টেলিগ্রাফ: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারাধীন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনা, যিনি ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের খালা, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন করতে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের নির্দেশ দেওয়ার জন্য। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, ওই অভিযানে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হন। এই ঘটনাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ থেকে, যা অল্প সময়ের মধ্যেই সারাদেশে ব্যাপক সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিক্ষুব্ধ জনতা তার সরকারি বাসভবনে হামলা চালায় এবং ঢাকার ব্যস্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন।
প্রসিকিউটর ময়নুল করিম জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ফোন রেকর্ড, অডিও-ভিডিও ক্লিপ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার ভাষায়, “এই মামলার প্রমাণ এতটাই শক্তিশালী যে, সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা যাবে—এই হত্যাকাণ্ডগুলোর সরাসরি আদেশ এসেছে শেখ হাসিনার কাছ থেকেই।”
অভিযোগ আরও বলছে, নিহত বিক্ষোভকারীদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার এবং আহতদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখার নির্দেশও শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন। তবে শেখ হাসিনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিভিন্ন সময়।
এছাড়াও, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও এই মামলার অন্তর্ভুক্ত। মামুনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশেই হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমন করা হয়।
প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “তিনি ১,৪০০ মৃত্যুর জন্য দায়ী। যদিও একসঙ্গে এত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সম্ভব নয়, আমরা অন্তত একটি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি।”
তার ভাষায়, “শেখ হাসিনার লক্ষ্য ছিল ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা। তিনি এখন একজন নিষ্ঠুর ও নির্দয় অপরাধীতে পরিণত হয়েছেন, যার আচরণে কোনো অনুশোচনার ছাপ নেই।”
বর্তমানে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে তারা ভারতে পালিয়ে রয়েছেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত