রাজনীতি

ঝালকাঠির যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলন বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার

milon
print news

সালমান বাপ্পি : ঝালকাঠির আওয়ামী রাজনীতিতে তৃনমুল থেকে বেড়ে ওঠা একজন নেতার নাম সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন। যিনি বল্যকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। আওয়ামীলীগের বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু এমপির আশির্বাদপুষ্ট সৈয়দ মিলন বারবার রোষানলে পরছেন নিজ দলেরই প্রতিপক্ষের স্বরযন্ত্রে।

দলের জন্য নিবেদিত প্রান যুবলীগ নেতা সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন রাজনীতির মাঠে যতটাই সামনে এগিয়ে যায় পেছন থেকে দফায় দফায় প্রতিপক্ষরা টেনে ততটাই পেছনে নামিয়ে দেয়। এ যেন গ্রামের কাবাডি কাবাডি খেলা।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন হাসিসুর রহমান মিলন। এর আগে ঝালকাঠি সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। মিলনের নেতৃত্বাধীন কমিটিতে ছিলোনা কোনো কোন্দল এবং বিশৃঙ্খলা। পরিপাটি এবং সুশৃঙ্খল ভাবে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি।

তবে দল চালাতে গিয়ে তৈরী হয় কিছু দলীয় শত্রুতা। এদের মধ্যে অবৈধ ও অনৈতিক সুবিধা নিতে না পারা ব্যক্তিরাই বেশি। আর ঐ শত্রুতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের রুপ প্রকাশ পায় মিলনের নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর।

ঝালকাঠির রাজনীতি থেকে মিলনকে বিভক্ত করার অসৎ উদ্দেশ্যে এক যুবলীগ নেতাকে মারধরের অভিযোগ এনে ২০২০ সালে মিলনের নামে মামলা দেয়া হয়। ঐ মামলায় ১০ মাস কারাভোগ করে আবারো রাজনীতির মাঠে সরব হয় মিলন। এবার পদ প্রত্যাশী হন জেলা যুবলীগ কমিটিতে।

সম্প্রতী জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা নিয়ে একটি তালিকা ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ঐ তালিকায় আহবায়কের স্থানে পৌর কাউন্সিলর রেজাউল করিম জাকির এবং যুগ্ম আহবায়কের স্থানে সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনের নাম লিখা ছিলো।

যদিও রেজাউল করিম জাকির আগে থেকেই জেলা যুবলীগের আহবায়ক এবং মো. কামাল শরীফ নামের আরেক পৌর কাউন্সিলর যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্বে আছেন। ভাইরাল হওয়া কমিটির তালিকায় অন্যান্যদের পাশাপাশি কামাল শরীফের নামটি যুগ্ম আহবায়কের পদ থেকে বাদ দিয়ে সদস্য পদে লিখা হয়। সেখানে যুক্ত করা হয় মিলনের নাম।

এ নিয়ে শহরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ শহরে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগে পরিস্থিতি শান্ত করতে সৈয়দ হাদিসুর রহমানের অনুসারি ৮জনকে আটক করে থানায় নিয়ে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়।

এদিকে ফেসবুকে কমিটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই জেলাজুড়ে আনন্দ মিছিল এবং ফেসবুকে অভিনন্দন বার্তা প্রচার করা শুরু করে মিলন অনুসারীরা। তবে মিলন তার ভেরীফাইড ফেসবুুক আইডিতে একটি ভিন্নধর্মী ষ্ট্যাটাস পোষ্ট করেন।

মিলনের ঐ ষ্টাটাসে লিখা ছিলো, ‘গত দুদিন ধরে যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদের সাথে আমাকে জড়িয়ে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে সেগুলো সবই ভিত্তিহীন। কোন কুচক্রী মহল আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার নোংরা খেলায় মেতেছে। তাদের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই।’

এই ঘটনার দু’দিন পরেই মিলন সহ ১২ জনের নামে সদর থানায় একটি মামলা রুজু হয়। মাসুদ সিকদার নামের এক যুবলীগ কর্মী মামলাটি দায়ের করেন। এতে একজন সাংবাদিকের নামও দেয়া হয়েছে। মামলায় বাদি যে অভিযোগ তুলে ধরেছেন তা হলো “ঝালকাঠি জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি নিয়ে জালিয়াতি করা হয়েছে, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদকের সাক্ষর জাল করে প্রতারণা করা হয়েছে” বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঝালকাঠি জেলা শাখার কোন কমিটি শিঘ্র ঘোষণা করা হয়নি।’

এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের আহবায়ক রেজাউল করিম বলেন, ‘একটি কমিটির তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঐ তালিকাটি সঠিক নয় বলে কেন্দ্র থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভ্রান্তি দূর করেছে।’

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যুবলীগ নেতা সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন বলেন, আমাকে জড়িয়ে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে সেগুলো সবই ভিত্তিহীন।আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যার মামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমি উড়ে এসে জুড়ে বসিনি, দলের জন্য অনেক ত্যাগ এবং শ্রম আছে আমার। ২০০৪ সালে বিরোধী দলে থাকাকালীন সময় থেকেই রাজপথে সংগ্রাম করছি। বার বার আমার উপর মিথ্যে দোষ যারা চাপিয়ে দিচ্ছে তারা দলের হাইব্রিড।’

যুবলীগ নেতা সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন আরো বলেন, ‘জননেতা আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি মহোদয়ের কাছে একটাই দাবি মিথ্যে অভিযোগ যারা করছে তাদের বিচার চাই। তারা দলের জন্য ক্ষতিকর।’

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *