উজিরপুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে ইটভাটা


উজিরপুর প্রতিনিধি : বরিশাল কৃষি ও বনাঞ্চল অধ্যুষিত উজিরপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ইটের ভাটা। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও কৃষিজমিতে নির্মিত ইটভাটার ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দু’টি বিদ্যালয় ও একটি ডিগ্রি কলেজের কয়েক হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, ভাটার তপ্ত আগুনে পুড়ছে ফসলি জমির উর্বর মাটি। এছাড়া ইটভাটার কারণে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে আছে। শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের উত্তর লস্করপুর গ্রামে সন্ধ্যা নদীর কলঘেঁষে মেসার্স আবির ব্রিকস ইটভাটা। বড়াকোঠা ইউনিয়ন ইনষ্টিটিউশন ও মালিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বড়াকোঠা ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজ পাশের কৃষিজমির উপর রয়েছে বিশালাকৃতির ইটভাটা। বিদ্যালয় ঘেঁষা ইটভাটাসমূহের প্রায় দশ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ছাড়াও হাটবাজার, লোকালয়ের হাজার হাজার বাসিন্দা প্রতিনিয়ত শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি ইটভাটায় ব্যাপক হারে কৃষিজমির উর্বর মাটি নিয়ে স্তূপীকৃত করা হচ্ছে এবং ধুলাবালিতে পুরো এলাকা সয়লাব হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহলে রয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। জানা গেছে, ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। এছাড়াও কৃষিজমিতে ইটভাটা তৈরির আইনগত নিষেধ থাকলেও কৃষিজমি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বনাঞ্চলের পাশের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে এসব ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। মালিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফৌজিয়া সুলতানা বলেন, বিদ্যালয়ের একেবারে সন্নিকটে ইটভাটা থাকায় শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জন্য এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে। বড়াকোঠা ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ শীলা রায় বলেন, দীর্ঘ তিন চার বছর ইটের ভাটা চলে নাই আমরা তখন ভালই ছিলাম। এখন আবার ইটের ভাটা চালু হয়েছে। শ্বাসকষ্ট ও কাশি আশঙ্কা করা যাচ্ছে। অন্যদিকে, এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেসার্স আবির ব্রিকস ইটভাটার প্রোপ্রাইটার রিপন বলেন, অভিযোগ থাকতেই পারে আমার ভাটা চলবে। উপজেলা বন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, লাকড়ি দিয়ে ইটভাটা ইট পোড়াতে পারবে না। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো: শওকত আলী বলেন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান কিংবা লোকালয়ের পাশে ইটভাটার ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, এলার্জি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ বিস্তারের আশঙ্কা থাকে। এ বিষয় উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম ইসমাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news