অর্থনীতি ঢাকা বাংলাদেশ

টিসিবির ট্রাকসেল লাইনে অপেক্ষায় অসংখ্য মানুষ

tcb 3 20231115161242
print news

ঢাকা প্রতিনিধি : দেশে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে কম দামে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য দিতে ফের ট্রাকসেল চালু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। প্রতিদিন প্রতিটি ট্রাকে ৩০০ মানুষকে এসব পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। তবে চাহিদার তুলনায় পণ্যের সরবরাহ কম হওয়ায় ট্রাক আসার এক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এরপরও কম দামে নিত্যপণ্য পেতে অসংখ্য মানুষকে লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। বুধবার (১৫ নভেম্বর) মধ্যবাড্ডা এলাকায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডছাড়া পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে দেখা গেছে এমন চিত্র।সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাকের সব পণ্য বিক্রি শেষ হলেও তখনো কিছু নিম্ন আয়ের মানুষ লাইনে অপেক্ষা করছিলেন। বিক্রেতারা তাদের কোনোভাবেই বোঝাতে পারছিলেন না যে, সব পণ্য বিক্রি শেষ। বাধ্য হয়েই ট্রাকের ব্যাক ডালা খুলে দেখানো হয়। এরপর নিরাশ হয়ে খালি হাতে ফিরে যান তারা।সরবরাহের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের অনেক মানুষই ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য কিনতে না পেরে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন। মর্জিনা আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘ফ্যামিলি কার্ড নেই। কার্ড ছাড়া এখন পণ্য দিচ্ছে, তাও পাচ্ছি না। লাইনে কয়েকশ মানুষ। সিরিয়াল পাইনি।তিনি বলেন, ‘গতকাল শাহজাদপুরে ট্রাক আসে। সেখানে গিয়েও পণ্য পাইনি। আজ এখানে (বাড্ডা) এসে দেখি মাল নেই। দুদিন ধরে ঘুরছি।’মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে সরকারের উদ্যোগে ঢাকার জন্য নির্ধারিত ৩০টি স্থানে টিসিবির ট্রাকে করে চার ধরনের নিত্যপণ্য বিক্রি শুরু হয় গতকাল মঙ্গবলবার। এ উদ্যোগের আওতায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটারে বিক্রির ঘোষণা দেয় সরকার। বুধবার পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে বেশ কয়েক জায়গায় দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বিক্রি শুরুর পরপরই কোথাও কোথাও ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হয়েছে লাইন। তপ্ত রোদে মানুষকে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে দেখা গেছে।ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমও এখন চলমান। এর বাইরে কার্ড ছাড়া পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। টিসিবির প্রতিটি ট্রাক প্রতিদিন ৩০০ মানুষকে পণ্য দেবে। এতে করে ঢাকার ৯ হাজার লোকের ভর্তুকিমূল্যে পণ্য পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। একজন ক্রেতা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি আলু, ২ লিটার সয়াবিন তেল এবং ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন।এ কার্যক্রম শুরুর পর প্রথম দিনেই ঢাকাজুড়ে নির্ধারিত বিক্রয় পয়েন্টে নিম্নআয়ের মানুষের ঢল নামে। দ্বিতীয় দিনে চাপ আরও বেড়েছে। ডিলাররা বলছেন, দিন যত যাবে এ কার্যক্রম সম্পর্কে মানুষ তত জানবে। চাহিদা আরও বাড়বে। বর্তমানে ৩০০ মানুষের বরাদ্দ খুব অপ্রতুল বলে জানান তারা। বাড্ডায় যখন টিসিবির পণ্য ফুরিয়ে যায় তখনো কিছু নিম্নআয়ের মানুষ লাইনে। বিক্রেতা তাদেরকে কোনোভাবেই বোঝাতে পারছিলেন না যে, পণ্য সব শেষ। সবাই টাকা উঁচু করে ধরে পণ্য চাচ্ছিলেন। বাধ্য হয়েই ট্রাকের ব্যাক ডালা খুলে দেখানো হয়। এরপরে নিরাশ হয়ে খালি হাতে ফিরে যান তারা।এ সময় ব্যাগ হাতে ষাটোর্ধ্ব নারী রহিমা বেগম বলেন, ‘কাল আবার মাল (পণ্য) দেবে কি না কিছুই জানতে পারলাম না। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে পণ্য পেলাম না।’তিনি বলেন, ‘বাজারে তেল-ডালের যে দাম, তাতে কিনে খাওয়া সম্ভব না। টিসিবির পণ্য পেলে খুব সুবিধা হয়।’পণ্য না পেয়ে অনেক ক্রেতার মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। এ সময় অনেকে ডিলারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০-৪০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা, আলু ৫০-৫৫ টাকা, মশুর ডাল ১২০-১৫০ টাকা এবং বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৮-১৭০ টাকায়। এ পরিস্থিতিতে টিসিবি থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে একজন ক্রেতা দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি সয়াবিন তেল, দুই কেজি আলু ও দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছেন।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *