ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : গত ১৫ বছরের অর্থনীতি সম্পর্কিত শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও আর্থিক কারচুপি বিষয়ে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে প্রতি বছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে, যার ফলে মোট পাচারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪০ বিলিয়ন ডলার। অথচ, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ১৭ বিলিয়ন ডলার, যা এই পরিসংখ্যানের তুলনায় অত্যন্ত কম।এছাড়া, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-এমপিদের পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবী আমলারা একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে এই অর্থ লুটে নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচার করা অর্থ দিয়ে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা যুক্তরাজ্যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কিনেছেন, যা দেশবাসীর কাছে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।শ্বেতপত্রের তথ্যানুযায়ী, গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে, তা দিয়ে অন্তত ৮৫টি পদ্মা সেতু অথবা ৭৭টি মেট্রোরেল নির্মাণ করা সম্ভব ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সিআইডি, দুদক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু করেছে। সেই সঙ্গে অর্থ পাচারকারীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গেও এ বিষয়ে কাজ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তিন মাসের তদন্ত শেষে শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান ৪০০ পৃষ্ঠার একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস বরাবর জমা দিয়েছেন, যাতে আওয়ামিলীগ সরকারের গত ১৫ বছরের দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।এই শ্বেতপত্রকে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এটি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, কারণ এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে গুরুত্ব বহন করে। জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা এর মধ্যেই স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।কমিটি আরও জানায়, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে মোট ৭ লাখ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থ লুটপাট করেছে সরকারি আমলারা।এই প্রতিবেদনের তথ্য সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এসেছে এবং এটি দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আরও তীব্রভাবে সামনে এনেছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত