নিজের বিদ্যালয়ে না গিয়ে স্ত্রীর বিদ্যালয়ে ক্লাস করান স্বামী


ভোলার তজুমদ্দিনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দম্পতি দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত তুলছেন বেতন-ভাতা। ছুটি ছাড়াই মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন তারা। আবার নিজের বিদ্যালয়ে না গিয়ে স্ত্রীর বিদ্যালয়ে ক্লাস করান স্বামী। এমন ঘটনায় উপজেলার সচেতন মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ৮৪নং দক্ষিণ পশ্চিম চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলপনা খাতুন (লাবণ্য) ও চরজহিরউদ্দিন মরিয়ম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মনির উদ্দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। আলপনা খাতুন (লাবণ্য) ও মো. মনির উদ্দিন নামের এই দুই শিক্ষক স্বামী-স্ত্রী। সুবিধামতো সময়ে স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন তারা। গত ২৯শে আগস্ট পরীক্ষা চলাকালীন ৮৪নং দক্ষিণ পশ্চিম চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক হাজিরা খাতায় দেখা যায়, সহকারী শিক্ষক আলপনা খাতুন (লাবণ্য) ৩ দিন অনুপস্থিত রয়েছেন। এ সময় তার স্বামী চরজহিরউদ্দিন মরিয়ম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মনির উদ্দিন ওই বিদ্যালয়ে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মনির উদ্দিন বলেন, মেয়ে অসুস্থ, তাই আমার স্ত্রী বিদ্যালয়ে আসতে পারেনি। তিনি ৩ দিনের ছুটিতে আছেন। নিজের কর্মস্থলে না গিয়ে স্ত্রীর কর্মস্থলে থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্ত্রী অনুপস্থিতি থাকায় এখানে আমি দায়িত্ব পালন করছি।
এদিকে ৮৪নং দক্ষিণ পশ্চিম চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের সহকারী শিক্ষক আলপনা খাতুনের ছুটির লিখিত আবেদন দেখাতে পারেননি।
অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক এ বিদ্যালয়ে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলপনা খাতুন অসুস্থ, তাই তার স্বামী মনির উদ্দিন মাঝে মধ্যে এখানে ক্লাস করেন।
অন্যদিকে চরজহিরউদ্দিন মরিয়ম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, সহকারী শিক্ষক মো. মনির উদ্দিন বিভিন্ন অজুহাতে ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তজুমদ্দিন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমার আগে জানা ছিল না। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত থাকা বা বিদ্যালয় পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।