ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলন কীভাবে সহিংস হয়ে উঠল—তা অনুসন্ধানে নেমেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ জন্য একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন এবং আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল (সিপিএইচ) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, সংঘটিত সহিংসতার বাস্তব অবস্থা অনুসন্ধান ও নিরূপণে কমিশন ইতিমধ্যে কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) (জেলা ও দায়রা জজ) মো. আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি বিস্তৃত পরিসরে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের তথ্য-সংশ্লেষ পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ করবে। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলন কীভাবে ক্রমে নাশকতার সৃষ্টি করেছে—সে বিষয় অনুসন্ধান ও উদ্ঘাটন এবং সংঘাত মোকাবিলায় বর্তমান সময়ে করণীয় বিষয়াদিও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকবে।
তিনি জানান, কমিটি গত ২১ জুলাই গঠিত হয়েছে এবং ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
মানবাধিকার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ নম্বরের মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করে। এরপর বেলা ৩টায় সহিংসতায় আহত শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল (সিপিএইচ) পরিদর্শন করেন। এ সময় কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, সচিব সেবাষ্টিন রেমা ও পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্বৃত্তরা স্টেশনে উন্মত্ততার সঙ্গে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে জনসাধারণের সম্পদ বিনষ্ট করেছে। এ ধরনের হামলা নৃশংস এবং এতে অতি মূল্যবান সম্পদের অবর্ণনীয় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মেট্রোরেল জনজীবনে স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য তৈরি করেছে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাক্ষর বহন করে। দুটি স্টেশনে হামলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জনজীবনে চরম দুর্ভোগ বয়ে এনেছে এবং দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে। সাধারণ জনগণ যারা এর সুফল ভোগ করছিল তাঁদের জীবনযাত্রার অধিকার হরণ করা হয়েছে। এ ধরনের কাজ শিক্ষার্থীরা করেছে কিনা তা এখন বড় প্রশ্ন। কারণ শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন। যারা সম্পদ বিনষ্ট করেছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে, কোনো নিরীহ ব্যক্তি যাতে কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনকালে কমিশনের প্রতিনিধিদল চিকিৎসক ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে মানবাধিকার চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা হতাহতদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নিয়েছি। সহিংসতায় আক্রান্ত রোগীর ধরন ও কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছি। হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী আক্রান্ত ২৪০ জনের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাইরে যারা আছেন তাদের মধ্যে যুবক ও মধ্যবয়সী বিভিন্ন ব্যক্তি রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে, আক্রান্ত শিক্ষার্থী ও অন্যান্য রোগীদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।’
পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদল পুলিশ সদস্যদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন এবং পরিদর্শন শেষে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, প্রত্যেকের জীবন ধারণের অধিকার রয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য নির্মমতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন, যা অত্যন্ত মর্মপীড়াদায়ক ৷ আমরা আহতদের শরীরে নির্মমভাবে প্রহারের চিহ্ন, রড দিয়ে মাথায় আঘাত, বুলেটের আঘাত ও সেলাই দেখেছি। ইতিমধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন আহ্বান জানায়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত