বাংলাদেশ ঢাকা

দশদিন পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু, চলবে না ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটক

ইন্টারনেট চালু
print news

বিবিসি বাংলা : কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলনের বিক্ষোভ ও সহিংসতা ঘিরে দশদিন বন্ধ থাকার পর সারাদেশে চালু হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। রোববার বিকেলে তিনটায় এই সেবা চালু হয়।

এর আগে সকালে ১১টায় বিটিআরসির ভবনে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ অ্যামটবের সাথে বৈঠক শেষে মোবাইল ইন্টারনেট চালুর ঘোষণা দেন তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

মোবাইল ইন্টারনেট চালুর পর আগামী তিন দিনের জন্য সব গ্রাহককে পাঁচ জিবি ইন্টারনেট বিনামূল্যে দেওয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।বিকেল তিনটার পর বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির গ্রাহকেরা নিজ নিজ ফোনে মোবাইল ইন্টারনেট চালু করতে পারছেন।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়।পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে পরদিন রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

বুধবার মোবাইল ইন্টারনেট যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তারপরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছিলেন, সহিংস পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ওই পদক্ষেপ নেন তারা।এরপর বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে অগ্নিসংযোগের পর সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে যায়।

তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মহাখালীর ডেটা সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের কারণে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ।একটানা মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হওয়ার পর এ নিয়ে বেশ বিপাকে পড়তে হয় গ্রাহকদের। দেশে এ নিয়ে নানা সমালোচনা হলে গত মঙ্গলবার রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা।

গত কয়েকদিনে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ১৮ই জুলাই বলেছিলেন, “সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে।”পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুত সংযোগ স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

তবে পরে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১৮ই জুলাই রাতে মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের ডাটা সেন্টার আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হয়েছে।যদিও ১৮ই জুলাই একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানিরএকজন উর্ধতন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন, সরকারের নির্দেশে তারা মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখেছেন।এরপরে ২৩শে জুলাই প্রথমে সীমিত আকারে, পরে ২৪শে জুলাই সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়।

গত শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী মি. পলক বলেন, সরকার দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করেনি, ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে অপারেটরের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএস কোম্পানি বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় এবং বিটিআরসি ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিতি ছিলেন।মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক, টিকটকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ থাকবে বলে এই অনুষ্ঠানে জানান প্রতিমন্ত্রী।রোববার বিকেলে মোবাইল ইন্টারনেট চালুর পর ফেসবুক, ম্যাসেনজার কিংবা টিকটক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারেননি ব্যবহারকারীরা।তবে, এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভিপিএন বা প্রক্সি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তারা ফেসবুক বা অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন।ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালুর পর থেকেই বাংলাদেশে বন্ধ রয়েছে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ ও সংঘাতের এক পর্যায়ে সরকার পুরোপুরি ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন ব্যবসায়ীরা।এছাড়া অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল টানা পাঁচ দিন।বিভিন্ন গ্রাহক সেবা যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টিকেট ক্রয় বিক্রয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা রাইড শেয়ারিংয়ের মতো নিত্য ব্যবহারের বিভিন্ন অ্যাপসগুলো।রোববার থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার পাঠাও, উবার কিংবা অন্যান্য অ্যাপসগুলোও চালু হতে দেখা গেছে।এছাড়া বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যেসব ব্যবসা রয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে বন্ধ হয়ে যায় তাদের কার্যক্রম।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা বেসিসের দাবি, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে গত কয়েক দিনে এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচশ কোটি টাকা।

বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ তখন জানিয়েছিলেন, ইন্টারনেট না থাকায় প্রতিদিন ৮০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। অর্থাৎ এ খাতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *