আ.লীগ ঠিকাদারের তদবির করতে গিয়ে দুই সমন্বয়ক আটক, ছাড়া পেলেন মুচলেকা দিয়ে


ইত্তেহাদ নিউজ,ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগের এক ঠিকাদারের বিলের তদবির করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম (২৪) ও বরিশাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী (২৫)। পরে তাদেরকে পুলিশে দেওয়া হলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তারা।
গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টা ১০ মিনিটে সদর থানা থেকে লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় ওসির রুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝালকাঠি ও বরিশালের সমন্বয়ক, যুবদল, এনসিপি নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলীর প্রতিনিধি, স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে আপসনামায় স্বাক্ষর রেখে তাদের চলে যেতে বলা হয়।
জানা গেছে, ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর কম্পিউটার অপারেট শাওন খানের তিন কোটির টাকার ব্রিজ ও সড়কে কাজের চূড়ান্ত বিল তুলতে গেলে ঝালকাঠি এলজিইডি সিনিয়র প্রকৌশলীর রুমে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। সেসময় সেখানে থাকা বিএনপিপন্থি ঠিকাদারদের সঙ্গে তাদের হট্টগোল বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের সদর থানায় নিয়ে যায়। সন্ধ্যার পরে সদর থানায় যান ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মুবিন, বরিশাল জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বরিশাল মহানগর কমিটির সংগঠক তুষার খান, ঝালকাঠির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এরপর তাদের এলজিইডিতে আসা ঠিক হয়নি বলে সবার কাছে স্বীকার করেন তারা। ওসির রুমে সাদা কাগজে ‘তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে’ মর্মে একটি লিখিত কাগজে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠক, বিএনপি, যুবদলের কয়েকজন সে কাগজে স্বাক্ষর করেন। পরে থানার সামনে সাংবাদিকদের সামনে যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, তাদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল- যা সিনিয়র নেতাদের সামনে সমাধান হয়েছে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীরের ঘুষ ও দুর্নীতির বিষয়ে আমরা নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এ সময় উপস্থিত ঠিকাদাররা মব সৃষ্টি করে আমাদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া আমাদের বিরুদ্ধে কিছু মিডিয়াতে অপ্রচার চালানোর প্রতিবাদে আমরা বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করব।
সিরাজুল ইসলাম ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের দোগলচিড়া গ্রামের ফল ব্যবসায়ী নুরুল বাশারের ছেলে ও মেহেদী বরিশল শহরের কাকলীর মোড়ের মুদি দোকানি কালামের ছেলে।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, এলজিইডিতে দুই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে স্থানীয় ঠিকাদাররা আটক করেছেন এমন খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তাদেরকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসি। তখন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল তারা তাদের অনৈতিকভাবে হয়রানি করে আসছে। আজ একটি কাজের অসম্পূর্ণ বিল তুলে নিতে নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসে গিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় এবং স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করেছেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।