ভৈরব সংস্কারের সুফল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রতিমন্ত্রীর ক্ষোভ


যশোর জেলা প্রতিনিধি : যশোর জেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় বেশ কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সভায় যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ঠিকাদার বিষয়ে কথা হয়। হাইকোর্টে মামলা করে যুগযুগ ধরে খাবার সংগ্রহের টেন্ডার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তাই খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। যদি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নিয়মিত তদারকি বা অভিযান চালানো হয় তাহলে রোগীদের নিম্নমানের খাবার দিতে পারবে না। তাতে করে বর্তমানে দায়িত্ব থাকা ঠিকাদাররা পালিয়ে যাবে। তখন নতুন করে টেন্ডার করা যাবে। জেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় হাসপাতালটির খাবার সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে এসব আলোচনা হয়। রোববার জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষ অমিত্রাক্ষরে এই সভা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী-উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
সভায় ভৈরব নদ সংস্কারের পর শহরে কেন জোয়ার ভাটা আসছে না তা নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম মমিনুল ইসলাম বলেন, ভৈরব নদের উপর ৫৩টা সেতু আছে। এ সেতুগুলো অপসারণ করা না গেলে ভৈরব সংস্কারের পুরো সুফল পাওয়া যাবে না। কেননা আমাদের ডিজাইনে ৫০-৬০ মিটার পর্যন্ত টপ লেভেল আছে কিন্তু অনেক সেতুর পিলার ১০-১১ মিটার আছে। তাই আমাদের ডিজাইন মতো এ সংস্কার করলে সেতুগুলো কোন না কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, জেলা পরিষদের ৩০-৪০ একর জমি অবৈধভাবে দখলে আছে। অবৈধ দখলকৃত এসব জমির অনেকস্থানে সরকারি স্থাপনা গড়ে উঠেছে। অবৈধ দখলকৃত জমিতে কিভাবে স্থাপনা হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ জমি দখলমুক্ত করতে পারলে জেলা পরিষদের বছরে ১০ কোটির উপরে আয় হবে বলে জানান।
জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জেলার বিভিন্ন স্থানে মরা গাছগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত অপসারণ করা হবে বলে জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, জেলায় বর্তমানে কোন সারের সংকট নেই। এছাড়া কৃষকদের মাঝে সার-বীজের ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, সরকারের ভর্তুকি দেয়া সার-বীজ অনেকে বিক্রি করে দেন। তাই যাদের সার-বীজ দেয়া হয়েছে তাদের তালিকা ধরে ধরে তদারকি করতে হবে। তা না হলে সরকারের দেয়া সার-বীজের কোন কাজে আসবে না।
সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, কোল্ড স্টোরেজ ও আলু ব্যবসায়িদের সাথে মতবিনিময় করার কথা উল্লেখ করেন। যাতে সরকার নির্ধারিত দামে ভোক্তারা আলু-পেঁয়াজের কিনতে পারে।
পল্লী-উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য্য, বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের সাথে বসে দড়াটানা সেতুর বাস্তবসম্মত ডিজাইন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভিন্ন বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের পয়ঃনিষ্কাশনের লাইন সরাসরি ভৈরব নদে ফেলার কারণে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ হচ্ছে। দূষণ প্রতিরোধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসানের পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তুষার কুমার পাল, ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির প্রমুখ।