অনুসন্ধানী সংবাদ বরিশাল বাংলাদেশ

ট্রলার চালক নজরুলের সহায়তায় বিষখালী নদীতে জেলেদের ‘মা’ ইলিশ নিধন

4
print news

রাজাপুর সংবাদদাতা : রাজাপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা প্রশাসনের ব্যাপক দৃস্টি থাকা ও অভিযান থাকার পরেও বিষখালী নদীতে জেলেরা ব্যাপক ভাবে মা’ইলিশ নিধন করেছে। বিষখালী নদীতে মা ইলিশ প্রচুর তাই জেলে ও মৌসুমী জেলেরা ইলিশ নিধন করে কামিয়েছে লাখ লাখ টাকা। নদীতে অভিযানের খবর ফাঁস করে দিতো অভিযানে ব্যবহৃত ট্রলার চালক নজরুল।রাতে জেলেরা ইলিশ শিকার করতো। এজন্য প্রতি নৌকা থেকে এক হাজার টাকা করে নিতো নজরুল ।এছাড়া অভিযানের জব্দ জাল চুরি করে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে এই ট্রলার চালক নজরুল।জেলেরা জানিয়েছে,নদীতে কারেন্ট জাল ফেলা মাত্র প্রচুর মা’ইলিশ জালে আটকা পরে নদী থেকে উঠে আসছে। এতে করে জেলেরা সে লোভ সামাল দিতে না পেরে প্রকাশ্যে ও গোপনে তারা মা’ইলিশ ধরা অপরাধ জেনেও মা”ইলিশ নিধন কাজে লিপ্ত হয়েছে। জেলেদের ভাষায় বর্তমানে নদীতে জাল ফেলা মাত্র মা’ ইলিশ প্রচুর জালে আটকা পড়ছে। তারা জানান মা’ইলিশ লোনা পানি থেকে ডিম ছাড়ার জন্য বিষখালী নদীর মিঠা পানিতে এসেছে। কারেন্ট জাল ফেলে কেহ খালি হাতে ফিরেনি।ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৩’ থাকলেও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অবাধে মা ইলিশ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ও মঠবাড়ি ইউনিয়নের জেলেরা।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২২ দিন ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও জেলেরা কিছুতেই মানেনি ।এই ২২ দিনের জন্য বরাদ্দকৃত চাল সকল জেলেদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এছাড়া সারা বছরের জেলে ও মৌসুমি জেলেদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। এর পরও এসব জেলেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মা ইলিশ শিকার করে যাচ্ছে।সরেজমিনে রাজাপুরের বিষখালী নদীতে গিয়ে দেখা যায়, প্রকৃত জেলে ও মৌসুমী জেলেরা দিনভর নদী থেকে মাছ শিকার করছে এবং স্থানীয় বাজারে প্রকাশ্যে ইলিশ মাছ বিক্রি করছে।মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের শুরু থেকেই মৎস্য বিভাগের রাজাপুর ও ঝালকাঠীর কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযানের প্রতিদিনই জেলেদের আটক ও জরিমানা করা হচ্ছে। তার পরও অসাধু জেলেরা আইন কানুন কিছুতেই মানেনি। আইন অমান্য করে প্রতিদিনই নদী থেকে মা ইলিশ শিকার করে থাকে।জেলে নাজিমুদ্দিন বলেন, প্রতিবছর যখন ইলিশের অবরোধ অভিযান শুরু হয় তখন বড়ইয়া ও মঠবাড়ি ইউনিয়নের অনেক যুবক যারা বিভিন্ন স্থানে থাকে, এই সময় তারা গ্রামে চলে আসেন এবং দিনরাত নদী থেকে ইলিশ মাছ শিকার করেন। প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় করে থাকে তারা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কারণ জানালেন বড়ইয়া ইউনিয়নের এক জেলে। তিনি বলেন, ২২ দিনের অভিযানে জেলেদের জন্য ২৫ কেজি চাল বরাদ্দ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে জেলেরা পাচ্ছেন ১৮ থেকে ২০ কেজি চাল। এ সামান্য চাল দিয়ে জেলেদের সংসার চালানো সম্ভব না। তাইতো জেলেরা জীবন রক্ষার্থে ঝুঁকি নিয়ে নদীতে মাছ শিকার নামে।

