হারিয়ে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথা


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : কালের আবর্তনে সিরাজগঞ্জ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে নকশিকাঁথা। একসময় জেলার বিভিন্ন স্থানে দলবদ্ধ গৃহবধূ ও কিশোরীদের হাতের ছোঁয়ায় নতুন এবং পুরাতন কাপড় দিয়ে তৈরি হতো নিত্য নতুন নকশিকাঁথা। এই কাঁথায় সুঁই আর সুতা দিয়ে তাদের হাতের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হতো নানা রঙের নকশা।জানা গেছে, অতীতে বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রীদের বসতে দেওয়া হতো খড়ের ওপর পাটের চট বিছিয়ে। বর আর তার সঙ্গী কোলদারদের বসতে দেওয়া হতো কাঁথার ওপর চাদর বিছিয়ে। এখন সেই বসার আসন দখল করেছে সোফাসেট, চেয়ার, টেবিলসহ আধুনিককালের আসবাবপত্র। তাছাড়া কন্যার দাদি-নানিরা তাদের নতুন নাতিনজামাইকে উপহার হিসেবে দিতো কাঁথা ও বালিশ। প্রতিটি বাড়ির বিছানায় বিছানো থাকত কাঁথা, ধনাঢ্যদের কাঁথার ওপর থাকত চাদর। শীত মৌসুমে লেপের নিচে ব্যবহারও করা হতো এই কাঁথা। সেই সব দৃশ্য এখন অতীত।তবে, প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ব্যক্তি উদ্যোগে কাজ করছেন অনেকে। তাদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার চররায়পুর মহল্লার আসমা বেগম এক জন। তিনি গত প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় অসহায় নারীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন শেফা বুটিক হাউজ। যার মাধ্যমে তিনি তৈরি করছেন বিভিন্ন ধরনের নকশিকাঁথা। আর এর চাহিদাও রয়েছে দেশব্যাপী।
বারাকান্দি গ্রামের আছিয়া বেগম (৭০) জানান, একটি বড় কাঁথা সেলাই করতে প্রায় এক মাস সময় লেগেছে। আর আমরা সেলাই করে মজুরি পেয়েছি দুই টাকা। এখন চোখেও দেখি না, কাঁথাও সেলাই না। কাজীপুর উপজেলার নাটুয়াপাড়া চরের নাটুয়াপাড়া গ্রামের সুফিয়া (৭০) জানান, আগে এই কাঁথা সেলাই করে সংসার চালানোর পাশাপাশি বাড়তি আয় করা গেছে। এখন দেশি-বিদেশি কম্বল, লেপ-তোষক আসায় এই কাঁথা হারিয়ে গেছে।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news