বাংলাদেশ রংপুর শিক্ষা সংবাদ

শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলেন বৈষম্যবিরোধী নেতা-কর্মীরা

521 67988946621c6
print news

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক  : রংপুরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদের নামে কোচিং সেন্টার খোলার ঘটনায় এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের একদল নেতা–কর্মী। শনিবার রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে রংপুর নগরের শাপলা মোড়ের ভাড়া বাসা থেকে তুলে আনে কোতোয়ালি থানা–পুলিশ।

আটক হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম হাসান আলী। তিনি রংপুর মডেল কলেজের বাংলা বিভাগে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। তাঁকে কোতোয়ালি থানা হাজতে রাখা হয়েছে।
আটক হওয়া শিক্ষার্থীর পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে রফিক আহমেদ রাজ নামে একজন শিক্ষক ফেসবুকের একটি ভিডিওতে রংপুর নগরের শাপলা মোড়ে স্পোকেন ইংলিশ শেখাতে ‘শহীদ আবু সাঈদ কোচিং সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন। হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই কোচিং সেন্টারের জন্য ফেসবুকে পেজ খুলে দিয়েছেন।

শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শাপলা চত্বর এলাকায় হাসান আলীর ভাড়া বাসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের একদল নেতা–কর্মী যান। এ সময় তাঁদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে হাসান আলীকে পুলিশে সোপর্দ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা–কর্মীরা।

রাত পৌনে ১১টার দিকে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে দেখা যায়, হাসান আলীকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর স্ত্রী শারমিন খাতুন। আর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা–কর্মী বসে আছেন।

এ সময় শারমিন খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষক রফিক আহমেদের কাছে তাঁর স্বামী ইংরেজি শিখতেন। তিনি (রফিক) একটি কোচিং সেন্টার খুলতে চেয়েছিলেন। তাই হাসান আলীর কাছে কোচিংয়ের জন্য ফেসবুকে পেজ খুলে দিতে বলেছিলেন। ওদের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের) ধারণা, কোচিং সেন্টারের ওই পেজ থেকে আমরা লাখ লাখ টাকা আয় করি।

শারমিন আরও বলেন, তাঁর স্বামীকে জোর করে থানায় এনে হাজতে রাখা হয়েছে। তাঁর স্বামীর কোনো দোষ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আবু সাঈদের নাম ভাঙিয়ে কেউ ব্যবসা করলে আমরা সেটার বিরোধী। ওখানে কোনো একটা ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। আমার কাছে বেশি বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে।’

অভিযোগ ছাড়া একজন শিক্ষার্থীকে কেন তুলে নিয়ে আসা হলো—জানতে চাইলে রংপুর নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁকে থানায় আনা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে হাজতে রাখা হয়েছে।

এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে তুলে এনে হাজতে আটকে রাখার ঘটনাকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলছেন রংপুরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে রংপুর দায়রা ও জজ আদালতের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে না। এ ধরনের গ্রেপ্তার আইনের অপব্যবহার ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
Emon Khan

Emon Khan

About Author