5

উপজেলা টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে সর্বত্র সতর্ককরণ সভা করে জেলেদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। এ সর্তক হচ্ছে, ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। ইলিশ সম্পদ রক্ষার স্বার্থে এবং সকলকে সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। এই আইন অমান্যকারীদের কমপক্ষে এক বছর এবং সর্বোচ্চ দুই বছরে সশ্রম কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে। এরপরও আইন অমান্য করে প্রকাশ্যেই জেলেরা অবাধে মা’ ইলিশ শিকার করে যাচ্ছে।

2

জেলেরা জানান, এক বার জাল ফেললে পনের থেকে বিশ কেজি ডিম ওয়ালা ইলিশ জালে আটকা পড়ে। এখন এ মাছ না ধরলে ডিম ছাড়ার পর এ মাছ এ নদীতে আর থাকবেনা সাগরে চলে যাবে। এদিকে বিষখালী নদীতে সমুদ্র এলাকা থেকে প্রচুর পরিমানে মা’ ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য এসেছে। এ সব ইলিশ ধরার জন্য অসাধু জেলেরা নিষিদ্ব কারেন্ট জাল ব্যবহার করে মা’ ইলিশ নিধন করেছে। এ সব জেলেদের প্রতিরোধ করার জন্য নদীতে পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তার পরেও জেলেরা নিজেদের ইচছা মত মা’ ইলিশ নিধন করেছে। নিধন করা মা’ ইলিশ নদীর কুলবর্তী এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি করছে।রাতে অবাধে মা’ইলিশ নিধন করেছে জেলেরা। এ মা’ ইলিশ প্রতিকেজি এক হাজার ’ টাকায় বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ মা’ ইলিশ রক্ষায় জেলা টাস্কফোর্স,নৌ-পুলিশ, ও জেলা প্রশাসন যৌর্থ ও ভিন্নভিন্ন অভিযান করে কারেন্ট জাল,নৌকা,মা’ইলিশ জব্দ ও জেল জরিমানা ও দন্ড দিলেও কোন সমাধান হচ্ছে না।জেলেরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ট্রলার চালক নজরুলের সাথে খবর রেখে প্রশাসনের অবস্থান জেনে নদীতে জাল ফেলে মা ইলিশ নিধন করছে এতে করে ইলিশের বংশ বৃদ্বিতে ও উৎপাদনের বাধা সৃস্টি করে যাচেছ। জেলেরা বিষখালী নদীতে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে কারেন্ট জাল পানির উপরে ভাসিয়ে না রেখে অনেক দূরে-দূরে পাতলা ককসিট জাতীয় বয়া ব্যবহার করে মা’ ইলিশ নিধন অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যাচেছ। এতে করে অভিযান কালে প্রশাসন নদীতে নেমে ব্যাপক অভিযান করলেও জেলেদের কারেন্ট জাল নদীতে দেখতে পায়না। জেলেরা নদীতে কারেন্ট জাল ফেলে চলে যায়,সময় সুযোগ বুঝে জেলেরা জাল টেনে নদীর তীরবর্তী স্থানে এনে মা’ ইলিশ জাল থেকে খুলে বরফজাত করে রাখে। পরে রাতে সময় উপযোগী অবস্থা বুঝে মা’ ইলিশ পাচার করে যাচেছ।

1

এ ব্যাপারে ট্রলার চালক নজরুল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন,আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। ঝালকাঠী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলা টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে বিষখালী ও সুগন্ধা নদীতে অভিযান অব্যাহত ভাবে চলছে। অভিযান কালে তাদের নদীতে পাওয়া গেলে আটক করে কারাদন্ড ও জরিমানা করা হচ্ছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত ভাবে চলছে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *