খুলনা গণপূর্তে গোপালগঞ্জের সেই সিন্ডিকেট এখন অধরা


ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : পতিত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর গণপূর্তের অবৈধ সম্পদশালীরা এখন অধরা। তাদেরকে আনা হচ্ছে না আইনের আওতায়। ফলে ফুরফুরে মেজাজে আছেন প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী। একেকজন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। তাদের অবৈধ সম্পদের খবর খোদ দুদকের কাছেও নেই। কর্তৃপক্ষও অজ্ঞাত কারণে অনেকটা নীরব ভূমিকায়। দাপুটে এসব প্রকৌশলীরা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আরব্য রজনীর আলাদীনের চেরাগ না পেলেও গনপূর্ত অধিদপ্তরের একজন উপ সহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলী। পতিত সরকারের আমলে শেখ পরিবারের আশীর্বাদ পেয়ে ‘জাদুর ছোঁয়া’ পেয়েছিলেন। শেখ পরিবারের আস্থাভাজন হয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পদায়ন বাগিয়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। নামে বেনামে করেছেন সম্পদের পাহাড়। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রকৌশলীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করায় তারা এখনও বহাল তবিয়তে।
২০০৬ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরের চাকরিতে যোগদান। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর গনপূর্ত ডিপার্টমেন্টে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে স্লোগান ধরে ‘জয় বাংলা’। দলীয় আয়োজনে বড় অংকের টাকা ব্যয় করতেন তিনি। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে ঠিকাদার সিন্ডিকেটের সাহায্যে শেখ পরিবারের সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে খুলনা গণপূর্তের ই/এম উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা) মোঃ হায়দার আলী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে ভয়ানক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে প্রকৌশলী হায়দার আলী। তবে হায়দার আলী একদিনে বেপরোয়া হয়ে ওঠেনি, এর পেছনে ছিলো শেখ পরিবারের ছায়া- বটবৃক্ষ হয়ে পাশে ছিলেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের আমলে মেয়রের দায়িত্বই পালন করেনি, ছিলেন টুঙ্গিপাড়ার একজন প্রভাবশালী ঠিকাদার। ২০২১ সালে টুঙ্গিপাড়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শেখ তোজাম্মেল মেয়র নির্বাচিত হয়। ২০২২ সালের ৩১ জুন কামরুল ইসলাম নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে গোপালগঞ্জে যোগদানের পরপরই শেখ পরিবারের আস্থাভাজন সদস্য মেয়র তোজাম্মেল হক টুটুলের সাথে লিয়াজো করেই মাস্টারপ্ল্যান ছক করে। পরবর্তীতে হায়দার আলী গোপালগঞ্জে উপ সহকারী প্রকৌশলী পদে দায়িত্ব পেয়ে লুটপাটের পরিধি আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। গনপূর্ত পরিবারে সিন্ডিকেট অনিয়ম, দুর্নীতি, টেন্ডার বাণিজ্য, প্লট বাণিজ্য, নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য করে পুরো অধিদপ্তরকে ফোকলা করে দিয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগ সমূহের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ গণপূর্ত জোন এবং গোপালগঞ্জ গণপূর্ত সার্কেল এর নির্দেশনা মোতাবেক সম্পন্নসহ গত অর্থ বছর সহ বিগত অর্থ বছরে তথা সাম্প্রতিক সময়কালে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম দেদারসে আওয়ামী সিন্ডিকেটের রোষানলে দাপটের সহিত কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তবে এর মধ্যে প্রকল্পগুলো উল্লেখযোগ্য হলোঃ শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ সদর এ এস পি সার্কেল অফিস কাম বাসভবনের ভার্টিকাল এক্সটেনশন, কাশিয়ানী ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, কাশিয়ানী উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ, টুঙ্গিপাড়া টিটিসি, গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের ১০ বেড আইসিইউ এবং ২০ বেড আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে পিসি আর ল্যাব স্থাপন, কোটালীপাড়া উপজেলা ভূমি অফিস। এছাড়া গোপালগঞ্জে ০৩ টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীতে জেলা সদর হাসপাতাল সমূহে জরুরী ভিত্তিতে আইসোলেশন, আইসিইউ, পিসিআর ল্যাবসহ মেডিকেল গ্যাস স্থাপন। এছাড়া নিয়মিত কর্মকান্ড হিসাবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ বিভাগের আওতাধীন বিল্ডিং ইনভেন্টরী ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (BIMS) ভুক্ত সরকারি অফিস ভবন এবং বাসভবন সমূহের বিভিন্ন প্রকার মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ সম্পন্ন হলেও প্রকল্প গুলো থেকে নির্দিষ্ট ঠিকাদারদের কাজ বাগিয়ে দিয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, প্রণয়ন, তদারকি, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কাজে ধীরগতি ইত্যাদি করে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে অনিয়মের দৃশ্য দেখা গেছে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে আগত দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ এর লক্ষ্যে প্রযোজনীয় অবকাঠামো নির্মাণসহ, ৪ টি KPI স্থাপনা রক্ষনাবেক্ষন, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের জন্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ১.৭৫৭ লক্ষ বর্গফুট অফিস স্পেস, ০৮ টি ফ্ল্যাটের জন্য ০.৪৭ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ এর হাসপাতাল কাম (একাডেমিক ভবন, হোষ্টেল, ডরমিটরী, কোয়ার্টার্স ইত্যাদি, ০৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র) প্রকল্প।
‘সারাক্ষন বার্তা’র একটি অনুসন্ধানী টিম দীর্ঘদিন যাবত অধিদপ্তরে গোপালগঞ্জ জোনে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী আশীর্বাদপুষ্ট এ চক্রটির কর্মকান্ডকে চিহ্নিত করে আসছে। স্বীকৃতভাবে এ চক্রটি বর্তমান হাইব্রিড নেতাসেজে অন্তর্বর্তী সরকারের ভিতর ঢুকে পড়ে উপদেষ্টাদের নাম ভাঙ্গিয়ে, এনসিপির নেতা পরিচয়ে, বিএনপির তৃণমূল নেতা সেজে এক শ্রেণির ক্ষমতাসীন হাইব্রিড অসাধু চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে এক দিকে নিজেদের পজিশন গুলো পাকাপোক্ত করতে চায় অপরদিকে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পে তাদের অনুসারী ঠিকাদারদের মাঝে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগে মিশনে নেমেছে।
ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর খুলনা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলী, ২০০৬ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরে চাকরিতে যোগদান করে মাত্র ১৯ বছরের ব্যবধানে তিনি এখন অঢেল সম্পদের মালিক। বিএনপি নেতার সুপারিশে চাকরিতে যোগদান করলেও ২০০৯ সালে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে ভোল পালটে আওয়ামীলীগের আনুগত্য প্রকাশে বিভোর হয়ে ওঠে। শেখ পরিবারের সান্নিধ্য পেয়ে আওয়ামীলীগের ক্যাডারবাহিনীর ঠিকাদারদের কাজ বাগিয়ে দিয়ে ফ্রন্ট লাইনে আসা শুরু করে। এসকল কর্মকাণ্ডে শেখ পরিবার ও আওয়ামী নেতৃবৃন্দের নজরে পড়তে, শেখ মুজিবের সমাধি প্রাঙ্গনে কয়েকবার আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়েছেন ও মাজার জিয়ারতের ছবি সে সময় ঢালাওভাবে প্রচারও করতেন। এসব প্রমোশনার কার্যক্রমে ক্রমশই শেখ পরিবারের আস্থাভাজন হতে থাকে। টুঙ্গিপাড়া মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুলের আশীর্বাদে ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আ’লীগের সভাপতি খুরশিদ আলম টোনা-মনির ছোট ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেনের সাথেও সম্পর্ক আরও দীর্ঘ হতে থাকে।
তবে ২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলন গন অভ্যুত্থানে শেখ পরিবারের আধিপত্য ক্ষমতা বলয়ের সমাপ্তি ঘটলে শেখ পরিবারের সকলেই দেশ ত্যাগে সফল হলেও নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম ও উপ সহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলীদের মতো আওয়ামী সমর্থকরা দেশ ত্যাগে ব্যর্থ হয়। নিমিষেই ভোল পালটে ফেলেন দুজনই। শুরু হয় তোড়ঝাপ। প্রথমেই নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম গোপালগঞ্জ প্রকল্পের আমলনামা গা ঢাকা দিতে ২০২৪ এর সেপ্টেম্বর মাসেই বদলী হয় খুলনা জেলায়। পুরোনো সিন্ডিকেটকে চাঙ্গা করতে হায়দার আলীকেও খুলনা গনপূর্ত জোনে বদলী করান। তবে তার জন্য করতে হয়েছে একাধিক টেবিলে দেনদরবারসহ তদবির বাণিজ্য। গত ১৭ বছরে গণপূর্তে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের নেতা পরিচয়ে অগাধ সুযোগ-সুবিধা বাগিয়ে নিয়ে সময়ের পরিবর্তনে পদবাণিজ্যে কয়েক লক্ষ টাকা ঢেলে বর্তমানে সর্বাধিক জনপ্রিয় দলের নাম ব্যবহার করে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী নেতা হয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে খুলনাঞ্চলের সহ-সভাপতির পদ আদায় করেন হায়দার আলী। বর্তমানে নিজ ভাই অহিদের নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিয়ে অসংখ্য কাজ বাগিয়ে নেওয়াসহ আরও একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে পরোক্ষভাবে ব্যবসা করছেন এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, আওয়ামীলীগ শাসনামলে বাগেরহাট, বরগুনা, ভোলা, গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় গণপূর্তের কার্যালয়ে কর্মকালীন সময়ে ঠিকাদারদের সাথে গভীর সখ্যতায় এপিপি’র কাজের ক্ষেত্রে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ উঠনো বাবদ চুক্তিমূল্যের ৫৫% কোন ক্ষেত্রে ৬০% আবার বিশেষ ক্ষেত্রে ৬৫% অর্থ নগদ গ্রহণ করার তথ্য উঠে এসেছে। গণপূর্তের বৈদ্যুতিক/যান্ত্রিক শাখায় কর্মরত থাকার সুবাদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারদের মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রিক বিষয়ে বহু অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। এভাবে তিনি অবৈধ ইনকাম করেছেন বড় অংকের টাকা। একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা) হয়ে চড়েন বিলাশবহুল প্রাইভেট গাড়িতে। তিনি খুলনা বাগেরহাট দায়িত্বরত থাকাকালীন সময়ে বিভিন্নস্থানে নামে-বেনামে কিনেছেন জমি, প্লট, ফ্ল্যাট। এছাড়া খুলনা খালিশপুরের নেভি চেকপোস্ট সংলগ্ন এলাকায় করেছেন চোখ ধাঁধানো বিলাশবহুল বাড়ি। খুলনা খালিশপুর মহিলা পলিটেকনিক কলেজের সামনে রয়েছে আরেকটি বাড়ি। পাশাপাশি পাইকগাছায় চিংড়ি মাছের ঘেরসহ খুলনা শহরে বিভিন্ন মার্কেটে বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা যায়। যখন যে দলের সরকার ক্ষমতায় থাকুক না কেন, ছলেবলে নেতৃবৃন্দের সাথে লিয়াজো করে ভাইদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। আ’লীগের তৎকালীন নেতাদের সুপারিশে তার এক ভাইকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিফট সার্ভিস অপারেটর হিসেবে চাকরী পাইয়ে দিয়েছেন। সর্বকনিষ্ঠ ভাই অহিদকে দিয়ে গণপূর্তের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ করান। ভাইয়ের নামে প্রকৃতপক্ষে তিনিই ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। এছাড়া তিনি নিজে সরকারি চাকরি করায় ছোট ভাইদেরকে দিয়ে স্থানীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ করান। সর্বকনিষ্ঠ ভাই অহিদকে খুলনা ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য পদ ও বাগিয়ে দিয়েছেন। বড় ভাই হায়দার আলীর সাথে খুলনার বড় বড় রাজনৈতিক নেতাদের সু-সম্পর্ক থাকায় অহিদ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় সরকারি জমি দখল, টেন্ডারবাজি, অসামাজিক কর্মকান্ড চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এই অহিদ এর বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি খুলনা সরকারি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে রাস্তা নির্মানে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।
এ সকল বিষয়ে খুলনা গনপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম ও উপ সহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলীকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কাউকেই পাওয়া যায়নি।
সিভিল শাখা এবং ইএম শাখার প্রত্যেক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এই কাজের প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। এদের হাত দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন মুলক কর্মকাণ্ড হয়েছে। তাদের আমলনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তারা প্রত্যেকেই শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এ সরকার আমলে। তাদের এই শত শত কোটি টাকার সম্পদ এবং গাড়ি বাড়ি আয়ের উৎস হচ্ছে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা। প্রত্যেকের বেনামে ঠিকাদারি লাইসেন্স অথবা নিজস্ব ঠিকাদার আছে। এসব ঠিকাদার দিয়ে নামকা অস্তে কাজ করিয়ে এবং ভুয়া বিল করে কিংবা একই কাজ বার বার দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা পকেটস্থ করেছেন।
সরকারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাস্তবায়িত হয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে। এই উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশল শাখার দুইটি উইংস কাজ করে। একটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অপরটি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ( ইএম)। দুটো শাখাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে। সিভিল শাখার কাজ হচ্ছে বিল্ডিং নির্মাণ ও মেরামত করা। সিংহভাগ টাকা খরচ করা হয় এই শাখা থেকে। অপরদিকে ইএম শাখা লিফট, জেনারেটর, বৈদ্যুতিক পাখা, এসি, ওয়ারিং, পাওয়ার স্টেশন সহ ইত্যাদি কাজ করে থাকে।
সকল প্রকার বৈষম্য নিরসনের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিলেও গনপূর্ত অধিদপ্তরে এখনো চরম বৈষম্য চলছে। অধিদপ্তরের সকল ঠিকাদারি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে আওয়ামী সিণ্ডিকেট ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সরকার পতনের পর সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বঞ্চিত যোগ্য কোম্পানীগুলোকে কাজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।