আলম রায়হান:
যে কারো মৃত্যু দিবসে ব্যবহার করার জন্য কিছু শব্দ ও বাক্য সংরক্ষিত থাকে। যা আজ ২৭ জুন সাংবাদিক লিটন বাশারের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তার ঘনিষ্ঠ ও পরিচিত জনরা ২০১৭ সালের ২৭ জুন দিবসটি প্রতিবছরই বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেন। এবং আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তায় প্রচলিত বাছাবাছা শব্দগুচ্ছ ও বাক্য ব্যবহৃত করবেন সাধারণ নিয়মেই। এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি একটি বিষয় খেয়াল করেছি, লিটন বাশার লাগাতরভাবেই স্মরণে আছে। সাহসী নিউজ ও সাংবাদিকদের কোন সমস্যার বিষয় এলেই লিটন বাশার প্রসঙ্গ চলে আসে। আর এটি কেবল সাংবাদিকদের মধ্যে নয়, বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর মানুষের মধ্যেও এই প্রবনতা লক্ষ করেছি। মাঝেমাঝে বিস্মিত হই, স্বল্প সময়ের জীবনে একজন সাংবাদিকের এতো ইতিবাচক ইমেজ কীভাবে তৈরী হয়! যেমন বিস্মিত হই, বরিশালে শওকত হোসেন হীরন স্মরণী হবার প্রবল ধারায়ও।
প্রসঙ্গত ২০১৭ সালে অকালে না ফেরার দেশে চলে যান লিটন বাশার এবং একই বছর থেকে আমি বরিশালমুখী হয়েছি, বাবার অসুস্থতা এবং অন্যান্য কারণে। এবং সঙ্গত কারনেই শুরুর দিকে বেশী মিশেছি সাংবাদিকদের সাথে। শওকত হোসেন হীরন ও লিটন বাশার বিশেষভাবে আলোচনায় থাকার বিষয়টি শুরু থেকেই আমাকে বিস্মিত করেছে। এবং ঘটনা চক্রে দুজনই আমার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবে শওকত হোসেন হিরনের বিষয়ে কম জানি। কারণ তার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় তিনি বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে। ১৯৯১ সাল, তখন বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম সরকার ক্ষমতায়। অধ্যক্ষ ইউনুস খান শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী। তাকেও চিনতাম না। সেই সময় আমি সাপ্তাহিক সুগন্ধার সম্পাদক, একপ্রকার দন্ডমুন্ডের কর্তা। শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী হিসেবে অধ্যক্ষ ইউনুস খানের বিষয়ে সুগন্ধায় একটি খবর ছাপা হয়। যে ধরনের সংবাদ ছাপা হওয়া উচিত নয়। এ ঘটনায় প্রতিমন্ত্রী গুণধর এপিএস এডভোকেট আলাল বাদী হয়ে বরিশালে একটি মামলা দায়ের করেন। অবশ্য, সেই সময়ে প্রতিমন্ত্রীর এপিএস তো নস্যি, মন্ত্রী নিজে মামলা করলেও তা গোণায় ধরার অবস্থায় সুগন্ধা টীম ছিলো না। তবে শুধু গোণায় ধরা নয়, গলায় আটকে গিয়েছিলো এপিএস আলালের মামলা! কারণ তখন পত্রিকার মালিক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হুসাইন মনোনয়নের জন্য কাঙ্গালের মতো বিএনপির পিছনে টাকার বস্তা নিয়ে ঘোরেন। ’৯১এর নির্বাচনে বঞ্চনা এবং অর্থ গচ্চার পরও আশা ছাড়েননি সৈয়দ মোয়াজ্জেম। ফলে ইউনুস খানের সঙ্গে ঝামেলা মিটেয়ে ফেলার আকুতি ছিলো মালিকের তরফ থেকে। কিন্তু তিনি চাপ দেননি, রাগ দেখাবার বিষয়টি তো অনেক পরের বিষয়। তখন অন্যদের মতো মালিকরাও সাংবাদিকদের সমিহ করতেন।
এদিকে ১৯৭৮ সালে ঢাকায় চলে আসার পর বরিশালের তেমন কাউকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না। এ অবস্থায় স্মরণাপন্ন হলাম আমার জাসদীয় বড় ভাই এডভোকেড সৈয়দ দুলালের। তিনি আদালতে আমার উকিল। কিন্তু এই মামলায় তাকে পয়সা দিতে পারিনি। অবশ্য সেই মামলাকে পুজি করে তৎকালীন দুই শিশু উকিল আমার কাছ থেকে ১৫০০ টাকা খসিয়েছিলেন। এ বিষয়টিকে গেদু চাচার খোলা চিঠিতে উল্লেখ করার কারণে এরা আমাকে আবার মামলার প্যাঁচে ফেলার আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু পাত্তা নেইনি। কারণ মালিক নিরাপদে ছিলেন। সেই দুই ‘ছাও’ উকিলের মধ্যে একজন বরিশালে বিশাল মহিরুহু হয়েছেন। হয়েছেন, বলিশাল আওয়ামী লীগের বিশাল নীতিবান নেতা। তিনি মেয়র শওকত হোসেন হিরনেরও ঘনিষ্ঠজনের আসনটি দখল করতে পেরছিলেন। কিন্তু সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সময়ে মোটেই হালে পানি পাননি। অনেকটা রাজনৈতিক এতিমে পরিনত হয়েছিলেন। যে দৈন্য দশা তার এখনো কাটেনি। আমাকে মোচড় দিয়ে টাকা নেবার বিষয়ে একবার বরিশাল ক্লাবে তার অই উকিলের উপস্থিতিতেই শওকত হোসেন হিরনকে বলেছিলাম, আমি কিন্তু ‘…ভাইর’ কাছে ১৫০০ টাকা পাই। এ সময় নিশ্চুপ ছিলেন উল্লেখিত উকিল।
আগেই বলেছি, অধ্যক্ষ ইউনুস খানের এপিএস-এর মামলায় পড়ে প্রথম দিকে যোগাযোগ করলাম আমার জাসদীয় বড় ভাই এডভোকেড দুলাল, রাজনীতিক কাম সাংবাদিক এডভোকেড সৈয়দ ইকবাল এবং সাংবাদিক মাইনুল হাসানের সঙ্গে। কিন্তু কোন রাজনীতিককে কানেক্ট করার সূত্র পাচ্ছিলাম না। আর যে কারনেই হোক, ‘বরিশালের পল্লীতে ব্লাক ড্রাগন’ শিরোনামের রিপোর্টের কারণে তুঙ্গে থাকা ইসমাইল হোসেন নেগাবানের বিষয়টি আমার মাথায় ছিলো না। এ সময় সাংবাদিক মাহমুদ চৌধুরী বললো, মামা চলেন হিরন ভাইর কাছে যাই। আমি বললাম, আমি তো তাকে চিনি না। মাহমুদ বললো, আপনার চিনতে হবে না, সে আপনাকে অবশ্যই চেনে, চলেন! এবং মাহমুদ চৌধুরীর কথাই সত্য প্রমানিত হলো। সেই থেকে শওকত হোসেন হীরনের সঙ্গে আমৃত্যু ঘনিষ্ঠতা।
প্রসঙ্গত,১৯৮৮ সালে হেভিওয়েট প্রার্থীকে পরাজিত করে ২২ বছর বয়সে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন শওকত হোসেন হিরণ। তার সঙ্গে ১৯৯১ সালে আমার প্রথম যখন দেখা হয় তখন তার বয়স ২৫ বছরের এপাশ ওপাশ। তিনি মারা গেছেন ২০১৪ সালে। উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে মেয়র এবং অতপর সংসদ সদস্য- এই সময়টা শওকত হোসেন হীরনের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা অন্তত দুই দশকের। এরপরও তাঁকে যতটা জানি তার চেয়ে বহুগুন জানি সাংবাদিক হিসেবে লিটন বাশার গড়ে ওটা প্রসঙ্গে। কারণ তার সাথে দেখা শওকত হোসেন হীরনের এক বছর আগে, ১৯৯০ সালে। পাবিরারিক সম্পর্কের কারণে। তখন লিটন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সম্ভবত। একই বছর আমার প্রথম চীফ রিপোর্টার বকুল ভাইর(খায়রুল আলম বকুল) মাধ্যমে আমার এক্রিটিডেশন কার্ড হয়। এর মাস ছয়েক আগে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিয়ে করেফেলি।
এদিকে পরিচয় পত্র ব্যবহার করার প্রতি আমার ঝোক ছিলো বরাবরের। সাংবাদিক হিসেবে ভাব দেখানো নয়, কোন অঘটনে মারাগেলে লাশ চিহ্নিত হবার সুবিধার জন্য পরিচয়পত্র বহন করা প্রয়োজন বলে আগে থেকেই মনে করে আসছি। সাপ্তাহিক স্বন্দীপে থাকা কালে মানিক ভাই( নাজিম উদ্দিন মানিক) আমাকে সাবধান করে বলতেন, তোর মরণ কিন্তু ইউডি কেসে পড়বে! হয়তো সেই সাবধান বাণী মনের গহিনে গেথে গিয়েছিলো। পরে অঘটনে মৃত্যুর আশংকা ক্রমাগ বেড়েছে। এখন একেবারে তুঙ্গে আছে। তবে আমার কথা ছিলো, এখনো কোন হত্যা মামলায় পড়িনি। যাতে অনেক সাংবাদিকই পড়েছেন। কি অদ্ভূত বাংলাদেশ! এখন আমার পেশাগত কোন কার্ড নেই। কারণ, অতি সদাশয় ইউনূস সরকার এক্রিটিডেশন কার্ড গণবাতিলের তালিকায় আছি। যে কান্ড অতীতের কোন সরকারই করেনি! এরপরও এই কার্ড মাস দুই আগে বিএমপি’র এক পুলিশ কনেস্টবল অতুল থাবামেরে নিয়ে গেছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টুর ছবি তোলার অপরাধে। এ বিষয়ে আমি বিএমপি কমিশনারকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানিয়েছি। জানিয়েছি ডিসি(ক্রাইম)কেও। ভোলার এক সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকের কন্যা এই পুলিশ কর্মকর্তাকে আমি এসএম রুহুল আমিনের সময় থেকেই চিনি। সাংবাদিক কন্যা হিসেবে তাঁর প্রতি আমার বিশেষ মমতা ছিলো, তাকে ঘনিষ্ঠ বলে মনে করতাম। দুই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছি। পুলিশ কমিশনারের কাছে তো বীতি মতো ধর্ণা দিয়েছি। কিন্তু কোন ফলোদয় হয়নি। পুলিশ কমিশনার আমার কথায় চেয়ে তার কনেস্টবলের বয়ানকে বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ কনেস্টবল তাঁর। যেমন আমাদের দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলে থাকেন, “আমার পুলিশ।”
সামগ্রিক অবস্থায় আমি মৃত্যু পর অজ্ঞাত লাশ হবার জোর আশংকায় আছি। তবে এক সময়ে ঘনিষ্ট এক সাংবাদিক বলেছে, এখন আর লাশ শনাক্তে পরিচয়পত্র লাগে না, মোবাইল থাকলেই চলে। কিন্তু লাশের পকেট থেকে কেউ মোবাইল সেট নিয়ে গেলে কী হবে? যাক সে অন্য প্রসঙ্গ।
সদ্য বিয়ে করলে সস্ত্রীক শশুর বাড়ি যাবার এক ধারা প্রচলিত আছে। যে কাজ বেশি না করলেও, কিছু তো করতে হয়েছেই। আর ৯০ সালে অস্বাভাবিত মৃত্যু ভয় ততটা না থাকলেও এক্রিটিডিশন কার্ড পকেটে রাখতাম। এর কারণ হয়তো সদ্য প্রাপ্তির প্রভাবও হতে পারে। ঘটনা চক্রে কার্ডটি লিটন বাশারের নজরে পড়েছিলো। কোন ভনিতা ছাড়াই সে বলেছিলো, ‘খালু, আপনার মতো আমারও একটা লাল কার্ড লাগবে।’ কি বলা যায় এক কিশোরকে! বললাম, আগে সাংবাদিক হও।
ঃ কিভাবে হবো?
ঃ প্রতিদিন ইত্তেফাক পড়বা, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। এবং কোন রকম হলেও বিএ পাস করতে হবে।
লিটন বাশার বিএ পাস করেছিলো। এবং আগাগোড়া ইত্তেফাক পড়েছে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ইত্তেফাক পড়ার বিষয়টি তার মৃত্যুর পর শুনেছি তার ছোট খালাতো বোন শিউলির কাছে। এদিকে লিটন বাশার সাংবাদিক হবার ধারা সম্পৃক্ত হয়েছিলো বিএ পাস করার আগেই। এবং সাংবাদিকতা শুরু করা ক্ষেত্রে এটিই হওয়া উচিত।
এদিকে একটি ঘটনা ঘটে কাকতালীয় ভাবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শওকত মাহমুদ ‘মিডিয়া সিন্ডিকেট’ নামে একটি নিউজ এজেন্সি শুরুর লগ্নে আমাকে বললেন, বরিশালে দায়িত্ব নেবার মতো একজনকে খুঁজে দিতে। আমার মাথায় আসলো ছাত্রদল থেকে বেড়ে ওঠা তরুণ রাজনীতিতে সেই সময় বরিশাল বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম রাজনের কথা। শওকত মাহমুদের মিডিয়া সিন্ডিকেটের বরিশালের কর্ণধার হলেন নজরুল ইসলাম রাজন। অফিস নেয়া হলো সদর রোডের হাবিব ভবনে, সম্ভবত তৃতীয় তলায়। কিন্তু লোক তো লাগবে! এ সময় স্বজনপ্রিতেতে প্রভাবিত হয়ে লিটন বাশারকে যুক্ত করদিলাম নজরুল ইসলাম রাজনের সঙ্গে। এই তার সাংবাদিকতা জীবনে আনুষ্ঠানিক প্রবেশ। তবে সে সাংবাদিকের ‘আই কি হনুরে’ ভাব নিয়ে থাকেনি। পুরো দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছে। শুধু সংবাদ সংগ্রহ নয়, সকালে অফিস খোলার পিয়ন এসে দেখতো, লিটন বাশার অফিসে আছে। রাতে যাবার সময় বলেযেতো, ভাইয়া আপনি অফিসটা একটু বন্ধ করেদিয়েন। এইখানে একটি বড় কিন্তু আছে। কারণ সচারচার মিডিয়া অফিসে রাজনের সন্ধ্যা শুরুই হতো অনেক সময় গভীর রাতে। তিনি রাজনীতির কামকাইজ শেষ করে মিডিয়া নিয়ে বসতেন। হয়তো সেই সময় থেকেই লিটনেরও রাত জাগার কু-অভ্যাসের সূচনা।
সিটি সেল দিয়ে বড় লুটেরা বিএনপি নেতা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী, আসলে চিরকালের ব্যবসায়ী মোর্শেদ খানের অর্থায়নে শওকত মাহমুদের মিডিয়া সিন্ডিকেড শেষতক বেশীদিন টেকেনি। নজরুল ইসলাম রাজনও আর থাকেনি মিডিয়া জগতে। কিন্তু লিটন বাশার থেকেগেছে সাংবাদিকতায়। মিডিয়া সিন্ডিকেড বন্ধ হবার পর লিটন বাশার ঢাকায় গেলো। দুরবর্তী গুটি করে তাকে নিলাম দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই লিটন বুঝলো, ‘এ জীবন আমার নয়। এভাবে জীবন চলবে না।’ সে বরিশালে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিলো। সুপারিশ করলাম দৈনিক আজকের বার্তার মালিক-সম্পাদক কাজী নাসির উদ্দিন বাবুলের কাছে। তখন তিনি সুগন্ধা ইস্যুতে ধরা। লিটন বাশারকে নিলেন। কিন্তু এটি যত না আমার সুপারিশে, তার চেয়ে হয়তো অনেক বেশি তাঁর নিজস্ব পর্যবেক্ষণে। বলাবাহুল্য, কাকে কাছে নিয়ে কাজে লাগাতে হবে আর কাছ নেবার ভনিতায় কার লেজ কাটতে হবে সে বিষয়ে কাজী বাবুল ছিলেন জহুরী। এবং সঠিক সময়ে সঠিক করণীয় নির্ধারণে তার জুড়ি মেলাভার। যার প্রমান তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে আমৃত্যু রেখে গেছেন। তার জীবনে ব্যর্থতা বলে কিছু নেই।
যে কারণেই হোক, কাজী বাবুল কিছু দিনের মধ্যে লিটন বাশারকে আজকের বার্তার ব্যুরো চীফ করে ভোলায় পাঠালেন কাজী বাবুল। তখন ’৯৬ সালের শেখ হাসিনার প্রথম সরকার। খুবই সুশীল। এদিকে ওবায়দুর হক বাবুলের হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে তোফায়েল আহমেদ ও নাজিউর রহমান মঞ্জুর মধ্যে টাগ অফ ওয়ার চলছে। বাবুল হত্যা নিয়ে সাপ্তাহিক সুগন্ধায় প্রকাশিত একাধিক অনুসন্ধানী রিপোর্টে মহা ক্ষিপ্ত ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি আমাকে ডিবি পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে রাতে যথাযথ ‘বাটম’ দেবার ব্যবস্থা করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৮ দিন রেখেছিলেন। তবে কারাবাসে আশার খুব একটা অসুবিধা হয়নি। কারণ আমাকে সবোচ্চ সাপোর্ট করেছেন কৃতজ্ঞ নাজিউর রহমান মঞ্জুর।
এদিকে লিটন বাশার ভোলা থেকে আজকের বার্তার পাশাপাশি সাপ্তাহিক সুগন্ধায়ও রিপোর্ট পাঠাতো। এ সূত্রে সুগন্ধায় প্রকাশি রিপোর্টের জন্য লিটন বাশারকে দায়ী মনে করে তার উপর প্রাণঘাতি হামলা করে তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা চক্র। সেযাত্রা কোন রকম প্রাণে বাঁচলেও জীবন শংকার মধ্যে পড়েগেলো লিটন। সে ভোলা ছাড়লো। বরিশাল ফিরে যুক্ত হলো দৈনিক ইত্তেফাকের বরিশাল ব্যুরো চীফ মাইনুল হাসানের সঙ্গে। মাইনুল হাসানের অকাল মৃত্যুর পর বরিশালে ইত্তেফাকের দায়িত্ব পেলো লিটন বাশার। এবং সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রথম অবলম্বন ইত্তেফাকের বরিশাল বুরে্যা চীফ থাকা কালেই শেষ হলো তার জাগতিক জীবন অধ্যায়। সেই দিনটিই আজ, ২৭ জুন। আর আমার জন্য দুই দিনের ব্যবধানে দুটি বেদনার দিবস। কর্নেল আকবর হোসেনে ২৫ জুন এবং লিটন বাশারের ২৭ জুন। তবে আমার হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণের তীব্রতা লিটন বাশারের জন্য অনেক বেশি। মা-বাবাসহ আমার অন্যায় প্রিয়জনদের ধারায় এই দু’জন কোথায় আছে জানি না। তবে তারা ভালো থাকুক, এইটুকুই কামনা।
লেখক :দৈনিক দখিনের সময় এর প্রধান সম্পাদক,জেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিষ্ট
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত