বাংলাদেশ ঢাকা

থানা হেফাজতে জনিকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় জাহিদের যাবজ্জীবন বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট

1754898665.high court
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : রাজধানীর পল্লবী থানা হেফাজতে ইশতিয়াক হোসেন জনি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদের দণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডিত এএসআই মো. রাশেদুল হাসানকে ১০ বছর দণ্ড ও সোর্স রাসেলকে সাত বছরের দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন।সোমবার (১১ আগস্ট) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।গত রোববার (১০ আগস্ট) থেকে এ রায় ঘোষণা শুরু করেছিলেন হাইকোর্ট।

এ মামলায় আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ এবং আইনজীবী মো. আবদুর রাজ্জাক ও নাজমুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার।মামলার বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম ও আইনজীবী শাহীনুজ্জামান।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার জানান, এসআই জাহিদের যাবজ্জীবন দণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বহাল রেখেছেন। এএসআই রাশেদুল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পরিবর্তে ১০ বছরের দণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন। রাসেলকে সাত বছরের দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন।এ মামলায় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশের সাবেক তিন সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— পল্লবী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. রাশেদুল হাসান, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু।এ ছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই তিন আসামির প্রত্যেকে ভুক্তভোগী পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়।এই মামলায় পুলিশের সোর্স সুমন ও রাসেলকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।এরপর জাহিদ, রাশেদ ও রাসেল হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। এ তিন আপিলের শুনানি একসঙ্গে গত ৯ জুলাই শুনানি শুরু হয়। গত ৭ আগস্ট শুনানি শেষে রায়ের জন্য রোববার দিন রাখা হয়।তবে এএসআই কামরুজ্জামান শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। আর সুমন কারাভোগ করে বেরিয়েছেন।মামলার আর্জি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় নিহত জনি ও তার ভাই ইমতিয়াজ সোর্স সুমনকে সেখান থেকে চলে যেতে বললে তিনি পুলিশকে ফোনকল দেন। পুলিশ এসে জনিকে আটক করে নেয়। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে ধাওয়া দিলে তারা গুলি ছোড়ে।আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের এক পর্যায়ে জনির অবস্থার অবনতি হয়। এ সময় তাকে প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জনির মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর অধীনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। এ আইনে এটি ছিল প্রথম মামলা ও প্রথম রায়। যে আইন করার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বাতিলের দাবি ছিল।

২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেন তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওসি জিয়াউর রহমানসহ পাঁচজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে প্রতিবেদনে নতুনভাবে অভিযুক্ত করা হয়।২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। অভিযোগ গঠনের পর প্রায় সাড়ে চার বছর পর ২০২০ সালে বিচারিক আদালতে এই মামলার বিচারকাজ শেষ হয়।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায় ।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.