resize 350x300x1x0 image 433634 1705917088

অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখর পাইকগাছায় ফ্যান্টাসি গার্ডেন এন্ড পার্ক

print news

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা (খুলনা): অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে পাইকগাছা উপজেলার এক মাত্র বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি গার্ডেন এন্ড পার্ক। নানা প্রজাতির রং-বেরঙের পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখর গোটা পার্ক এলাকা। শীতের সকালে গায়ে কুয়াশা মেখে পাখিরা উড়ছে আপন মনে।পার্কের চারদিকে গাছে পাখিদের কিচির-মিচির মাতিয়ে রাখে সকাল-বিকেল।
কান পাতলেই শোনা যায় পাখির ডাক। বিশেষ করে শীতের সময় দেখা যায় দল বেঁধে পরিযায়ী পাখিদের কলকলানি ও খুনসুটি। পুরা পার্ক জুড়ে গাছের ডালে পাখিদের বসা ও পাখিদের উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য পর্যটক ও পথ চারীদের মুগ্ধ করো তোলে। পার্কের সামনে মেইন সড়কে দাড়িয়ে অতিথি পাখির কল কলানি উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য উপভোগ করতে ঘন্টার পরে ঘন্টা দাড়িয়ে থাকে পথচারীরা। অনেকেই এই দৃশ্য স্মৃতি করে রাখতে ভিডিও এবং ছবি উঠিয়ে রাখছেন।সুদূর সাইবেরিয়াসহ দূরদূরান্ত থেকে আসা এসব অতিথি পাখি বছরের নভেম্বরের প্রথম দিকে আসতে শুরু করে এবং মার্চ পর্যন্ত অবস্থান নেয়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সকালে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়া নানান প্রজাতির অতিথি পাখিরা সন্ধ্যার আগেই পার্কে ফিরতে শুরু করছে। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা এসব পাখিরা বসছে পার্কেও চারি পাশে অবস্থিত ছোট-বড় গাছের ডালে। পাখিদের ডালে বসার নয়নাভিরাম দৃশ্য, ডানা ঝাপটানি ও কিচির মিচির শব্দের টানে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমিরা। অনেকেই মুঠোফোনে বন্দী করছেন প্রাকৃতিক এসব দৃশ্য। ফ্যান্টাসি গার্ডেন এন্ড পার্ক এর দায়িত্ব থাকা জি এম খালেকুজ্জামান বলেন, ফ্যান্টাসি গার্ডেন এন্ড পার্ক এর দায়িত্বরত জি এমন খালেকুজ্জামান বলেন ২০২২ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে পার্কটি চালু করা হয়। এটি প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা একটি পূর্ণাঙ্গ পার্ক। এখানকার সবচেযে বড় বৈশিষ্ট্য এখানকার পাখি। প্রায় নয় থেকে দশ মাস এখানে বিভিন্ন দেশি এবং বিদেশি পাখির সমন্বয় ঘটে।তিনি আরো বলেন,পার্কের চারিপাশে লাগানো হয়েছে বাইন,কেওড়া,গোল,গোরান,গেওয়া,ওড়া,কাকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এ খানে বিকাল হলেই দেখা যায় হাজার হজার দেশীয় ও শীতের অতিথি পাখি দলে দলে উড়ে বেড়াচ্ছে ।যার মধ্যো,বিল বাকচু,পানি কামড়ি,হাঁসপাখি,কুচবক,পুটিবক,ঢালীবক,শালিখ,চড়ুইপাখি সহ অনেক প্রকার পাখির আওয়াজে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা পার্কের এলাকা। কিন্তু কালের বিবর্তনে জীববৈচিত্র্য ইতিমধ্যে হুমকির মুখে পড়েছে। পাখি হারাচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কমেছে অতিথি পাখির আনাগোনা। তার পরও প্রতিবছর শীত মৌসুমে আমাদের অঞ্চলে ঝাঁক বেঁধে আসছে অতিথি পাখিসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি।
পরিবেশবাদী সংগঠন বনবিবির সভাপতি প্রকাশ ঘোষ বিধান বলেন, প্রতিবছরের মতো এ বছরও হাজার হাজার অতিথি পাখি শীত থেকে বাঁচতে ও খাবারের আশায় আমাদের এলাকায় এসেছে। আর নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তারা জড়ো হচ্ছে নদীর কাছাকাছি বড় বড় বনঞ্চলে। নদীর পাড়ে গাছপালা বেশি থাকায় এটাকে পাখিরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে। তাই অতিথি পাখি ও দেশীয় প্রজাতির পাখির একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করতে আমি গাছে গাছে মাটির পাত্র বেধে দিচ্ছি।আমাদের উপকূলীয় এলাকার অতিথি পাখিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো বড় বড় বাগান যেখানে বেশি পরিমান গাছ আছে। এখানে অনেক নির্জন এলাকা রয়েছে, যাতে পাখিদের নিজস্বতা রক্ষা পায়। এ সময়ে সারাবিশ্বে বিপন্ন এমন অনেক পাখি এ অত্রঞ্চলে দেখা যায়। প্রকৃতি ভালো রয়েছে বলেই পাখিরা আসছে। তাই পাখিরা যাতে বিরক্ত না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।এ বছর মৌসুমের শুরু থেকেই এখানে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। পাখি সংরক্ষণ ও বিচরণ নির্বিঘ্নে করতে আমার সংঠনের পক্ষ থেকে লিফলেটসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, চক বগুড়া মৌজায় অবস্থিত ফ্যান্টাসি গার্ডেন এন্ড পার্ক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ বেষ্টিত নয়নাভিরাম, ব্যক্তি প্রদত্ত নিরাপত্তা কর্মীর তত্ত্বাবধানে সুশৃঙ্খল ও বিনোদন প্রেমীদের চিত্ত বিনোদনের জন্য মনোমুগ্ধকর পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে। এখানে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।বিকেল হলে গাছ গুলোতে হাজার হাজার পাখি নির্ভয়ে অবস্থান করে। এখনে পরিযায়ী পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। শীত প্রধান দেশ থেকে প্রতিবছরই অতিথি পাখিরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আমাদেও উপুক’লীয় অঞ্চলে ছুটে আসে। যার ফলে শীতের এই মৌসুমে আমাদের এখানে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে।পাখির কিচির মিচির আওয়াজ এত্র এলাকার মানুষের মুগ্ধ করে তোলে। অনেক পথ চারীরা ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে পাখির কোলাহল উপভোগ করে।
এ ব্যাপারে পাইকগাছা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় বলেন, পৃথিবীতে ১০ হাজারেরও বেশি প্রজাতির পাখি রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার প্রজাতির পাখি পরিযায়ী বা অতিথি পাখি। এরা নিজ দেশের তীব্র শীত থেকে বাঁচতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আসা-যাওয়া করে থাকে। সাইবেরিয়া, ইউরোপ, এশিয়া, হিমালয় থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি নভেম্বর-ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে আমাদের দেশে আসে। শীত মৌসুম শেষ হলে আবার তারা পাড়ি জমায় নিজ নিজ দেশে। অতিথি পাখি শীতকালের সৌন্দর্য। পাখিদের উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে আসে নতুন রূপ। প্রতিবছরের মতন এবারও আমাদের এলাকাতে বিপুল পরিমাণ অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। এসব পাখিদের অবাস্থল যাতে কেউ বিনষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের বন কর্মীসহ সবাই সচেষ্ট রয়েছে। তবে আশার কথা হলো মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছে। তারা পখি শিকার থেকে নিজেদের বিরত রাখছে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....

Check Also

89158cb347b1c8e5d0b7ad26c3f4545d 6645e0064c758

সাবেক এমপি পাপুলসহ ৩ জনের নামে দুদকের মামলা

ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্ন ও রেজিস্ট্রার ঘষামাজা করে আয়, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *