উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপো


বরিশাল অফিস : বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন ( বিআরটিসি ) লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির বর্তমান চৌকস চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো: তাজুল ইসলাম। তিনি চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর থেকে শত প্রতিকুল পরিবেশ থাকা অবস্থায় নানাবিধ চ্যালেন্জ্ঞ মোকাবিলা করে নিজের প্রচেষ্টায় অক্লান্ত পরিশ্রম, সততা, সাহসী ভূমিকা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মেধা খাটিয়ে জরাজীর্ন ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সার্বিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করেন “ আয় বৃদ্ধি , ব্যয় সংকোচন ও যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন “ স্লোগানকে সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত করার লক্ষ্যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দিনরাত নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন এক অদম্য শক্তিতে। ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন মো: তাজুল ইসলাম, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব। এরপর নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সততা, প্রজ্ঞা মেধা, সময়য়োপযোগী ও সুদক্ষ দিক-নির্দেশনা এবং সঠিক নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ঘুরে দাড়িয়েছে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপো। বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর মোঃ জামশেদ আলী জানান, মোঃ তাজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান বিআরটিসি মহোদয় যোগদান করার পর দেখতে পান, বরিশাল বাস ডিপোর মূল ফটকে কোন গেইট নেই। ডিপোর বেশ কয়েকটি বাস জরাজীর্ণ অবস্থায় রুটে চলাচল করছে। ডিপোর কর্মকর্তা/কর্মচারীরা বেশ কয়েকমাস যাবত বেতন পাচ্ছেন না। তারা বেতনের জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু, মোঃ তাজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান বিআরটিসি মহোদয় যোগদান করার পর হতে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে প্রতি মাসের ১ তারিখে সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের’কে (দৈনিক মজুরী ভিত্তিক সহ) বেতন প্রদান করা হয়। এছাড়াও, যথাসময়ে বোনাস ও ভাতা প্রদান করা হয়। যা পূর্বে সম্ভব ছিলনা। বর্তমান চেয়ারম্যান মহোদয় মোঃ তাজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান বিআরটিসি মহোদয় যোগদান করার পরে “ আয় বৃদ্ধি , ব্যয় সংকোচন ও যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন “ স্লোগানকে সামনে রেখে বরিশাল বাস ডিপোর বর্তমান ও পূর্বের ইউনিট প্রধানগণ ডিপোর আয় বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। পূর্বের ৫ বছরের লাভ/ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের লাভ ৭২ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরের লাভ ৩০ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরের লাভ ১২ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরের লাভ ০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর লাভ দাড়িয়েছে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকায় যা বিগত ৫ বছরের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে ১২৬ জন স্থায়ী কর্মকর্তা/কর্মচারী ও ২৭ জন দৈনিক মজুরী ভিত্তিক শ্রমিক/কর্মচারীসহ সর্বমোট ১৫৩ জন জনবল কর্মরত আছেন এবং ৪৭ টি চলমান বাস, ৫ টি দীর্ঘমেয়াদি ইজারায় প্রদানকৃত বাস, ১ টি ভারী মেরামতাধীন বাসসহ মোট ৫৩ টি বাস ও ৫ টি প্রশিক্ষণ কার রয়েছে।
ডিপোর সামনে দৃষ্টিনন্দন-ডিজিটাল গেট নির্মাণ করা হয়েছে, ডিপোতে দ্বিতল প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, ডিপোর সামনের কাউন্টারগুলো দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে, যাত্রী ছাউনী আধুনিক করা হয়েছে, যাত্রী ছাউনীর ভিতরে মহিলাদের জন্য টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে, ডিপোর চারদিকের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে, ডিপোর পুরাতন টিনশেড বিল্ডিং সংস্কার করা হয়েছে, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাশ রুম নির্মাণ করা হয়েছে, ডিপোর নিরাপত্তা রুম নতুনভাবে তৈরী করা হয়েছে, ডিপোর অভ্যন্তরের পরিত্যক্ত পুকুরে বালু ভরাট করে ট্রেনিং ইয়ার্ড নির্মান করা হয়েছে, প্রতিটি শাখায় নতুন কম্পিউটার প্রদান করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ কর্নার স্থাপন করা হয়েছে, ডিপোর পরিত্যক্ত গাড়ী সংস্কার করে রুটে পরিচালনা করা হচ্ছে, ডিপোর বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, সকল শাখায় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য ইন্টারকম লাইন দেওয়া হয়েছে, ৩৩ টি বাসে ভিটিএস ট্রাকার ডিভাইস, ১০ টি বাসে সিসি ক্যামেরা, ২০ টি বাসে ওয়াই-ফাই সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, মোঃ তাজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান বিআরটিসি যোগদানের পর বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর পক্ষে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হাতে নেন যা ডিপোর ইউনিট প্রধান মোঃ জামশেদ আলীর নিরলস প্রচেষ্ঠায় বাস্তবায়ন হয়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হচ্ছে, নতুন নতুন রুট চালুকরণ, ডিপোর মূল ফটক ডিজিটালাইজড করন, ডিপোর প্রশাসনিক ভবন সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দন করন, ডিপোর অভ্যন্তরের পরিত্যক্ত জায়গায় বালু ভরাটের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগীকরন, ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য ড্রাইভিং ট্রাক নির্মান, আধুনিক প্রশিক্ষন কক্ষ নির্মাণ, আধুনিক যাত্রী বিশ্রামাগার ও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত টয়লেট স্থাপন, ডিপোর নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য গার্ডরুম স্থাপন, নিরাপত্তার স্বার্থে ডিপোর বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গাড়ীতে ভিটিএস ডিভাইস, ক্যামেরা ও ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপন. কর্মচারীদের মানসম্মত পোশাক (শীতকালীন এবং গ্রীষ্মকালীন) প্রদান করা, মূল ফটক সংলগ্ন কাউন্টার দৃষ্টিনন্দন করন, ডিপোর সীমানা প্রাচীর নির্মান, সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দনকরন ইত্যাদি। এছাড়াও, বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করে প্রতিবছর শত শত দক্ষ চালক এর যোগ্যতা অর্জন করছেন। ২০২২-২৩ অর্তবছরে ৪৪২ জন্য প্রশিক্ষণার্থীদেরকে গাড়ী চালনায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। যার মাধ্যমে অদক্ষ জনবল দক্ষতা অর্জনসহ দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিআরটিসির সেবা সহজীকরণ এবং বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে বিআরটিসিকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করে প্রশাসনের সক্ষমতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সিনিয়র সচিব কে.এম আলী আজম বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান বরাবর একটি ডিও লেটার প্রদান করেন। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় অহহঁধষ উবাবষড়ঢ়সবহঃ ধমৎববসবহঃ (অচঅ)-এ ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সকল সংস্থা সমূহের মধ্যে (৯৬.৮৪) সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ”বিআরটিসি” প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার পান।
বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে ২০২১ সালের পূর্বে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারতো না, বরিশাল বাস ডিপোর মূল ফটকে কোন গেইট নেই, প্রশাসনিক ভবন নেই, ডিপোর বেশ কয়েকটি বাস জরাজীর্ণ অবস্থায় রুটে চলাচল করছে। ডিপোর কর্মকর্তা/কর্মচারীরা বেশ কয়েকমাস যাবত বেতন পাচ্ছেন না, তারা বেতনের জন্য আন্দোলন করছে।
বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর এই বদলে যাওয়ার বিষয়ে ডিপোর ব্যবস্থাপক মোঃ জামশেদ আলী’র সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিপোতে পূর্বে আয় খুবই কম ছিল, যার কারণে গাড়ীর মেরামত ব্যয় ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বহন করার পরে ডিপোর কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা সম্ভব হতোনা। কিন্তু, বর্তমান চেয়ারম্যান মহোদয় জনাব মোঃ তাজুল ইসলাম, ২০২১ সালে বিআরটিসিতে যোগদান করার পর সকল ডিপোর সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে সক্ষম হন। যার কারণে বর্তমানে বরিশাল বাস ডিপোর আয় বেড়ে তিনগুণ হয়েছে। তার অক্লান্ত পরিশ্রম, সততা, সাহসী ভূমিকা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মেধা খাটিয়ে জরাজীর্ন ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সার্বিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করেন “ আয় বৃদ্ধি , ব্যয় সংকোচন ও যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন “ স্লোগানকে সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত করার লক্ষ্যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দিনরাত নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন এক অদম্য শক্তিতে।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news