লেখক ও প্রকাশকের কথা : শ ম দেলোয়ার জাহান


শ ম দেলোয়ার জাহান: শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিটি সেক্টরে যে হারে নবীনদের প্রাধান্য দিয়ে আসছে আমাদের কবি সমাজ তাতে অনলাইনে জনপ্রিয়তা বেশি। এর পিছনে ফিরে দেখা যায় সবার হাতে বর্তমানে স্মার্টফোন নিয়ে দিনরাত ব্যস্ত সময় পাড় করছে। কোমলমতি শিশুদের হাতেও স্মার্টফোন। অনলাইনে ফেসবুক নামক গ্রুপে অসংখ্য তরুণ তরুণী মনের অজান্তে মনের ভাব প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে যাচ্ছে। আবার অনেক তরুণ কবি সাহিত্যিক একদিকে কবিতা গল্প লেখালেখি করে। আরেক দিকে পাঠক হয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করে দিচ্ছে। এখন হাতের মুঠোয় স্মার্টফোন থাকায় কেউ আর বই পড়েও না এবং কি বই ক্রয় করতে চায় না। ইহাতে অনেক সময় দেখা যায় সামনে বইমেলা আসিলে মেলায় গিয়ে বই হাতে নিয়ে সেলফি তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বই ক্রয় করবে তো দূরের কথা, বই হাতে নিয়ে সেলফি তুলে আপলোড নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ইহাতে লেখক ও প্রকাশক উভয়ই আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমাদের লেখক ও প্রকাশক যদি ক্ষতি পোষাতে না পারে তাহলে বিত্তবান বা সরকারকে লেখক ও প্রকাশকদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন। কারণ, স্মার্টফোন বের হয়েই তো বই ক্রয় বিক্রয় হয় না। সারাদিন স্মার্টফোন নিয়ে সকলেই যদি ব্যস্ত থাকে তাহলে এর দায়ভার কে নিবে? সরকার বা বিত্তবান কেউ দায়ভার নিতে চাইবে না। সমাজে বহু ধনাঢ্য ব্যক্তি আছে যারা বিলাসবহুল আলিশান বাড়ি গাড়ি নিয়ে বসবাস করতে দেখা যায়।
বর্তমানে যে হারে দ্রব্যমূল্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মনে হয় এক পর্যায়ে লেখক ও প্রকাশক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তখন দেখা যাবে ক্ষতিগ্রস্থ অবস্থায় আর কেউ বই প্রকাশ করতে চাইবে না। বর্তমান বাজারে কাগজ কালির যে হারে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তা দিয়ে বই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সঠিকমত ব্যয় সংকুলান না হওয়ায় অনেককিছু মেইনটেইন করা সম্ভব হয় না। সাহিত্যের একটি অংশ প্রকাশনা শিল্প। অনেকের ধারণা মতে বলে থাকেন সাহিত্যে বাণিজ্য ভালো চলে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। যদি এতো লাভজনক ব্যবসা হতো তাহলে সকলেই সাহিত্যে বাণিজ্য করত। শুধুই কি সাহিত্যে বাণিজ্য হয়? আর কোনো বাণিজ্যের খাত বা সেক্টর নেই? যদি এতোই বাণিজ্য হতো তাহলে অনেক কবি লেখকেরা বই প্রকাশ করার সময় বাকিতে বই ছাপাতে পারত না। বই বাকিতে ছাপানোর পরে অনেক কবি লেখক বলেন, বই বিক্রি হলে রয়্যালিটি দিবেন। বই বিক্রি হলে ৫০% লেখকের দিবেন। বই ছাপানো হয়েছে বই বিক্রির জন্য। মেলায় বই বিক্রি ভালো হয়। এগুলো নানা ধরনের নেগেটিভ প্রশ্ন উত্তর লেখক ও প্রকাশকদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি হয়। এইগুলো ভুল বুঝাবুঝির জন্য উভয়কেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এই যে লেখক ও প্রকাশকদের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় তা সমাধান করার মত নয়। যিনি প্রকাশক তিনি জানেন, প্রকাশনার সেক্টরে সীমিত ব্যবসা হলেও মেলায় অনেক সময় লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়। মাসব্যপী বইমেলা বাংলা একাডেমি আয়োজন করার পরে প্রকাশকদের আশা ভরসা থাকে বইমেলায় বই ক্রয় বিক্রয় হলে লেখক ও প্রকাশকদের সুবিধা হয়। বছর শেষে বইমেলাকে সামনে রেখে আশা ভরসা নিয়ে যদি আশানুরূপ কোনো কাঙ্ক্ষিত ফলাফল যদি না আসে তাতে লোকসানের ভারে ভারাক্রান্ত হতে হবে। লেখক ও প্রকাশকদের অনেক চুক্তি থাকা স্বত্তেও এগুলোর কোনো সমাধান করা হয় না। পর্যাপ্ত পরিমাণে বহু বই নষ্ট হয়ে যায়। পুরাতন হয়ে যায়। তখন এই বইগুলো আর বিক্রয় করা সম্ভব হয় না।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।