মতামত

নির্চনে সাংবাদিক কার্ডের নামে হচ্ছেটা কী?

eccc
print news

সাইদুর রহমান রিমন : সাংবাদিকদের নাকে খত দেয়ার মাধ্যমে নির্বাচনী কার্ড বিতরণের জঘণ্যতা চলছে দেশজুড়ে। রীতিমত ত্রাণ-ভিক্ষা প্রদানের স্টাইলেই চলছে সাংবাদিক কার্ড বিতরণ। অবস্থা এমন যে, নির্বাচন কমিশন ও তাদের অধিনস্ত রিটার্নিং অফিসারগণ অতিশয় দয়াবশত সাংবাদিকদের ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন ও নির্বাচনের হালফিল খবরা খবর সংগ্রহের সুযোগ দিচ্ছেন।

রীতিমত প্রকাশ্য দিবালোকে ইসি ও রিটার্নিং অফিসারদের অতিমাত্রার এ খবরদারিত্ব চললেও সে ব্যাপারে সাংবাদিক সমাজ টু শব্দটি করতে সাহস পাচ্ছে না। বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো কমিশনই সাংবাদিকদের এহেন অপমানজনক পরিপত্র চাপিয়ে দেয়ার মতো ঘৃণ্যতা দেখাতে পারেনি। কিন্তু বেজায় দাপুটে বর্তমান ইসি তা পেরেছে। এক পাতার পরিপত্রে শতাধিক আপত্তিকর শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অপমানের চেষ্টা করা হয়েছে।

২ নম্বর ক্রাইটেরিয়ার (ক) ধারায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের অফিসিয়াল প্যাডে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাক্ষরিত আবেদন দাখিল করতে হবে।
পরক্ষণেই ৩ (তিন) নম্বর ধারার (গ) উপ-ধারায় বলা হয়, তথ্য ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক সর্বশেষ তালিকায় সংশ্লিষ্ট পত্রিকার ক্রমিক নম্বর চিহ্নিত করে পেইজের কপিটি জমা দিতে হবে। এটা কোন ধরনের সভ্যতা? একটা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার সাক্ষরিত আবেদন জমা দেয়ার পর আবার কিসের ক্রমিক নম্বর? আবার কেন সে পেইজ কমিশন/ রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছাতে হবে?
(ছ) উপ-ধারায় সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক মন্তব্য করে বলা হয়, নিয়মিত প্রকাশনার এক সপ্তাহের পত্রিকা জমা দিতে হবে।

দেখুন কেমন বেকুপের দল, সাংবাদিকদের রীতিমত হকার হিসেবে চিহ্নিত করতে চায়। তাদের ধারণা, সাংবাদিকরা বগলে বগলে পেপার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, সপ্তাহ, মাস, বছরের পেপার জমা দিয়েই তাদেরকে সাংবাদিক হিসেবে প্রমান দিতে হবে। কী অবাক ব্যাপার!
সাংবাদিক আসলে কি? তাদের পেশাদারিত্ব, দায়িত্ব, সম্মানের বিষয়ে কোনরকম ধারনা ছাড়াই ইসি কর্তা আর রিটার্নিং অফিসাররা সাংবাদিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়? আপনাদের দপ্তরে আবেদন দাখিলের পর শত রকমের কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাপরাসী, আরদালি দ্বারা তদন্ত করুন, পছন্দ না হলে তাকে সাংবাদিক কার্ড দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কিন্তু এসব ক্রাইটেরিয়া যুক্ত পরিপত্র প্রচার-প্রকাশ করেন কোন্ সাহসে? প্রজ্ঞাপন-পরিপত্র লিখতে পারলেই বুঝি দাপুটে হওয়া যায়? নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর, ক্ষমতাধর বলে মনে হয়? মনে রাখবেন-সাংবাদিকতার অভিশাপ অতি কঠিন, বড়ই নির্মম।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন নাটকীয় নির্বাচনী খেলার খবরা খবর অতি আগ্রহে প্রচার প্রকাশের ব্যাপারে প্রকৃত সাংবাদিকদের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। বরং এ নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য দেখাতে, বিশ্বজুড়ে তা ছড়িয়ে দিতে নির্বাচন কমিশনেরই দায় দায়িত্ব রয়েছে। তাদের হাজারো ফাইল চালাচালি, খবরদারিত্ব প্রদর্শন আর প্রজ্ঞাপন-পরিপত্রে দুনিয়ার কারো একচিলতে আস্থা নেই, বিশ্বের আস্থা গণমাধ্যমের প্রতি, বিশ্বাস সাংবাদিকদের উপর। অতএব, আমন্ত্রণ জানিয়ে, সুযোগ সুবিধা দিয়ে যেখানে সাংবাদিকদের স্বসম্মানে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কথা-সেখানে ইসি আর রিটার্নিং অফিসাররাই উল্টো খবরদারিত্বের পাঁয়তারায় লিপ্ত! ছিঃ

লেখক : সাঈদুর রহমান রিমন,দেশবাংলা সম্পাদক

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচারভ্রমণলাইফস্টাইলক্যারিয়ারতথ্যপ্রযুক্তিকৃষি  প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *