্রডব্যান্ড সংযোগগুলো চালু হতে শুরু করে।

দুটি আইএসপি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা সার্ভিস চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাত ১০টা/১১টা নাগাদ পুরোপুরি ইন্টারনেট সেবা চালু করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা শুভাশীষ দে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, রাত আটটার পর থেকে ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে। তবে অনেক ধীরগতি রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছিলেন, রাত থেকেই সীমিত আকারে ইন্টারনেট চালু হবে। আপাতত ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই সেবা চালু হবে।
২৩ জুলাই ২০২৪রাতেই সচল হচ্ছে ইন্টারনেট

মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই সীমিত আকারে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হবে। আপাতত ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই সেবা চালু হবে।

তবে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলেও ফেইসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন মি. পলক।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সারাদিন মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। সেদিন রাত থেকে ব্রডব্যান্ড সংযোগও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে গত পাঁচদিন ধরে সারা দেশে ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

তখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, গুজব ও অপতথ্য বন্ধে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। আর, সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে দাবি করা হয়, “হামলা ও অগ্নিসংযোগের কারণে” বিটিআরসির স্থাপনা ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্রডব্যান্ড সংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
২৩ জুলাই ২০২৪চট্টগ্রাম এবং বরিশালে স্বল্প পরিসরে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে তৈরি হওয়া সহিংসতার কারণে কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর কারফিউ শিথিল থাকা সময়ে আজ মঙ্গলবার থেকে স্বল্প পরিসরে যাত্রীবাহী বাস চালানো শুরু করেছেন চট্টগ্রাম ও বরিশালের বাস মালিকরা।

এর পাশাপাশি প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় কক্সবাজার ও কুয়াকাটা থেকে পর্যটকদের বাসে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

মূলত ১৬ই জুলাই থেকেই ঢাকার সাথে অন্যান্য জেলার বাস ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শুক্রবার রাত থেকে জারি হওয়া কারফিউর কারণে সেটি আর শুরু করা সম্ভব হয়নি।

চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, প্রশাসনের সহায়তায় আজ থেকে কারফিউ শিথিল থাকার সময়ে বাস চলাচল শুরু করেছেন তারা।

“কয়েকদিন পুরো বন্ধ ছিলো। আজ অল্প কিছু যাত্রী এসেছেন কারফিউ শিথিল থাকার কারণে। তারা মনে করছেন, যে পাঁচ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে ঢাকায়, তার মধ্যেই তারা ঢাকায় পৌঁছে যেতে পারবেন,” বলছিলেন মি. চৌধুরী।

চট্টগ্রামে আজ বেলা ১২টার পর কারফিউ শিথিল হয়েছে, আর ঢাকায় কারফিউ বেলা একটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে। এরপর অল্প সংখ্যক যাত্রী নিয়ে কয়েকটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে বলে জানিয়েছেন মি. চৌধুরী।

অন্যদিকে, বরিশালের বাস সমিতির সভাপতি অসীম দেওয়ান জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাটি থেকেও ঢাকার উদ্দেশ্যে কয়েকটি বাস ছেড়েছে।

“এর বাইরে আঞ্চলিক রুটেও বাস চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করি কারফিউ আরেকটু শিথিল হলে বাস চলাচল আরও বাড়বে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন তিনি।
২৩ জুলাই ২০২৪প্রজ্ঞাপনকে চূড়ান্ত সমাধান মনে করে না আন্দোলনকারীরা, চার দফা আল্টিমেটাম

কোটা সংস্কার করে জারি করা সরকারি প্রজ্ঞাপনকে চুড়ান্ত সমাধান হিসেবে মনে করছে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

একই সাথে চার দফা দাবি জানিয়ে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই প্লাটফর্ম।

কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে আদেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার একটি সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে কোটা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এরপর নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল সংগঠকরা।

যেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও মাহিন সরকার।

এর আগে গত তিন দিনে তারা আলাদাভাবে বিভিন্ন কর্মসূচী ও দাবি দাওয়ার কথা জানালেও এই প্রথম মূল সংগঠকরা এক হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

এই সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছেন, কোটা আন্দোলন ঘিরে যে রক্তপাত ও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার দায় সরকার এড়াতে পারে না।

যে কারণে সারাদেশে কারফিউ প্রত্যাহার, ইন্টারনেট সংযোগ চালু, বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও সারা দেশের সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়।

এই চার দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

তারা বলছেন, বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে এই চার দাবি না মানা হলে তারা পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করবেন তারা।
২৩ জুলাই ২০২৪কারফিউর মেয়াদ বাড়লো, অফিসের জন্য নতুন সময়সূচী

কারফিউ’র মেয়াদ বাড়লো আরো দু’দিন। আগামীকাল বুধবার এবং বৃহস্পতিবারও কারফিউ বহাল থাকবে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এই দুদিন অফিস খোলা থাকবে, তবে নতুন সময়সূচী নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।

প্রায় পুরো সপ্তাহজুড়েই কারফিউর অধীনে থাকছে বাংলাদেশ। গত শুক্রবার রাত থেকে বাংলাদেশে কারফিউ জারি রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ অপু জানান, ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় কারফিউ’র সময়সীমার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজধানীসহ এই চার জেলায়, আগামী দুইদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাকি জেলাগুলোর ক্ষেত্রে কারফিউ শিথিলের সময়সীমার ব্যাপারে সেখানকার জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।

গত তিনদিন কারফিউর কারণে বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলেও বুধবার ও বৃহস্পতিবার অফিস খোলা থাকবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ শিবলি সাদিক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সকাল ১১টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত অফিস খোলা থাকবে। তবে ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতালের মতো জরুরি সেবা এই অফিস সময়সূচীর বাইরে থাকবে। আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবারের জন্য এই সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে।
২৩ জুলাই ২০২৪কারফিউ শিথিল থাকলে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম চলবে

সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগেই কারফিউ শিথিলের সময় নিজ নিজ অফিস সূচি অনুযায়ী বিচারিক কার্যক্রম চলবে। এছাড়া কারফিউ চলাকালীন সময় এবং শিথিলের সময়ও উভয় বিভাগের অফিস খোলা থাকবে।

তবে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে উচ্চ আদালত এবং অধস্তন আদালত এ ছুটির আওতায় বন্ধ থাকবে।

মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্টের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের আদেশক্রমে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

সুপ্রিমকোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “সাধারণত আপিল বিভাগে সকাল নয়টা থেকে দুপুর সোয়া একটা পর্যন্ত বিচারিক কার্যক্রম চলে। ওই সময়ের মধ্যে যদি কারফিউ শিথিল থাকে, তাহলে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম চলবে। অর্থাৎ যদি নয়টার আগে কারফিউ শিথিল হয় তবে আপিল বিভাগের সময় অনুযায়ী নয়টা থেকে বিচারিক কার্যক্রম চলবে। তবে, সোয়া একটার পরে শিথিল হলে কিন্তু কার্যক্রম চলবে না।”

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম চলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে কারফিউ শিথিল হলে এ বিভাগের বিচারিক কার্যক্রমও চলবে।

মি. ইসলাম জানান, “কারফিউ থাকুক বা না থাকুক সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব দাপ্তরিক কার্যক্রম চলবে। খোলা থাকবে সব অফিস।”

একইসাথে সব জেলায় সার্বক্ষণিক এক বা একাধিক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

বিচারিক আদালতগুলোতে নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আলোচনা করে বিচারিক কার্যক্রমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

২৩ জুলাই ২০২৪কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু ৭৯ জনের

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত কয়েকদিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ৭৯ জন ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এই আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সারা দেশে ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা সাংবাদিকদের জানান, গত কয়েকদিনে ঢাকা মেডিকেলে মারা যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ৭৯ জন। সোমবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৭৮ জন।

মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।

বিবিসি সংবাদদাতা তারেকুজ্জামান শিমুল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জানাচ্ছেন, মৃত ব্যক্তির নাম হৃদয় চন্দ্র।

এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার পর হাসপাতালটিতে এক হাজারেরও বেশি আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৯ জন। আর সংঘর্ষে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনার পরপরই মৃত ঘোষণা করা হয়েছে ৬০ জনকে।

দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া উত্তাল আন্দোলন এবং সহিংসতা দমনে সরকার কারফিউ জারি করার পর চারদিন পেরিয়ে গেছে। ঢাকা-সহ বিভিন্ন শহরে সেনাবাহিনীও নামানো হয়েছে। ঢাকায় কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেনা সদস্যরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে পাহারা দিচ্ছে। সাঁজোয়া গাড়িতে করে রাস্তায় টহলও দিচ্ছে সেনাদল।
২৩ জুলাই ২০২৪কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রজ্ঞাপন অনুমোদন করেছিলেন।

“সরকার সর্বোচ্চ আদালতের রায় প্রতিপালন করেছে। রায়ের কিছুই পরিবর্তনের ক্ষমতা আমাদের নেই। তারা যেভাবে দিয়েছেন আমরা সেভাবেই প্রতিপালন করেছি। এর বাইরে যাওয়ার কোন অভিপ্রায়ও আমাদের নেই,” এক সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন আইনমন্ত্রীআনিসুল হক।

এ সময় তার সাথে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতও উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সাধারণ বা মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।

এর আগে রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করে কোটা কেমন হতে পারে তার একটি নির্দেশনা দিয়েছিলো। তবে ওই রায়ে বলা হয়েছিলো যে প্রয়োজন হলে সরকার চাইলে এটিকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন কিংবা পরিমার্জন করতে পারবে।

গত ৫ই জুন হাইকোর্ট বিভাগ কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র বাতিল করে দিয়েছিলো। এর পরে কোটা সংস্কারের দাবিতে নতুন করে শিক্ষার্থী আন্দোলন গড়ে ওঠে।

এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ব্যাপক সহিংসতায় তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত দেড়শ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে সরকারি বেসরকারি বহু স্থাপনায়, যার মধ্যে মেট্রো রেলের স্টেশন, বিটিভি ভবন, সেতু ভবন ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজাও ছিলো।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার রাত থেকে সরকার দেশব্যাপী কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করেছে, যা এখনো বহাল আছে।

সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আরও যা বলেছেন

এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “আশা করি এখন আর নতুন করে কোন সমস্যা তৈরি করা হবে না এবং পরিস্থিতিরও আর অবনতি হবে না। তবে যদি অবনতির চেষ্টা কোন অপশক্তি করে সে বিষয়ে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো”।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন জনজীবনে যখন স্বস্তি আসবে তখন সরকার কারফিউ প্রত্যাহার করবে। “আপনারা এখন দেখতে পাচ্ছেন যে স্বস্তি যতই ফিরে আসছে ততই কারফিউর মেয়াদ কমিয়ে আনা হচ্ছে”।

আন্দোলনকারীরা নতুন করে দেয়া দাবিগুলো না মানলে আবারো আন্দোলনে ফিরে যাবে বলে যে কথা বলেছে গণমাধ্যমে সে বিষয়ে মন্ত্রী বলেন,“মূলত এটা ছিলো কোটা বিরোধী আন্দোলন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে। আমি আহবান জানাবো যে ছাত্রছাত্রীরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছে সংস্কার চেয়ে এখন তাদেরও কর্তব্য আছে। এখন তাদের স্ব স্ব জায়গায় ফিরে পড়াশোনা করা উচিত”।

তিনি বলেন সরকার ধৈর্য ধরেছে কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এ ষড়যন্ত্রমোকাবেলার যথেষ্ট শক্তি সরকারের আছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে নাগাদ খুলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন “আমরা যত তাড়াতাড়ি শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে সচেষ্ট। সেজন্য আপনারা আশা করতে পারেন যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে যাবে”।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মি. হক বলেন সহিংসতার বিষয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

“সহিংসতা যে হয়েছে এতে সাধারণ শিক্ষার্থী যারা আহত হয়েছে তাদের চিকিৎসার বিষয়ে সরকার দেখভাল করবে। সাধারণ ছাত্রছাত্রী যারা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছেন তাদের ব্যাপারে মামলা হওয়ার তথ্য দিলে সেটি আমরা দেখবো। শিক্ষার পরিবেশ ও নিরাপত্তা সরকার তৈরি করবে”।

কোটা বিষয়ে এ পর্যন্ত যা ঘটেছে তার বর্ণনা দিয়ে আনিসুল হক বলেন, কোটা বিরোধীরা যখন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলো তার সুযোগ নিয়ে কিছু মহল সহিংসতা করেছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।

প্রসঙ্গত, সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি, আধাসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন প্রজ্ঞাপন কার্যকর হবে।

২৩ জুলাই ২০২৪সব গ্রেডেই মেধায় নিয়োগ ৯৩ শতাংশ, প্রজ্ঞাপন আজ

বাংলাদেশে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডেই ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের বিধান রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সোমবার রাতে প্রজ্ঞাপনটির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হতে পারে।

এর আগে, রোববার কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছিল আপিল বিভাগ।

একইসঙ্গে, সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধা এবং সাত শতাংশ কোটায় নিয়োগের আদেশ দেয়া হয়।

অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারিরও নির্দেশ দেয় আদালত।

আপিল বিভাগের ওই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রজ্ঞাপন জারি করার প্রস্তুতি নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের আগে সরকারি চাকরিতে প্রায় ৫৬ শতাংশই বিভিন্ন কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হতো। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংক্ষুব্ধরা আদালতে রিট করলে গত পাঁচই জুন কোটা পুনর্বহাল করে রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

এরপর কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা পুনরায় আন্দোলন শুরু করে। সে আন্দোলন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গড়ায় এক পর্যায়ে এবং সোমবার পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ১৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
২৩ জুলাই ২০২৪ঢাকায় ফিরছেন কক্সবাজারে আটকে পড়া পর্যটকরা

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে ঢাকায় ফিরছেন কক্সবাজারে আটকে পড়া পর্যটকরা। মঙ্গলবার সকালে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ. মনজুর মোর্শেদ বিবিসিকে বলেছেন, কক্সবাজার থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে সকালে মোট ৬৮টি বাসে করে পর্যটকেরা ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া সংঘাত-সহিংসতার কারণে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন প্রায় চার হাজার পর্যটক।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মি. মোর্শেদ বলেছেন, মঙ্গলবার কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা একেকটি বাসে আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ জন করে যাত্রী রয়েছেন।

“দিনের আলো থাকতে থাকতে তাদেরকে ঢাকায় পৌঁছে দেবে সেনাবাহিনী,” তিনি বলেন।

তিনি জানিয়েছেন, এখনও পাঁচ শতাধিক পর্যটক কক্সবাজারে আটকে আছেন। তাদেরকেও পর্যায়ক্রমে তাদের গন্তব্যে পাঠানো হবে।

“তবে কেউ যদি চান, তবে তিনি কারফিউ জারি থাকা অবস্থায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়ও ঢাকায় ফিরতে পারবেন” জানিয়েছেন মি. মোর্শেদ।

“সেক্ষেত্রে তার কাছে অবশ্যই কারফিউ পাস থাকতে হবে।”

২৩ জুলাই ২০২৪ঢাকার আট থানার ওসি বদলি

ঢাকা মহানগরীর আটটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসিকে বদলি করা হয়েছে।

থানাগুলো হলো – ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর, কাফরুল, দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, দারুস সালাম, তুরাগ এবং কামরাঙ্গীরচর।

এমন এক সময় এসব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বদলি করা হলো, যখন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার ওইসব এলাকায় বেশ সংঘাত-সহিংসতা হতে দেখা গেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই ঢাকার এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে।
২৩ জুলাই ২০২৪নরসিংদীতে আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হয়েছেন একশোর মত জেল পালানো কয়েদি

নরসিংদীর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে প্রায় একশত জেল পালানো কয়েদি আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হয়েছেন।

সেখানকার আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ বিবিসি জানিয়েছেন, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন ভাবে তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণের আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।

পরে আইনজীবী সমিতি এসব কয়েদিদের সঙ্গে সমন্বয় করে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে আত্মসমর্পণের উদ্যোগ নিয়েছেন।

নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট কাজী নাজমুল বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের সকলেই কোন না কোন মামলার আসামী। সেই সূত্রে তারা নিজ নিজ মামলার আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিলেন।”

“জেলা প্রশাসন এবং আদালতের সঙ্গে সমন্বয় করেছি আমরা। আজকের মধ্যেই এসব কয়েদি আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। এরপর তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হবে।”

নরসিংদীর জেল সুপার কামরুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “বিষয়টি এখন আদালতের ব্যাপার।”
২৩ জুলাই ২০২৪বিভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কারফিউ শিথিল

সারাদেশে মঙ্গলবার বিভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কারফিউ শিথিল করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।

এর আগে সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিফিং করে এভাবে কারফিউ শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলার কারফিউ শিথিল করার কথা ঘোষণা করা হয়।

এর মধ্যে ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে দুপুর একটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

এছাড়া একেক জেলায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কারফিউ শিথিলের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর প্রশাসন পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সময় ঠিক করছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক তোফায়েল আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, চট্টগ্রাম জেলায় সকাল ১১টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকেরা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ‘কোর কমিটি’র সাথে আলোচনার পর কারফিউ শিথিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, “পরবর্তী আর কোন সিদ্ধান্ত না আসলে কারফিউ চারটার পরে আবার জারি থাকবে।”

এদিকে, স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, বেলা ১১টায় কারফিউ শিথিলের পর ঢাকা – চট্টগ্রাম রুটে যাত্রীবাহী কিছু বাস চলাচল শুরু করেছে।

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ বলেছেন, তার বিভাগে বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

এছাড়া, কক্সবাজার, কুমিল্লা, চাঁদপুরে বেলা ১২টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

এদিকে, ফেনি জেলায় সকাল ১১টা থেকে কারফিউ শিথিল হয়েছে, বিকাল চারটা পর্যন্ত শিথিলের পর আবার বজায় থাকবে।

ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলায় বেলা ১২টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিলের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ, পিরোজপুর, রাজশাহী, মুন্সীগঞ্জ, মাগুরা, ভোলা, নীলফামারী, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে কারফিউ।

কারফিউ শিথিলের পর রাজশাহী থেকেও কিছু যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।

পাবনায় দুপুর দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল হয়েছে।

রংপুরে দুপুর দুইটা থকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শিথিল থাকবে কারফিউ।

বাংলাদেশে পড়াশোনা করতেন মহিমা, চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে বহু নেপালি ছাত্র-ছাত্রীর মতো তিনিও দেশে ফিরে গেছেন। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মহিমা কথা বলছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। বাংলাদেশে প্রায় তিন হাজার নেপালি ছাত্র-ছাত্রী আছেন। নেপাল সরকার বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের দেশের নাগরিকদের জন্য একটি ভ্রমণ নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে তাদের জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বের নানা দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন। বিভিন্ন দেশের বড় বড় শহরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছেন বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলির প্রতিবাদ জানিয়ে। গতকাল লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে বড় বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে যোগ দেন কয়েক হাজার বাংলাদেশি। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পার্লামেন্ট ভবন পর্যন্ত যান।
২৩ জুলাই ২০২৪দেড় শতাধিক মামলায় হাজারের বেশি গ্রেফতার

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেড়শোর বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতারের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ এবং র‍্যাব।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই ৩০টিই মামলায় ৫১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মুনিম ফেরদৌস বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন গত তিন দিনে সারাদেশে ১২৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

এর মধ্যে কেবল সোমবারই ৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি।

গ্রেফতারকৃতদের একটা বড় অংশই বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যাচ্ছে।

তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জহিরউদ্দীন স্বপন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী সহ অনেকে।

নেতা-কর্মীদের এভাবে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

হেনস্থা করার জন্যই কাল্পনিক অভিযোগ তুলে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

কারফিউর চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি

বাংলাদেশে গত শনিবার কারফিউ জারির পর আজ মঙ্গলবার টানা চতুর্থদিনের মতো তা অব্যাহত আছে। সেই সঙ্গে সরকার আজ মঙ্গলবারও সাধারণ ছুটি থাকবে বলে গতকাল ঘোষণা দিয়েছিল। সারাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ যে খবর আমরা পাচ্ছি:

কারফিউর চতুর্থ দিনে মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকার সড়কে মানুষ এবং যানবাহনের চলাচল কিছুটা বেড়েছে, সেই সাথে ঢাকার সড়কে সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশের টহল দেখা গেছে
·আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে দেশজুড়ে গ্রেপ্তার হাজার ছাড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ এবং র‍্যাব। তারা এটিকে ‘সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে‌‌’ অভিযান বলে বর্ণনা করছে।
·গত কয়েকদিনের সংঘাত-সহিংসতায় সোমবার পর্যন্ত অন্তত ১৪১ জননিহত হয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে এখনো নতুন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
·টানা চারদিন ধরে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে, কবে ফিরবে, কেউ জানাতে পারছেনা
·আজ সরকারের চারমন্ত্রী একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে কথা রয়েছে।

২৩ জুলাই ২০২৪দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করবেন সরকারের চার মন্ত্রী

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের রায় সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন সরকারের চার মন্ত্রী। দুপুর আড়াইটায় গুলশানে আইনমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এই সংবাদ সম্মেলন হবে। এতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. আলী আরাফাত উপস্থিত থাকবেন। এর আগে, সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রজ্ঞাপনের অনুমোদন দিয়েছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে মঙ্গলবার প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সব গ্রেডের ক্ষেত্রেই সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগের বিষয়টি প্রজ্ঞাপনে রাখা হবে। আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, শুধুমাত্র সাত শতাংশ কোটায় নিয়োগ করা হবে। এর আগে, রোববার রায়ের দিন আইনজীবীরা বলেছিলেন, ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের ক্ষেত্রে এ রায় কার্যকর হবে।

২২শে জুলাই, সোমবার:

কমপ্লিট শাটডাউন ৪৮ ঘণ্‌টার জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এই সময়ের মধ্যে তারা চার দফা দাবির বাস্তবায়ন দেখার জন্য সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছে।
সাধারণ ছুটির মেয়াদ মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা করা হয়েছে।
কারফিউও বাড়ানো হয়েছে এদিন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৩১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

২১শে জুলাই, রোববার:

কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের শুনানি, কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল। মেধা ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ১ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ কোটা ১ শতাংশ নির্ধারণের আদেশ। তবে সরকার চাইলে বদলানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
কারফিউ অব্যাহত, সাধারণ ছুটির আওতায় স্বায়ত্বশাসিত, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পোশাক কারখানা-সহ সব কলকারখানা বন্ধ।

২০শে জুলাই, শনিবার:

কারফিউর মধ্যেও ঢাকা, সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘাত। বহু বিক্ষোভকারী হতাহত।
আইনমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও তথ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়কারীর বৈঠক। আন্দোলনকারীদের আট দফা দাবি পেশ। এই বৈঠক নিয়ে সমন্বয়কদের মধ্যে মতভেদ।
শনিবার সহিংসতায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ২৬ জন নিহত।

১৯শে জুলাই, শুক্রবার:

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ, পরিস্থিতি থমথমে। মেট্রোরেল স্টেশন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজা, মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতার। ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় সর্বক্ষেত্রে স্থবিরতা। রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি।
সারা দেশে সংঘর্ষে অন্তত ৫৬ জন নিহত।

১৮ই জুলাই, বৃহস্পতিবার:

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত। বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগ। মেরুল বাড্ডায় পুলিশ অবরুদ্ধ, পরে হেলিকপ্টারে উদ্ধার।
পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘাত সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ বিক্ষোভকারী হতাহত। ৫৬ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ কোটার প্রস্তাব আওয়ামী লীগের।
আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসতে সরকার রাজি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। আলোচনার প্রস্তাব নাকচ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। রাত ৯টা থেকে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ।
সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন নিহত।

১৭ই জুলাই, বুধবার:

পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ, জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। শীর্ষ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারনের আহ্বান।

১৬ই জুলাই, মঙ্গলবার:

আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের। সড়ক অবরোধ, সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা, ছয়জন নিহত।

১৫ই জুলাই, সোমবার:

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘাত।

১৪ই জুলাই, রোববার:

কোটা পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের জের ধরে রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

১০ই জুলাই, বুধবার:

কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের আদেশের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা, ৭ই আগস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য।

৯ই জুলাই, মঙ্গলবার:

আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘাত।

৭ই জুলাই, রোববার:

সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি।

১লা জুলাই, সোমবার:

শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলন শুরু।
সারা বাংলাদেশ জুড়ে সহিংসতায় মারা গেছে একশোরও বেশি মানুষ – প্রতীকী ছবি

ছবির উৎস, Getty Images
ছবির ক্যাপশান, সারা বাংলাদেশ জুড়ে সহিংসতায় মারা গেছে একশোরও বেশি মানুষ – প্রতীকী ছবি

৯ই জুন, রোববার:

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন।

৬ই জুন, বৃহষ্পতিবার:

কোটা বাতিল করে আদালতের রায়ের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

৫ই জুন, বুধবার:

কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়।

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *