অনলাইনে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ভিসা বেচাকানার ফাঁদে নিঃস্ব শত শত তরুণ


জাহিদ হোসেন জনি ,
কুয়েত প্রতিনিধি
ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য দেশ কুয়েত,সৌদি আরব, ডুবাই, মালয়েশিয়া সহ অনেক দেশের ভিসা বেচাকানার ফাঁদ পেতে বসেছে ভিসার দালাল চক্রে সিন্ডিকেট । কুয়েতে, দুবাই, ইউরোপ এবং বাংলাদেশের ভিসার দালাল চক্ররা প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেচে নিয়েছে ফেসবুক,টিকটক,ইউটিউব সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম।চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন ও লোভনীয় সুযোগ সুবিধার কথা বলে, তাদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে অসংখ্য যুবক হারিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
১২ই আগস্ট ভিসা ও ফ্লাইট দেওয়ার কথা বলে গুলশান রোড় নং-২০,বাড়ি নং-০৩ আল সাফা ইন্টারন্যাশনাল নামে ট্রাভেল এজেন্সি থেকে কুয়েতে ভিসা কিনে প্রতারিত হয়েছেন বেস কিছু যুবক।তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি দুই লাখ থেকে পাচ লাখ টাকা করে নিয়ে এজেন্সিটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে । দেশে বেশিরভাগ বেকার সন্তান,ভাই,বন্ধুর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করে একই ধরণের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন কুয়েতে থাকা প্রবাসীরা ও। এমন অনেক অভিযোগ বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মী ও দূতাবাসে আসলেও টাকা লেনদেন ও দালালদের সম্পর্কে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এছাড়াও বর্তমান সময় নতুন করে নামে বেনামে ট্রাভেল এজেন্সি খুলে ফাদ পেতে বসেছে দেশ- বিদেশে বেশ কিছু নাম মাত্র প্রতিষ্ঠান, তাদের মুল টার্গেট থাকে মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীরা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টিকটকে ডুকলে দেখাযায় শত শত ভিডিও বিজ্ঞাপন মাত্র ৩ মাসে সপ্নের দেশ ইউরোপ, অল্প খরচে নিজের সপ্নকে পুরোন করুন এরকম হাজারো বিজ্ঞাপনের ফাদ এবং এতে পা দিয়ে অনেক প্রবাসী ভাইয়ের প্রতারিত হয়েছেন হয়তো শতকরা ২-৫ জন সফল হয়েছেন কিন্তু বেশি ভাগ প্রবাসী প্রতারণা শিকার হন, দুবাই এবং কুয়েতে এরকম বেশ কিছু প্রবাসীর সাথে কথা বলে জানতে পারি এসব বিষয়, কুয়েত প্রবাসী ইমারন হোসেন তিনি ৮ বছর যাবত কুয়েতে চাকরি করেন কিন্তু তার মনের সপ্ন সে ইউরোপ যাবেন এবং এজন্য তিনি ২ বছর যাবত প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা খুইয়েছেন বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে কাগজ পত্র দিয়ে, এজেন্সি গুলোর চেটক দার বিজ্ঞাপন দেখে তিনি যোগাযোগ করেন তাদের অফিসে গেলে বলে আপনি ফাইল জমা করুন এবং এই ফাইল জমা মানেই হচ্ছে প্রথম ফাঁদে পা দিয়েছেন, ফাইলের সাথে তারা প্রথম পেমেন্ট হিসেবে নেয় এক থেকে দেরলাখ টাকা এরপর ১-২ মাসের মধ্যে তারা অর্কপার্মিট হয়েছে বলে আবারো এক থেকে দেরলাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এরপরে এম্বাসি ফেইস করতে বলে এবং এম্বাসি থেকে বেশিরভাগ অর্কপার্মিট ভূয়া হওয়ার কারনে ভিসা রিজেক্ট হয় এরি মধ্যে এজেন্সি গুলো হাতিয়ে নেয় ৩-৪ লাখ টাকা যা অফেরতযোগ্য এভাবে ২ বছরের ইমরান চর বার রিজেক্ট হয়েছেন পোল্যান্ড এম্বাসি থেকে, এভাবেই প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছেন শত শত কুয়েত প্রবাসী।
এর মধ্যে দু একজন যারা সফল হয়েছেন তারাও ইউরোপ গিয়ে এক একজন বনে জান এক-একটা এজেন্সি, তারা ফেসবুকে প্রতিদিন ইউরোপের ছবি ও ভিডিও দিয়ে অনেক ভালো আছেন এগুলো বুঝাতে চান সবাইকে এবং এতে করে অনেক প্রবাসী তাদের সাথে যোগাযোগ করে ভিসার জন্য তখন তারাও হাতিয়ে নেন দুবাই, কুয়েত, সৌদি, কাতার প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা, যদি ও কখনো ১-২ জন কে নিতে পারন তাহলেই তারা সেটাকে সফলতা হিসেবে প্রচার করেন আর এতেই তাদের ফাঁদে পড়ে আরো অনেক তরুণ প্রবাসীরা। অথচ খোঁজ নিয়ে দেখাযায় যারা সদ্য ইউরোপে পারি জমিয়েছেন তারা অনেকেই কাজের অভাবে বেকার বসেআছেন এবং তখন তারা বলেন এর থেকে কুয়েত, দুবাইতে আমি ভালো ছিলাম কিন্তু তখন আর তার পক্ষে ফেরা সম্ভব না কারন ইতিমধ্যে তারা ৭-১০ লাখ টাকা খরচ করে ইউরোপ গেছেন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে ভিসা বেচাকেনা করে প্রতারিত হচ্ছে এমন অভিযোগে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আসিকুজ্জামান বলেন,ইদানীং অনেকেই কুয়েতে এবং দেশে ইমো,হোয়াটস আপ সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিসা বিক্রির প্রতারণা করে যাচ্ছে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি, উপযুক্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন ধরণের খোঁজখবর না নিয়ে, না বুঝে না জেনে টাকার অবৈধ উপায়ে টাকা লেনদেন না করতে অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত। এছাড়াও ব্যবসায় বাণিজ্যের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কোন প্রমাণ রাখেন না, পরবর্তীতে লেনদেনের সময় ঝামেলা হলে দূতাবাসে অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া যায় না, এক্ষেত্রে লিখিত কাগজপত্র এবং স্বাক্ষি রাখতে বলেন রাষ্ট্রদূত।