শিমচাষ করে স্বাবলম্বী ভোলার দুই শতাধিক পরিবার


সাব্বির আলম বাবু : ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের একই গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার শিম চাষের সঙ্গে জড়িত ৩০ বছর ধরে।কোড়ালিয়া গ্রামের এ শিমের চাষ চলছে কয়েক যুগ ধরে। আর এ চাষের ওপর ভিত্তি করেই এ গ্রামের কৃষকরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
গ্রামটিতে পা রাখার পর চোঁখে পড়বে পথের দুই পাশের জমিতে শিমের বাগান। জমিতে শিমের সবুজ সমারোহ আর সাদা-বেগুনি ফুল। যেখানেই চোঁখ পড়ে সেখানেই চোঁখে পড়ে। শুধু শিম আর শিমের ক্ষেত। বাড়ির অঙিনা, পুকুরপাড়, সড়ক পাশ, পরিত্যক্ত জমিসহ সবখানেই শিমের ঝাড়। সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলছে শিমের সারি। লতার সঙ্গে ঝুলছে সারি সারি শিম।
গত বছর শিমের ফলন বৃদ্ধি ও দাম ভালো পাওয়ায় এবার যেন চাষিদের উৎসাহের শেষ নেই। সারা দিন ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। এখানকার পরিত্যক্ত, অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে মাচা তুলে চলছে শিম চাষ। এ গ্রামে প্রায় ৩০ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে শিমের চাষ করা হচ্ছে। প্রথম দিকে ধান আবাদ করলেও বর্তমানে অধিকাংশ চাষি শিম চাষের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া এখানে অন্যান্য সময় মৌসুমি সবজির চাষও করা হয়।ব্যাপারীরা বাগান থেকেই ভ্যানে করে শিম কিনে নিয়ে যান আড়ত ও বাজারে। শিমের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাকি শিম চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। পশ্চিম কোড়ালিয়া গ্রামের শিম চাষি সৈয়দ আহমেদ হাওলাদার বলেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে শিমসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করছি। এ বছর এক একর জমিতে শিমের খামার করেছেন। এতে প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছি দুই লাখ টাকার উপরে বিক্রি হবে।
সুমন মিয়া বলেন, এ বছরও জমিতে শিমের চাষ করেছি। বর্তমানে শিমের বাজারদর ভালো রয়েছে। কেজি ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও প্রথম দিকে আরো বেশি দামে শিম বিক্রি হয়েছে। শিম বিক্রিতে তার সংসার সুন্দরভাবে চলে। এ গ্রামের হারুন মাইলতা, মানিক মৃধা, কালাম সরদার, মহাসীন মিঝিসহ আরো অনেকে শিম চাষের সঙ্গে জড়িত।
দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখারুল ইসলাম স্বপন বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে এখানকার কৃষকরা তাদের জমিতে ধানের বদলে শিম চাষ করছেন। শিম চাষে বহু চাষি তাদের ভাগ্য বদল করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এজন্য কোড়ালিয়াকে বলা হয় শিম চাষের আদর্শ গ্রামও বলা হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় তালুকদার বলেন, কোড়ালিয়া গ্রাম সব সময়ই শিমের জন্য বিখ্যাত। শিম চাষে বিভিন্ন রোগ-বালাই সম্পর্কে ধারণা ও পরামর্শমূলক সহায়তা দিয়ে থাকি। আর চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news