বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল,সহসাই ঘুরছে না চাকা


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। এতে সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দেশব্যাপী সংঘাত, সংঘর্ষের পর এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এখনই ট্রেন চালাবে না বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হবে সেটিও বলছেন না কর্মকর্তারা। ঢাকাসহ সারা দেশে সীমিত পরিসরে বাস চলাচল করছে। বাসমালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, কারফিউ শিথিলতার সঙ্গে মিল রেখে বাস চালানো হবে। এদিকে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্ধ রয়েছে মেট্রোরেল চলাচল। তবে কবে নাগাদ মেট্রোরেল চালু হতে পারে সেটি আরও কয়েকদিন পর জানা যাবে বলে জানিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) একটি সূত্র।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে ১৮ই জুলাই সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়। এতে টিকিট রিফান্ড ও বিভিন্ন জায়গায় হামলায় রেলের ২২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। গতকাল রেলভবনে তিনি বলেন, সারা দেশে কয়েকটি জায়গায় ট্রেনে ও স্টেশনে রাখা বিভিন্ন যন্ত্রাংশে হামলা করা হয়েছে।
এই কারণে এখনো ট্রেন চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তিনি জানান, পরিস্থিতি বুঝে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, রেলের ইঞ্জিন ও কোচের সংখ্যা কম। তারপরও রেল সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে। এখন এই মুহূর্তে ট্রেন পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করেই চলাচল করবে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা হয়েছে। রেল চাচ্ছে না যে, এমন কিছু হোক যাতে আবার আগুনের মধ্যে ঠেলে দিতে হয়। প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করবে রেল চলাচল। রেলমন্ত্রী বলেন, ট্রেন না চলার কারণে টিকিট রিফান্ড করতে হচ্ছে। এটা সবচেয়ে বড় ক্ষতি। এখন পর্যন্ত ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার বেশি টিকিট রিফান্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল মিলিয়ে রেলের মোট ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা।
কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, এখনো রেল চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। কবে নাগাদ চালানো হবে সেটি পরে জানানো হবে। এদিকে কারফিউ শিথিলতার মধ্যে ঢাকায় সীমিত পরিসরে চলাচল করছে বাস। রাজধানী থেকেও দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে। রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে এসব বাস বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছাড়ছে। এছাড়া ঢাকার টার্মিনালেও জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে বাস আসছে। তবে দূরপাল্লায় যাত্রীর চাপ কিছুটা কম। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, কারফিউ শিথিলতার সঙ্গে ঢাকার মধ্যে ও সারা দেশে বাস চলবে। দু’দিন যেভাবে চলেছে। আপাতত সেভাবেই চালানো হবে। কারফিউর শিথিলের সময় বাড়ানো হলে গাড়ি চলাচলও বাড়িয়ে দেয়া হবে। সরজমিন দেখা যায়, ঢাকায় বাস চলাচল করলেও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কিছুটা কম। সড়কে অফিসগামী যাত্রীদের চাপও দেখা গেছে। অনেকে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে গেছেন। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘসময় যানজটও দেখা যায়। বিকালে অফিস ছুটির সময়ে এই যানজটের মাত্রা বাড়ে। মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকায় শাহবাগ, বাংলামোটর, কাওরানবাজার এলাকায় যানজট কিছুটা বেশি ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাচলে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ মেট্রোরেলের স্টেশন। এতে গত শনিবার থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে মেট্রোরেল চলাচল। এই দু’টি স্টেশন ঠিক হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল সূত্র। তবে এই দু’টি স্টেশন ছাড়া অন্য স্টেশনগুলোতে কবে নাগাদ মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে সেটি আরও কয়েকদিন পর জানা যাবে। মেট্রোরেল চালানোর প্রসঙ্গে ডিএমটিসিএল কোম্পানির এক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, এখনো পর্যবেক্ষণ চলছে। সময়টা এখনো বলা যাচ্ছে না। কারিগরি দল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। তারা চূড়ান্ত বক্তব্য দেননি। আমরা তাদের চূড়ান্ত বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছি। দু’টি স্টেশন ছাড়া বা বাকিগুলো দ্রুতই চালু করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি স্টেশন চালু হতে অনেক সময় লাগবে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়