102660 gdtt

কুড়িগ্রামের পাতিলাপুরের টুপি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে

print news

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :  কুড়িগ্রামের পাতিলাপুরের টুপি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বাহ্‌রাইন, সৌদি আরব ও দুবাইয়ে। টুপি তৈরি করে হাজারো নারীর হয়েছে কর্মসংস্থান। সংসারে ফিরেছে সচ্ছলতা। তবে এমন আয় আর সুনামের গল্পের পেছনে মূল নারী উদ্যোক্তা মোর্শেদা বেগম। বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করায় নারীদের আইকন হিসেবে পরিচিত তিনি। করেছেন নিপুণ হস্তশিল্প সম্ভার নামে টুপি তৈরির প্রতিষ্ঠান। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার পাতিলাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোর্শেদা বেগম । প্রায় দেড় যুগ ধরে প্রত্যন্ত গ্রামের নারীদের হাতে তৈরি টুপি মধ্যপ্রাচ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। বাহারি রঙের সুতা আর রেশমার উপরে আঁকা বিভিন্ন নকশাকৃত বানানো টুপির চাহিদাও বেড়েই চলছে।এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম বিসিক এর উপ-ব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ জোনায়েদ বলেন, পাতিলাপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা মোর্শেদা বেগমের টুপি মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে। এটি কুড়িগ্রাম জেলার জন্য ভালো খবর।হাজার হাজার নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি। সরকারি কোনো প্রশিক্ষণ, আর্থিক ঋণ অথবা টুপি বাজারজাতকরণে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।জানা গেছে, বিয়ের পর মোর্শেদা বেগমের সংসারে অভাব থাকায় ১৯৯৫ সালে স্বামী জাবেদ আলীর সঙ্গে চলে যান টাঙ্গাইলে। সেখানে কাজ করতেন একটি টাওয়াল ফ্যাক্টরিতে। পরিচয় হয় প্রতিবেশী কমলা বেগমের সঙ্গে। কমলা বেগম করতেন টুপি তৈরির কাজ। দিনে ফ্যাক্টরির কাজ করে রাতে টুপি বানানো শুরু করেন মের্াশেদা। প্রথম টুপি তৈরি করে মজুরি পান ৩৫০ টাকা। পরে তার নিখুঁত কাজ দেখে মুগ্ধ হন এক বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা। প্রথম অর্ডারে ৫০টি টুপি তৈরি করে পেয়েছিলেন ১৭ হাজার টাকা। এরপর ২০০৪ সালে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন মোর্শেদা। প্রথমে ৭ জন নারীকে নিয়ে শুরু করেন টুপি তৈরির কাজ। ২০০৮ সাল থেকে তার হাতে বানানো টুপি মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হচ্ছে। টুপি তৈরি করে এখন স্বাবলম্বী মোর্শেদা। তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন প্রায় ৫ হাজার নারী। মোর্শেদা বেগম নিজ গ্রাম পাতিলাপুরের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রায় ৪০টি গ্রামের নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন তিনি।মোর্শেদা বেগম আরও জানান, ফেনীর দু’জন ব্যবসায়ীর কাছে তিনি টুপি বিক্রি করেন। আর এই টুপি মধ্যপ্রাচ্যের বাহ্‌রাইন, সৌদি আরব ও দুবাইয়ে বিক্রি হয়। ওই ব্যবসায়ীরা তার কাছে রেশমা সরবরাহ করেন। এরপর তিনি নারীদের সঙ্গে নিয়ে স্রেফ সুঁই সুতা দিয়ে তৈরি করেন নানা ধরনের নকশাখচিত টুপি। দেখভাল করতে রয়েছে বেতনভুক্ত প্রায় ১৫ জন সুপারভাইজার। প্রকার ভেদে প্রতিটি টুপি তৈরির জন্য নারীরা পারিশ্রমিক পান ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এতে সুঁই সুতার খরচ দেড়শ’ টাকা। প্রতি টুপিতে তিনি কমিশন পান ৮০ থেকে ১০০ টাকা। প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার টুপি বিক্রি করেন তিনি।সাত দরগাহ গ্রামের মৌসুমী বলেন, সারা বছর আমরা টুপি তৈরির কাজ করি। বিশেষ করে রমজান মাস ও কোরবানি ঈদের সময় টুপির চাহিদা বেশি থাকে। এ সময় টুপি বানিয়ে জনপ্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পাই।পাতিলাপুর গ্রামের মর্জিনা বেগম জানান, মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে টুপি তৈরির কাজ শুরু করি। এখন তার আর অভাব নেই। সংসারের স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরি করে ভালো আয় করছেন তিনি।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....

Check Also

1715695954.bg 111111

বরিশালে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, খালু ও খালাতো ভাই গ্রেপ্তার

বরিশাল অফিস :  বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর এলাকার বাসিন্দা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী তামান্না …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *