বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এলজিইডি’র প্রকল্প পরিচালক হামিদুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ


ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হামিদুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থায় তার বিরুদ্ধে প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন মো. হেমায়েত উদ্দিন নামের জৈনেক ব্যাক্তি।
ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্প পরিচালক হামিদুল হক দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র আহবান, ঠিকাদার নিয়োগ, স্বজনপ্রীতি ও কমিশন আদায় ছিল তার নিয়োমিত কাজ। নিজস্ব ঠিকাদার সিন্ডিকেট তৈরি করে কাজ দিয়ে কমিশন নিয়ে নিতেন এবং এই প্রবণতা এখন অব্দি অব্যাহত।
দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের (সিআরডিপি-২) কার্যক্রম আদ্যপান্ত সরজমিন তদন্ত করলে মো: হামিদুল হকের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের প্রমান পাওয়া যাবে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
আরো উল্লেখ করা হয় তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ও সুবিধাভোগী। এর বাইরে তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নেতা। তিনি আওয়ামী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতার অপব্যহার, অনিয়ম, দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। যা তার জ্ঞাত আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।হামিদুল হক ও তার পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সম্পদের অনুসন্ধান করার জন্যেও অনুরোধ করা হয় অভিযোগপত্রে।
এলজিইডি’র সিআরডিপি-২ এর এই প্রকল্প পরিচালকের রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটিতে (হামিদ ভিলা) একটি বহুতল বাড়ি রয়েছে। যার বাড়ি নম্বর-২১০/বি, রোড নং-৪। এছাড়া ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১১/১৬, সলিমুল্লাহ রোডে তার স্ত্রী আরমানা ইসলামের নামে রয়েছে আরো একটি বাড়ি।
ঢাকার শেখের টেকে ৩ নম্বর রোডে প্যারামাউন্ট হাউজিংয়ের ১০ নম¦র ভবনে রয়েছে একটি বিলাসবহুল ফ্লাট। এছাড়াও নামে-বেনামে রয়েছে একাধিক প্রাইভেট কার। তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর। গ্রামের বাড়িতে রয়েছে প্রচুর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ।
বিগত আওয়ামী শাসনামলে দলীয় ছত্রছায়ায় অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ এলজিইডি শাখার ৩৬ নম্বর সদস্য থাকার কারণে সবসময় প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটিতেও তিনি নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলেন। এবং ওই কমিটির ৭ নম্বর সদস্য ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে বাগিয়ে নিয়েছেন প্রকল্প পরিচালকের পদ। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত ডোনেশন দাতা হিসেবেও তার বেশ নাম-ডাক রয়েছে। এবং একারণেই আওয়ামী ছত্রছায়ায় সব সময় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের এই নেতা রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও নীরবে দুর্নীতি করে চলেছেন। দাপটের সাথে প্রকল্পের পিডির দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছেন। ওই অভিযোগপত্রে সবশেষে দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি এবং বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের এই নেতার দুর্নীতির ও অবৈধ সম্পদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এই অভিযোগপত্রে উল্লিখিত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য প্রকল্প পরিচালকের সাথে সেলফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘যদি সুনির্দিৃষ্ট কোনো কিছু থাকে সে বিষয়ে কথা বলা যেতে পারে। গদবাঁধা বা গতানুগতিক অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই।’ তার সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ আমার যা কিছু সম্পদ আছে তার সবটাই ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করা আছে।’
অভিযোগপত্রে উল্লিখিত সম্পদগুলো আপনার কি না, এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো বললাম যে, আমার যা কিছু আছে তার সব ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ আছে। আর আমার স্ত্রী একজন চিকিৎসক। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে চাই না।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।