বরিশাল শিল্পকলার সেই বিতর্কিত অসিতকে এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বদলি


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল: বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির বিতর্কিত কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশগুপ্তকে কুড়িগ্রামে শাস্তিমুলকভাবে বদলি করা হয় গত ১৩ অক্টোবর।
এদিকে ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ৬ দিনের ব্যবধানে (একই তারিখ ও স্মরকের স্থলাভিষিক) এক অফিস আদেশে অসিত বরন দাস গুপ্তকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বদলী করা হয়েছে।বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাসচিব মোঃ ওয়ারেছ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই বদলীর আদেশ জারি করে।
বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ অসিত বরন দাসকে পুনঃরায় কুড়িগ্রামের বদলে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বদলি করা হয়েছে। বরিশাল শিল্পকলা একাডেমীর ৭৫ লাখ টাকা থেকে সাতাশ হাজার টাকা রেখে গেছেন ফান্ডে।বাকি টাকার হিসেব দিয়েছেন ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে।
অসিতের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ:
অনিয়ম দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ,নারী কেলেঙ্কারি,সরকারি অর্থ আত্মসাৎ,অর্থ তসরুপ, শিল্পী সম্মানীতে নয়ছয়ের অভিযোগ।রেস্ট হাউজের ভাড়া প্রদান না করা।হল ভাড়া থেকে শুরু করে নামে-বেনামে একাধিক অনুষ্ঠান করে হরিলুট করেন অসিত।
২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর বরিশালে পদায়ন পাওয়া এই কর্মকর্তা শুরু থেকেই বিতর্কে জড়ান। চলতি বছরে ১২ই জানুয়ারি বরিশাল শিল্পকলায় কালচারাল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে অবৈধভাবে রেস্ট হাউজ দখল করেন।গত ৩০শে জুন সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে অসিত। এতে একাডেমিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রশিক্ষকদের অভিযোগ, বরিশালের সাবেক কালচারাল অফিসার হাসানুর রশীদ ১২ জন প্রশিক্ষকের ২০২৪-২৫ সালের চুক্তি নবায়নের প্রস্তুতি রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু অসিত বরণ দায়িত্ব নেয়ার পর চুক্তি নবায়ন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন এবং নতুন প্রশিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেন।
আরও পড়ুন:
বরিশাল শিল্পকলা একাডেমী :দুর্নীতির মাস্টার কালচারাল অফিসার অসিত বরন দাস
দুর্নীতিতে থেমে নেই বরিশাল কালচারাল অফিসার অসিত বরণ
বরিশাল শিল্পকলায় সিলেটের সেই ফ্যাসিবাদের দোসর অসিত বরন দাস
বরিশাল কালচারাল অফিসার অসিতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগপত্র দাখিল
২০১৬ সালে সিলেটে নারী ঘটিত একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, যা পরবর্তীতে গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়। ২০২৪ সালে সিলেটে তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ হয়, এবং ২০২৫ সালে তাকে বরিশালে বদলি করা হয়। বরিশালে যোগদানের পর তিনি সরকারি রেস্ট হাউজে পরিবারসহ অবৈধভাবে বসবাস করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেন।এছাড়া হলরুম ভাড়ার টাকা গোপন রেখে ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ এবং বরিশাল শিল্পকলার ৭০ লাখ টাকা থেকে মাত্র সাতাশ হাজার টাকা রেখে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন।
অসিতের সাথে অর্থ লুটপাটকারী সহযোগীদের বিচার দাবী করেছে সাধারন শিল্পীরা।অসিতের বদলির খবর ছড়িয়ে পড়লে শিল্প সমাজে স্বস্তি নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই খবরে শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে ‘হাফ ছেড়ে বাঁচার’ প্রতিক্রিয়া দেখান।
অসিত বরণ দাশ বরিশাল শিল্পকলা একাডেমীতে যোগদানের পরেই লুটপাট শুরু করলে সর্বপ্রথম ইত্তেহাদ নিউজ অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করে।সংবাদ প্রকাশের পরই শিল্পীসহ বরিশালে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।