আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি: নিহত ২৫০,আহত ৫০০


ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে গভীর রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কুনার প্রদেশে নিহতের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৫০০ জন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চলছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার সর্বোচ্চ সম্পদ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে রোববার গভীর রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার প্রদেশ। আফগান তথ্য মন্ত্রণালয় তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছে, সেখানে অন্তত ২৫০ জন নিহত এবং ৫০০ জন আহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.০। জালালাবাদের পূর্ব-উত্তরপূর্বে ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং ভূগর্ভের ৮ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি হয়।
ইউএসজিএস আরও জানিয়েছে, প্রধান কম্পনের পর একই এলাকায় আরও দুটি আফটারশক আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিল ৫.২। নানগারহার জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আহতদের স্থানীয় আঞ্চলিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, “দুঃখজনকভাবে আজকের রাতের ভূমিকম্পে আমাদের কয়েকটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।”
তবে তিনি সুনির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেননি। তিনি আরও জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলো থেকে সহায়ক দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে।জীবন রক্ষায় সব ধরনের সম্পদ কাজে লাগানো হবে বলেও জানান মুজাহিদ।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
তালেবান সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পে বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে’ অনেকে চাপা পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।তালেবান সরকার কর্মকর্তারা জানিয়েছে, দুর্গম পার্বত্য এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালাতে মানবিক সংস্থাগুলোর সহায়তা জরুরি। এসব এলাকার কিছু কেবল আকাশপথে পৌঁছানো সম্ভব। কারণ সেগুলোতে ভূমিধস ও বন্যা দেখা দিয়েছে।কুনার প্রদেশে মেডিকেল টিম বহনকারী হেলিকপ্টার পৌঁছেছে আহতদের চিকিৎসা ও স্থানান্তরের জন্য। এদিকে নানগারহার প্রদেশে ডজন ডজন স্বেচ্ছাসেবক হাসপাতালে ছুটে গেছেন রক্ত দান করার জন্য।
হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মৃতদেহ পরিবহণের প্রচেষ্টা সমন্বয়কারী এক তালেবান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কুনার প্রদেশের একটি গ্রামেই ২১ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, এখনও প্রদেশের অনেক জেলায় ভূমিকম্পের পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হচ্ছে।কুনার প্রদেশের আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো এতটাই দুর্গম যে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শত শত মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে—তবে এটি এখনও নিশ্চিত নয়। কিছু এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে না, আবার অন্য কিছু জায়গায় ভূমিধস ও বন্যার কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তবে এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যা কেউই জানাতে পারছে না, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দুর্গম ও অগম্য।ভূমিধসের কারণে সড়কপথ বন্ধ থাকায় কুনার প্রদেশের পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, উদ্ধার অভিযান কেবল আকাশপথে চালানো সম্ভব।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বেশ কয়েক সেকেন্ড কম্পন টের পাওয়া যায়। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।